স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ইউপি নির্বাচনে সব ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই ও জাল ভোট চলছে।আজ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ঝালকাঠি জেলাধীন সদর উপজেলার ৩ নং নবগ্রাম ইউনিয়নে গতকাল মাগরিবের পর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র অবস্থায় হোন্ডা নিয়ে এসে ধানের শীষের প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছে।
রিজভী বলেন, ইউপি নির্বাচন এবং ছাত্রলীগের দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গতরাতে নোয়াখালী সরকারি পুরাতন কলেজের সামনে ছাত্রদল নেতা ফজলে রাব্বি রাজিবকে গুলি করে হত্যা করে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। আমি আমার দলের পক্ষ থেকে নিহত রাজিবের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। রাজিবকে হত্যাকারী সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
তিনি আরো বলেন, ২ নং বিনয়কাঠি ইউনিয়নের সকল ভোটকেন্দ্র গতকাল সন্ধ্যার পর দখল করে নিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। প্রশাসনকে জানালেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। পুরো ঝালকাঠি জেলার ৪টি উপজেলার সকল ইউনিয়নেই একই অবস্থা। মুন্সীগঞ্জ জেলাধীন সিরাজদিখান উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ভোটকেন্দ্রগুলি দখলে নিয়ে ব্যালট পেপারে দেদারসে সিল মারছে। সেখানে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ও এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে এলাকাগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। এলাকাগুলোতে চরম থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভোলা জেলাধীন চরফ্যাশন উপজেলার ৭ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি’র এজেন্টদেরকে ভোটকেন্দ্র থেকে অস্ত্রের মুখে বের করে দেয়া হয়েছে। মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নেরও একই অবস্থা। বোরহানউদ্দিন উপজেলার ৭টি এবং দৌলতখান উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের সবকটিতে সকল ভোটকেন্দ্র দখল করে নিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউপি নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থী ও ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আলম মেম্বারের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। গুরুতর আহত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বরিশাল জেলাধীন গৌরনদী ও আগৈলঝরায় ১২টি ইউনিয়নের সমস্ত ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপি’র এজেন্টদের জোর করে বের করে দিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। প্রশাসনের কোন ভূমিকা নেই। মুলাদী, হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার সবকটি ভোটকেন্দ্র দখল করে নিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। ভোটকেন্দ্রগুলো থেকে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। প্রশাসন প্রতিকারের পরিবর্তে উল্টো সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করছে।বাগেরহাট জেলাধীন মংলা, রামপাল, শরণখোলা, ফকিরহাট, মোরেলগঞ্জ, কচুয়া ও সদর উপজেলার সবকটি ইউপি নির্বাচনে সকল ভোটকেন্দ্র দখল করে নিয়েছে আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। ভোটকেন্দ্রগুলো থেকে বিএনপি’র এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। শরণখোলা উপজেলাধীন রায়েন্দা ইউপি নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী মানিকের বাসার সামনে এবং ইউনিয়ন বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনায়েতের বাসার সামনে গতরাতে বোমা ফাটিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এলাকায় চরম ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে।পিরোজপুর জেলাধীন মঠবাড়িয়া উপজেলার ১০টি ইউপি নির্বাচনে গতরাত থেকেই সবকটি ভোটকেন্দ্র দখলে নিয়ে ব্যালট পেপারে সিল মারছে আওয়ামী ক্যাডার বাহিনী। ভোটকেন্দ্রগুলো থেকে বিএনপি’র এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। প্রশাসনের সহায়তায় এলাকাগুলোতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য চরম আকার ধারণ করেছে।
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার প্রায় সবকটি ইউপি নির্বাচনে অধিকাংশ ভোটকেন্দ্র দখল করে নিয়েছে আওয়ামী ক্যাডার বাহিনী। সে সমস্ত ভোটকেন্দ্রে বিএনপি এজেন্টদের এবং সমর্থক ভোটারদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন “প্রশাসনের কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা পাচ্ছি না”। যদি তাই হয় তাহলে জনগণের প্রশ্ন আপনারা (নির্বাচন কমিশন) পদত্যাগ করছেন না কেন ?
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন