স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁও ট্রাক টার্মিনাল ও কলাবাগান ক্রিকেট মাঠে দুইপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। নির্বাচনে জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের সংঘর্ষ হয়। প্রথমে নির্বাচনস্থল কলাবাগান মাঠে এবং এর জের ধরে তেজগাঁও এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় তেজগাঁও টার্মিনালে অবস্থিত ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ে ভাঙচুর করেন শ্রমিকেরা। বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের নির্বাচনস্থল কলাবাগান ক্রিকেট মাঠে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে ব্যালট পেপার, ভোটার তালিকার ছেঁড়া অংশ।
বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে গতকাল সকাল আটটায় কলাবাগান ক্রিকেট মাঠে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
বেলা দশটার দিকে নির্বাচনের দুটি প্যানেলের লোকজন প্রতিটি বুথে ঢুকে পড়েন। তারা নিজেদের প্রার্থীর ব্যালটে ভোট দিতে থাকেন। জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে একপর্যায়ে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) হেলালউদ্দিন বলেন, দুইপক্ষ নিজেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে সবাইকে কলাবাগান মাঠ থেকে বের করে দিয়ে আবার পরিচয়পত্র দেখে দেখে ঢোকানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কলাবাগান মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মাঠের মাঝে বানানো নির্বাচনী বুথগুলোর সামনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে ব্যালট পেপার, ভোটার তালিকার ছেঁড়া অংশ। বুথের লোকজন অলস সময় কাটাচ্ছেন। কয়েকজন ভোটার ভোট দিতে এসে দেখলেন ব্যালট পেপার নেই। মাঠে আসা লোকজন বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনটি বুথের দায়িত্বরত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেলা ১১টার দিকেই সব ব্যালট পেপারে সিল মারা হয়ে গেছে। প্রতিটি বুথের ব্যালট বক্স কানায় কানায় ভরা। নাম না প্রকাশের শর্তে এসব লোকজন বলেন, এমন নির্বাচন করার কোনো মানেই নাই। যার যা মন চাইল এসে সিল মেরে চলে গেল।
অবশ্য জাল ভোটের বিষয়টি অস্বীকার করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সামছুল হক। তিনি বলেন, সামান্য বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। চারটা পর্যন্ত সবাই যার যার ভোট দিতে পেরেছেন।
এদিকে কলাবাগান মাঠে সংঘর্ষের খবরে তেজগাঁও ট্রাক টার্মিনাল এলাকাতেও সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ড্রাইভার্স ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ের কক্ষগুলোতে ভাঙচুর চালানো হয়। কক্ষের ভেতরে থাকা চেয়ার-টেবিল বাইরে এনে আগুন দেয়া হয়।
ড্রাইভার্স ইউনিয়নের নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, এবারের নির্বাচনে ১৮টি পদে মোট ৩০ জন নির্বাচিত হবেন। নির্বাচনে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৫৫ জন। সারা দেশে অবস্থিত ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি শাখার সদস্যরা নির্বাচনে ভোট দেবেন। সারা দেশের প্রায় ২১ হাজার ড্রাইভার ও সহকারীরা ভোটের মাধ্যমে তাদের নেতা নির্বাচন করবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন