প্রশ্নফাঁস, ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়, কোচিং বাণিজ্য, শিক্ষকদের আন্দোলনে নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে শিক্ষা ক্ষেত্রে। ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। আর যাদের কাছ থেকে নৈতিকতা শিখবেন শিক্ষার্থীরা সেই শিক্ষক এবং অভিভাবকরাই জড়িত থাকছেন প্রশ্নফাঁসের সাথে। ফলে বইয়ে নয়, প্রশ্নের জন্য তীর্থের কাকের মতো চেয়ে থাকছেন তারা। বিফলও যাচ্ছেনা তাদের চেষ্টা, পরীক্ষার আগেই হাতে হাতে পৌছে যাচ্ছে প্রশ্নপত্র। কেবল প্রশ্নই নয়, দুর্নীতির প্রাথমিক ধারণাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়ের জন্য ফি নির্ধারণ করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষাবোর্ডগুলো। কিন্তু নির্ধারিত সেই ফি’র ৫গুণ পর্যন্ত বেশি আদায় করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। নামে-বেনামে খাত সৃষ্টি করে, রশিদ ছাড়াই আদায় করা হচ্ছে এসব অর্থ। আর ক্লাসে না পড়িয়ে নিজস্ব কোচিংয়ে পড়তে বাধ্য করার কৌশল তো শিক্ষার্থীদের কাছে অনেক পুরনো বিষয়। তাই বিদ্যমান এই শিক্ষা কার্যক্রমে আশার আলো দেখছেন না কেউই। শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সকলেই। শিক্ষা এখন মহৎ কোন পেশা নয়, বরং সবচেয়ে লাভজনক পেশায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদেরাও। সমাজের সার্বিক নৈতিকতার অবক্ষয়ের ফলেই এসব হচ্ছে বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, যেখানে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন শিক্ষক-অভিভাবকরা। সেখানে আমরা আর কার উপর ভরসা রাখবো। প্রশ্নফাঁস, অতিরিক্ত ফি আদায় কিংবা কোচিং বাণিজ্য কোনটার সাথেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় জড়িত নয়, সবকটিতেই শিক্ষকরা জড়িত। তবে রাতারাতি কোন কিছু পরিবর্তন হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি এসব অনৈতিক কাজ দুর করার।
ব্যাধিতে পরিণত প্রশ্নফাঁস
শিক্ষা ক্ষেত্রে ক্যান্সারের মতো ভয়ঙ্কর ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে প্রশ্নফাঁস। পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক সমাপনী কিংবা জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি বাদ যাচ্ছে না কোন পরীক্ষায়। প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষাতেই প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটছে। পরীক্ষার আগে হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়ছে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। গণমাধ্যমে এসব প্রশ্নফাঁসের তথ্য প্রমান তুলে ধরার পরও অস্বীকার করছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেক ক্ষেত্রে দায় চাপাচ্ছেন গাণমাধ্যমের উপরই। সর্বশেষ প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাওয়া যায় মুড়ি-মুড়কির মতই। পরীক্ষার আগের রাতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফেইসবুক কিংবা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তো ফাঁস হয়েছেই। পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের প্রশ্নপত্র সমাধান করতে দেখা গেছে। একই ঘটনা ঘটেছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষাতেও। আর চলতি বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সময় প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত থাকায় শিক্ষকদেরকেই গ্রেফতার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ওইসব শিক্ষক পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্নের ছবি তোলে মোবাইলের মাধ্যমে তাদের সিন্ডিকেটের কাছে পৌছে দিতেন। আর তারা সেই প্রশ্নের মাধ্যমে কোটি টাকার বাণিজ্য করতেন। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, যে কোন ধরণের পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনা অননৈতিক, অনাকাক্সিক্ষত ও অগ্রহণযোগ্য। এ ধরণের ঘটনা ঘটলে পড়াশুনা করা ছাত্ররা আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, প্রশ্নফাঁস ও ফাঁস হওয়া প্রশ্ন নিয়ে বাণিজ্য এখন দেশের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বাংলাদেশের শিক্ষাখাতের সিংহভাগ বাণিজ্যিকীকরণ হয়ে গেছে। পরীক্ষাগুলোও এখন বাণিজ্যিকীকরণ হচ্ছে।
কোটি কোটি টাকা বাড়তি আদায়:
প্রতিবছর পরীক্ষার আগে ফরম পূরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিপুল পরিমান অর্থ আদায় করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। কোন কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও অধরাই থাকছে অধিকাংশগুলো। ফলে বছরের পর বছর ধরে এই বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আসন্ন এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফরম পূরণে এবার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি অন্তত ৩শ’ কোটি টাকা আদায় করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। ফরম পূরণের জন্য প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আদায়ের জন্য শিক্ষা বোর্ডগুলো সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭০০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও আদায় করা হয়েছে পাঁচ গুণ পর্যন্ত অর্থ। বাড়তি অর্থ আদায়ের ওপর উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সতর্ক করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। শিক্ষা বোর্ডগুলোর কাছে অভিযোগ আসার পর একটি নোটিশ জারি করেই দায়িত্ব শেষ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোচিং ফি, হোস্টেল, ভবন সংস্কার, শিক্ষাসামগ্রী ক্রয়, উন্নয়ন, আপ্যায়ন, সাপ্তাহিক পরীক্ষাসহ নানা খাত সৃষ্টি করে ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। আর এসব অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে দেয়া হয়না কোন রশিদ। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নোটিশ দিয়ে, কেউ আবার নোটিশ না দিয়েই বাড়তি অর্থ আদায় করছে। এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রায় ১৫ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। প্রত্যেকের কাছ থেকে গড়ে ২ হাজার করে বেশি নিলেও অন্তত ৩০০ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বন্ধ হচ্ছে না কোচিং বাণিজ্য:
কোচিং বাণিজ্যের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বারবার তাদের অবস্থানের কথা তুলে ধরলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) নেমেছে দুর্নীতিবাদ ও কোচিংবাজ শিক্ষকদের ধরতে। কোচিং বাণিজ্য বন্ধ, কোচিংয়ের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকী কোন কিছুই যেন কাজে আসছে না। বরং সময়ের সাথে সাথে শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে আরও আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে যাচ্ছে কোচিং বাণিজ্য। শিক্ষকরা ক্লাসের পরিবর্তে কোচিংয়ের প্রতিই বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন মতো হাজিরা দিয়েই ছুটছেন নিজের গড়ে তোলা কোচিং সেন্টারে। ক্লাসে না পড়িয়ে শিক্ষার্থীদেরকেও জিম্মি করে সেসব কোচিং সেন্টারে যেতে বাধ্য করছেন অধিকাংশ শিক্ষক। শুধু রাজধানীতেই নয়, প্রত্যন্ত গ্রামেও কোচিং নির্ভর হয়ে পড়েছে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা। বুঝে হোক কিংবা না বুঝেই হোক সচেতন অথবা অসচেতন অভিভাকবৃন্দ ভালো ফলাফলের জন্য তাদের সন্তানদের নিয়ে কোচিং সেন্টারের দারস্থ হচ্ছেন। কোচিং সেন্টারগুলোও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা প্রস্তুতি, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট কোচিং কিংবা এসএসসি প্রস্তুতি কোচিং এবং ছাড়ে ভর্তি’র মতো আকর্ষণীয় অফার সম্বলিত লেখা ব্যানার ও পোস্টার ছড়িয়ে দিচ্ছে রাজধানীসহ সারাদেশের শহরগুলোতে। নোট, সাজেশন আর নিয়মিত পরীক্ষার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে কাড়ি কাড়ি টাকা। ভালো ফল এবং কোচিংয়ে ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখাতে প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছেন অনেক কোচিংয়ের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীরাও ভালো ফলের আশায় ছুটছেন এসবের দিকে। নিশ্চিত জিপিএ-৫ (এ প্লাস), শতভাগ পাসের নিশ্চয়তার মতো নজরকাড়া বিজ্ঞাপন দিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আকৃষ্ট করছে কোচিং সেন্টারগুলো। শিক্ষার্থীর মেধা থাকুক কিংবা নাই থাকুক, এ নিয়ে কেউ বিচলিত নন। ব্যাপারটা এমন দাঁড়িয়েছে যে, কোচিংয়ে পড়লেই পরীক্ষায় পাস কিংবা জিপিএ-৫ পাওয়া যাবে। শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের নামে এটি এখন পরিণত হয়েছে চাতুরি ব্যবসায়। লাভজনক এই ব্যবসার কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাঙের ছাতার মতোই গজিয়ে ওঠেছে বিভিন্ন নামে বেনামে শত শত কোচিং সেন্টার। পিছিয়ে নেই স্কুলগুলোও। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক মডেল টেস্ট, স্পেশাল পাঠদান, দূর্বল শিক্ষার্থীদের ইনটেনসিভ কেয়ারের আড়ালেও চলে কোচিং বাণিজ্য। পাশাপাশি স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরেও সংশ্লিষ্ট শহরের ব্যস্ততম কিংবা স্থানে রুম ভাড়া করেই গড়ে তোলা হয়েছে প্রাইভেট সেন্টার। ক্লাশের শিক্ষকরাই পরামর্শ দিচ্ছেন কোচিংয়ে ভর্তির। অনেক ক্ষেত্রে মার্কসের ভয়-ভীতি দেখিয়েও ভর্তি হতে বলা হয় কোচিং সেন্টারে। কর্তৃপক্ষের নাকের ডগার উপর এই বাণিজ্য চললেও নিরব থাকছে মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষ।
যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১২ সালের ২০ জুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বন্ধে একটি নীতিমালা জারি করে। ওই নীতিমালায় বলা হয়েছে শিক্ষকরা নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং করাতে পারবেন না। তবে অন্য প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ১০ জনকে কোচিং করাতে পারবেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনাকে থোড়ায় কেয়ার করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কোচিংয়ের কুফল সম্পর্কে প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, পরীক্ষা এখন বাণিজ্য হয়ে গেছে। টাকার বিনিময়ে সবকিছু হচ্ছে। কোচিং ব্যবসায়ীরা সেটাই করছে। কোচিং সেন্টার যে কারণে চলছে সেগুলো তুলে দিতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের ক্লাসনির্ভর হতে হবে। পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন দরকার।
আন্দোলনে বিসিএস শিক্ষকরা:
নতুন করে জাতীয়করণ করা বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের ক্যাডার মর্যাদা না দিতে আন্দোলনে নেমেছে বিসিএস শিক্ষকরা। বেসরকারি শিক্ষকদের ক্যাডারের পরিবর্তে নন-ক্যাডার করার দাবিতে গত ২৬ ও ২৭ নভেম্বর সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট করে তারা। ‘নো বিসিএস, নো ক্যাডার’ দাবিতে ধর্মঘট পালনের পর দাবি পূরণ না হলে জানুয়ারি থেকে ফের কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে বলে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জাতীয়করণ করা শিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত করা হলে শিক্ষা ক্ষেত্রে অরাজক পরিস্থিতির তৈরি হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে নতুন প্রজন্মের মেধাবী শিক্ষকরা। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির নেতারা বলেন, তাদের দাবি অগ্রাহ্য করে ক্যাডারভুক্ত করা হলে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চলবে। এদিকে সরকারি কলেজের শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে গত রোববার ও সোমবার ভেঙে পড়ে সমস্ত শিক্ষা কার্যক্রম। ওই দুইদিন কলেজে হয়নি কোন ক্লাস, অনুষ্ঠিত হয়নি কোন পরীক্ষা। ফলে দুর্ভোগে পড়ে লাখ লাখ শিক্ষার্থী। শিক্ষকদের এই আন্দোলনে সেশনজটের আশঙ্কাও করছেন শিক্ষার্থীরা। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব প্রফেসর শাহেদুল কবীর চৌধুরী বলেন, প্রথম ধাপে দুই দিনের কর্মবিরতিতে সারা দেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিক্ষকরা অংশ নিয়েছেন। আশা করি, সরকার জাতীয়করণ হওয়া শিক্ষকদের নন-ক্যাডার ঘোষণা করে নীতিমালা করবেন। তা না হলে সরকারি কলেজের শিক্ষকরা টানা কর্মসূচির দিকে যাবেন।
প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, প্রশ্নফাঁস নতুন কোন বিষয় না, এটা আগেও ছিল। তবে আমরা অনেক কমিয়ে এনেছি। আগে যে জায়গাগুলো থেকে প্রশ্নফাঁস হতো সেগুলো বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষকরাই এখন প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। পরীক্ষা শুরুর আধঘণ্টা আগে তারা প্রশ্নফাঁস করে দিচ্ছেন। শিক্ষক-অভিভাবকরা নিজেরাই যদি এর সাথে জড়িয়ে পড়ে তাহলে কাদের উপর ভরসা করবো? শিক্ষক-অভিভাবকরা নৈতিকতা সম্পন্ন না হলে তা বন্ধও করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কোচিং বাণিজ্যের বিষয়ে নাহিদ বলেন, আমরা আইন করে কোচিং বন্ধ করে দিয়েছি। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি তারা আবার হাইকোর্ট থেকে রায় নিয়ে আসছে তাদের পক্ষে। অন্যদিকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও কোচিংয়ে আগ্রহী। তারা কোচিং করতে না চাইলে শিক্ষকরা বাধ্য হতো ক্লাসে পড়াতে।
বিসিএস শিক্ষক সমিতির কর্মবিরতির বিষয়ে তিনি বলেন, তারা যে দাবিতে আন্দোলন করছে সেই দাবির বিষয়ে তো কোন সিদ্ধান্তই হয়নি। যেসব কলেজ সরকারি করা হয়েছে তাদের শিক্ষককে প্রমোশন দেয়া হয়েছে। বলা হয়নি তাদেরকে বিসিএস ক্যাডার মর্যাদা দেয়া হয়েছে। আইন হচ্ছে, আইনেই সবকিছু পরিস্কার থাকবে। তবে এই আইন করার জন্য তো সময় দরকার। তার আগে এটা নিয়ে আন্দোলনকে অযৌক্তিক মনে করেন তিনি। আইনে কি থাকবে সে বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, যারা বিসিএস দিয়ে শিক্ষক হয়েছেন তারা বিসিএস ক্যাডার মর্যাদায় থাকবেন। আর অন্যরা হবেন নন-ক্যাডার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন