সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন শক্ত মানব আলী আবদুল্লাহ সালেহর

আরব বিশ্বের সাথে নতুন অধ্যায় রচনার ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহ আনুষ্ঠানিক ভাবে হুতিদের সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন ও তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দেশব্যাপী তার সমর্থকদের নির্দেশ দিয়েছেন। সে সাথে তিনি সউদী নেতৃত্বাধীন জোটের সাথে আলোচনা করা ও আরব বিশ্বের সাথে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এদিকে হুতিরা তার সিদ্ধান্তকে অভ্যুত্থান ও বিশ্বাসঘাতকতা বলে আখ্যায়িত করেছে। তবে সউদী নেতৃত্বাধীন জোট সালেহর এ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে।
হুতি যোদ্ধা ও তার অনুগত বাহিনীর মধ্যে লড়াই চলার পঞ্চমদিন শনিবার এক টেলিভিশন ভাষণে ইয়েমেনের শক্তমানব বলে আখ্যায়িত সালেহ হুতিদের সাথে তার সম্পর্ক ছেদ করার কথা জানান। আলী আবদুল্লাহ সালেহ ৩৩ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গণ অভ্যুত্থানের মুখে ২০১১ সালে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ২০১৫ সালে সউদী নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করলে সালেহ হুতিদের সাথে জোটবদ্ধ হন ও লড়াই শুরু করেন। অতি সম্প্রতি হুতিদের সাথে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সালেহর নেতৃত্বাধীন জেনারেল পিপলস কংগ্রেস (জিপিসি) হুতিদের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করার অভিযোগ আনে। তারা দেশকে গৃহযুদ্ধ ঠেলে দেয়ার জন্য হুতিদের দায়ী করে।
শনিবার তিনি বলেন, সউদী নেতৃত্বাধীন জোট যদি ইয়েমেনে হামলা বন্ধ করে তাহলে তিনি তাদের সাথে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচনা করতে চান। তিনি বলেন, তিনি চান যে একটি যুদ্ধবিরতি হোক এবং জোট নৌ বন্দর ও বিমান বন্দরগুলোর উপর থেকে অবরোধ তুলে নিক। তাহলে শত্রæতার অবসান ঘটবে ও প্রতিবেশি সুলভ বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠিত হবে।
সালেহ হুতিদের নিন্দা করেন। তিনি বলেন, হুতিরা ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চায়। দেশে মানবিক বিপর্যয়ের জন্য তারা দায়ী। ইয়েমেনি জনগণ এখন তাদের হাত থেকে মুক্তি চায়। প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে দেশে তিন বছর ধরে হুতিরা আগ্রাসন চালাচ্ছে। তারা সরকারী কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছে না, খাদ্য, পানি, ওষুধ নেই । কারো কোনো নিরাপত্তা নেই, শিশুদের যুদ্ধে টেনে নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজধানী সানা ও সকল প্রদেশে হুতিদের বিরুদ্ধে গণ অভ্যুত্থান হয়েছে। তিনি দেশ, জাতি ও বিপ্লবকে রক্ষায় তাকে সমর্র্থন দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।
এক হুতি মুখপাত্র বলেন, সালেহর বক্তব্য আমাদের জোট ও অংশীদারিত্বের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ও বিশ^াসঘাতকতা এবং সউদী জোটের আগ্রাসনের বিরোধীদের মধ্যে ভাঙ্গন।
সউদী জোট সালেহর অবস্থান পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে। সউদী আল হাদাত টিভি থেকে প্রচারিত এক বিবৃতিতে জোট বলে, তারা জিপিসির নেতা ও সদস্যদের আরব বলয়ে ফিরে আসার ইচ্ছার ব্যাপারে আস্থাশীল।
আরব সংবাদপত্রগুলোর খবরে বলা হয়, সালেহ সমর্থকরা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সানা বিমানবন্দরসহ রাজধানী সানার গুরুত্বপূর্ণ সরকারী স্থাপনাগুলোর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে।
প্যারিস বিশ^বিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক খাত্তার আবু দিয়াব ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, প্রেসিডেন্ট সালেহর শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতিপত্তি রয়েছে। তিনি এমন সময় হুতিদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন যখন পরিস্থিতি অনুক‚ল।
দিয়াব বলেন, সউদী জোট বাহিনী রাজধানী সানা থেকে বেশি দূরে নেই। অন্যদিকে হুতিরা খাদ্য, পানি, ওষুধ ও টাকার অভাবে ব্যাপক বেকায়দা অবস্থায় পড়েছে। তিনি বলেন, সালেহর পদক্ষেপ পরিস্থিতিতে এক মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনা। টেবিল এখন হুতিদের বিরদ্ধে ঘুরে গেছে এবং পরিস্থিতি ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরের আগের অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যখন হুতিরা প্রেসিডেন্ট হাদির কাছ থেকে রাজধানীর বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
২০০৫ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সালেহ ও ইয়েমেনের সরকারী বাহিনী হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ৫ বার লড়াই করে। কিন্তু সউদী জোটের সামরিক হামলা শুরু হলে সালে হুতিদের সাথে জোট বাঁধেন ও সউদী জোট বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
কাওসার আহমেদ ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ২:২৫ এএম says : 0
এই যুদ্ধ-দ্বন্ধ যে কবে বন্ধ হবে ?
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন