ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হকের অকাল মৃত্যুতে সর্বত্রই শোকের ছায়া। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ডিএনসিসির উপ নির্বাচন নিয়ে কথাবাতা। ইসির একাধিক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছেন বিধান অনুযায়ী ঢাকা উত্তরের মেয়র পদটি শূণ্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপণ জারির পর ভোটের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
ইসির সহকারী সচিব রাজীব আহসান সাংবাদিকদের বলেছেন, ৩০ নভেম্বর থেকে ৯০ দিন অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে মেয়র পদে উপ নির্বাচন শেষ করতে হবে। কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে অন্তত ৪৫ দিন হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করতে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে মেয়র হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টিকারী নন্দিত মেয়র আনিসুল হকের শূন্যতা পূরণে কে হচ্ছেন ডিএনসিসি নতুন মেয়র? ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে কাকে মনোনয়ন দিচ্ছে? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে বিস্তর মতামত-মন্তব্য প্রকাশ করা হয়। শুধু তাই নয় রাজনীতিবিদ থেকে সাধারণ নগরবাসীর মুখে এখন প্রশ্ন আওয়ামী লীগ কাকে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে মনোনয়ন দেবেন? আনিসুল হক মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব ও ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। রাজনীতি না করলেও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ডিএনসিসির মেয়র নির্বাচিত হওযার পর যে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন তা ঢাকার নগরবাসী অনেক দিন মনে রাখবেন। সে জন্যই নগরবাসীদের কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন আনিসুর হকের স্মৃতি ধরে রাখতে এবং তর মতো নের্তৃত্ব সৃষ্টি করতে পারেন শুধু তারই সন্তান নাভিদুল হক। ‘বাপ কা বেটা’ বলে একটা প্রবাদ আছে। নাভিদুল হক রাজনীতিতে এলে পিতার মতোই যোগ্যতার স্বাক্ষক রাখার চেষ্টা করবেন।
টিভির টকশো ও বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় গত দুদিনে আনিসুল হকের কর্মময় জীবন নিয়ে যারা আলোচনা করছেন তাদের অনেকেই মন্তব্য করছেন এই বলে যে, বাবা আনিসুল হকের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজগুলো পুত্রই পূরন করতে পারবেন। বাবার সম্পপ্ন বাস্তবায়ন পুত্রের গিয়ে বেশি কেউ সোচ্চার হতে পারে না। বিশেষ করে নগর পরিকল্পনাবিদরা আনিসুল হকের কর্মদক্ষতা, সাহস এবং কাজের দৃঢ়তা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, তার বিকল্প পাওয়া কঠিন। তবে তাঁর সন্তানদের উচিত বাপের ইমেজ রক্ষা করা।
গত শনিবার বিকালে বনানী কবরস্থানে পিতার দাফন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাভিদুল হক বলেছেন, বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের পরিবার ঢাকা নগরবাসীর উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চায়। বাবা যে স্বপ্ন দেখতেন সেগুলো যাতে বাস্তবায়ন করা যায় সে চেষ্টাই করা হবে।
২০১৫ সালের ৬ জুন ডিএনসিসি’র মেয়র নির্বাচিত হন আনিসুল হক। মাত্র দুই বছর সময়ে ডিএনডিসিকে তথা ঢাকা শহরকে তিলোত্তমা নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে শুধু স্বপ্নই দেখাননি, স্বল্প সময়ে কিছু স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে নগরবাসীর মনে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন ভিন্নমাত্রার উচ্চতায়। শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, আমরা ধীরে ধীরে লক্ষ্য করছিলাম ঢাকা শহর বদলে যাচ্ছে। এ পরিবর্তনের ধারা অব্যাহত রাখতে বিকল্প হিসেবে যোগ্য লোককে মেয়র পদে আসতে দিতে হবে। একই সুরে সুর মিলিয়েছেন নগরীর বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। আনিসুল হকের বিকল্প হিসেবে অনেকেই তার ছেলে আসলে ভাল হবে বলছেন। আনিসুল হকের ছেলেও বলেন, পদে থেকে বা না থেকে তিনি এবং তার পরিবার ঢাকাবাসীর সাথেই থাকবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন