বিশেষ সংবাদদাতা, খুলনা : খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ১৭টি গ্রুপের ৯ কোটি ৮০ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৩ টাকার টেন্ডার শিডিউল বিক্রিতে সাধারণ ঠিকাদারদের বাধা দেবার অভিযোগ উঠেছে। গ্রুপের মধ্যে ৪ নম্বরে খালিশপুরের বিআইডিসি রোডের উন্নয়নে এক কোটি ৭৯ লাখ ৮ হাজার টাকার কাজটি মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতির বলে এটির শিডিউল কিনতেই পারেননি ঠিকাদাররা। গতকাল মঙ্গলবার নগর ভবনে শিডিউল (দরপত্র) বিক্রির শেষদিনে বাঁধা দেবার এসব ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার দুপুর ১টায় নগর ভবনে দরপত্র দাখিলের শেষ সময় এবং বিকেল ৩টায় বক্স খোলা হবে।
কেসিসি’র সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কেসিসি’র বিভিন্ন রাস্তা ও অবকাঠামোত উন্নয়ন প্রকল্পের ১৭টি গ্রুপে ৯ কোটি ৮০ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৩ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রকল্পগুলো হল এক কোটি ৩ হাজার টাকার লোয়ার যশোর রোড মেরামত (ডাকবাংলা ট্রাফিক আইল্যান্ড থেকে কাস্টমঘাট পর্যন্ত), ৯৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার কেডি ঘোষ রোড উন্নয়ন, ৫২ লাখ ২০ হাজার টাকার পুরাতন যশোর রোড মেরামত, এক কোটি ৭৯ লাখ ৮ হাজার টাকার খালিশপুর বিআইডিসি রোডের উন্নয়ন, ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকার হাজী বাড়ি রোডের ২য় অংশ উন্নয়ন (রেল লাইন থেকে ২য় রেল লাইন পর্যন্ত), ৩২ লাখ ৩০ হাজার টাকার খালিশপুর এসও রোড উন্নয়ন, ১৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকার স্যার ইকবাল রোডের উন্নয়ন (আংশিক), ৩৫ লাখ ৫ হাজার টাকার কেডিএ এ্যাপ্রোচ রোডের উন্নয়ন, ৫৪ লাখ টাকার শাহাপাড়া মেইন রোডের (বায়তুল্লাহ মসজিদ থেকে ভূইয়া বাড়ী) উন্নয়ন, ৩০ লাখ ৬৬ হাজার ৯৫০টাকার মহেশ্বরপাশা তেলিগাতি মেইন রোড উন্নয়ন, ৫৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকায় বয়রা মধ্যপাড়া রোডের উন্নয়ন, ২১ লাখ ১০ হাজার ৬৪৩টাকার ক্রিসেন্ট পাকা কলোনীর ১নং ও ২নং রোডের উন্নয়ন, ১৮ লাখ ৩২ হাজার টাকার প্লাটিনাম মসজিদ রোডের উন্নয়ন, ৮১ লাখ টাকার বয়রা মেইন রোডের (বাকী অংশ) উন্নয়ন, ৪৫লাখ ২৫ হাজার টাকায় বয়রা মেইন রোডের (পূজাখোলা থেকে মন্নুজান স্কুল পর্যন্ত) উন্নয়ন, ৬১ লাখ ৫ হাজার টাকায় খালিশপুরের ১৮নং রোডের উন্নয়ন, ৭৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ব্যয়ে তালুকদার আব্দুল খালেক রোডের উন্নয়ন। এরমধ্যে দরপত্র বিক্রির শুরু থেকেই ৪নম্বর প্রকল্পের এক কোটি ৭৯ লাখ ৮ হাজার টাকার খালিশপুর বিআইডিসি রোডের উন্নয়নের কাজটি মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতির বলে সাধারণ ঠিকাদারদের কাছে শিডিউল বিক্রি করা হয়নি বলে অভিযোগ বঞ্চিতদের। অন্য শিডিউলগুলো যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রণে।
কেসিসি’র বাজেট কাম হিসাব রক্ষক মোঃ মোস্তাক আহমেদ বলেন, ৪নম্বর প্রকল্পের বিপরীতে ৪টি শিডিউল বিক্রি হয়েছে। সে গুলো হল মায়ের দোয়া কনস্ট্রাকশন, এস কে ট্রেডার্স, জাহানারা কনস্ট্রাকশন ও রহমান এন্টারপ্রাইজ। বুধবার দরপত্র জমা দেবার শেষদিন।
কেসিসি’র একাধিক সূত্র বলেছেন, ৪নম্বর প্রকল্পে মাত্র ৪টি দরপত্র বিক্রি হলেও অন্যগুলোতে ৭০ থেকে একশ’ পর্যন্ত দরপত্র বিক্রি হয়েছে। সিন্ডিকেটের কারণে ৪নং প্রকল্পে সাধারণ ঠিকাদাররা অংশগ্রহন করতে পারেননি। এছাড়া প্রত্যেকটি প্রকল্পের শিডিউল কিনতে ক্ষমতাসীনদের বাঁধা ছিল বলেও অভিযোগ সাধারণ ঠিকাদারদের।
প্রকল্প পরিচালক কেসিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মোঃ লিয়াকত আলী খান বলেন, কোন দরপত্র কিনতে পারেননি এমন অভিযোগ আমার জানা নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন