সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ইসলামিক স্টেট একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসলামী রাষ্ট্র নয় : তাহির-উল-কাদরি

প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ইসলামিক স্টেট (আইএস) একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র, ইসলামী রাষ্ট্র নয়। এর মতাদর্শ কুফরি মতাদর্শ। এ মতাদর্শ ইসলাম এবং পবিত্র কুরআন ও রাসূল সা.-এর শিক্ষার বিরোধী। ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপ এডিটোরিয়াল ডাইরেক্টর (প্রকাশনা) রাজ চেঙ্গাপ্পার সাথে সোমবার এক একান্ত সাক্ষাতকারে কানাডীয়-পাকিস্তানি ধর্মীয় নেতা তাহির-উল-কাদরি এ কথা বলেন। খবর ইন্ডিয়া টুডে।
সম্প্রতি ভারতের সুন্নী মুসলমানদের সর্বোচ্চ সংস্থা অল ইন্ডিয়া উলেমা অ্যান্ড মাশায়েখ বোর্ড (এআইইউএমবি) আয়োজিত বিশ^ সূফী ফোরামে অংশ নিতে কাদরি ভারতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আইএসের মতাদর্শ কুফরি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আইএস ‘ফ্যাসাদ’ সৃষ্টি করছে। তাদের চরিত্র, কর্মকা-, ব্যবহার অথবা মতাদর্শে জিহাদের কোনো বিষয় নেই।
তিনি ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, আমি বলতে চাই যে নিজেদের ইসলামিক স্টেট বলে ঘোষণা করাটা তাদের এক ভীষণ ঘৃণ্য অপরাধ, যেহেতু ইসলামের ব্যাপারে তাদের কিছু করার নেই। এটি একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র, একটি মানবতা বিরোধী রাষ্ট্র, একটি ধর্ম বিরোধী ও বিশ^াস বিরোধী রাষ্ট্র। সংগঠনের জন্য জীবনদানকারী যোদ্ধারা বেহেশতে যাবে বলে আইএসের প্রচারণার প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, লুটতরাজ ও হত্যা ইসলামের অংশ নয়। কাদরি বলেন, আমি এ বার্তা পাঠাতে চাই যে তারা যা করছে তা জিহাদ নয়, ফ্যাসাদ। আইএসের যারা মারা যাচ্ছে তারা বেহেশতে নয়, দোযখে যাচ্ছে। কারণ তারা মানুষ হত্যা করছে, তারা নিরপরাধ ও বেসামরিক লোকদের হত্যা করছে। ভূমি দখল, মানুষ হত্যা ও অর্থ লুট ইসলাম ধর্ম বা অন্য কোনো ধর্মের আদর্শ নয়।
মুসলমানদের গোষ্ঠিগত ভাবে বিভক্ত ও সমাজে ভীতি সৃষ্টির জন্য বিশ^ সূফী ফোরামে যোগদানকারী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করায় কাদরি জমিয়াত-উলেমা-ই-হিন্দের সভাপতি মওলানা আরশাদ মাদানির নিন্দা করেন। মাদানি দাবি করেন যে সূফিবাদ ইসলামের অংশ নয়, যেহেতু কুরআন ও হাদিসে এর কোনো স্থান নেই।
মাদানি বলেন, মোদী সরকার মুসলমানদের বিভক্ত করার চেষ্টা করছে ও তাদের মধ্যে বৈরিতা সৃষ্টি করছে। আমরা সূফিদের বিরোধী নই, তারা সমাজের অংশ। মোদী সরকার সমগ্র মুসলমানদের উপরই খড়গহস্ত। তিনি বলেন, সরকার মুসলমানদের এক অংশকে আরেক অংশের বিরুদ্ধে ব্যবহারের চেষ্টা করছে, কিন্তু এ কাজে মাত্র কয়েক হাজার লোককে সমবেত করতে পারার কারণে ব্যর্থ হচ্ছে।
কাদরি বলেন, আমি তার এ মতের সাথে একমত নই। মওলানা মাদানি সাহেবের গুরুজনরাও সূফি ছিলেন। সুতরাং এটা বলা অদ্ভুত ব্যাপার যে ইসলাম ও রাসূল (সা.)-এর সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
কাদরি দেওবন্দ ঘরানার আগের আলেমদের কথা উল্লেখ করেন যারা সূফিবাদের বলিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন। তিনি বলেন, মওলানা আশরাফ আলি থানভী একজন সূফি ছিলেন ও চিশতিয়া তরিকাভুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন হাজি মুদাদুল্লাহ মোহাজির মাদানির ছাত্র। মওলানা কাসিম নানতুবি, মওলানা রশিদ আহমদ গঙ্গোহি অথবা মওলানা হোসেইন আহমদ মাদানি সবাই সূফিপন্থী ছিলেন। দেওবন্দের অন্য বড় উলেমারাও সূফিপন্থী ও চিশতিয়া সিলসিলার অনুসারী। তারা আজো সূফিপন্থী ও তাদের মুরিদ তৈরি অব্যাহত রেখেছেন।
দেওবন্দের সরকারী অবস্থান সূফিবাদ বিরোধী নয়। কতিপয় বিষয়, দিক বা ধারণা বিষয়ে মতপার্থক্য আছে, কিন্তু তা মানে এই নয় যে সূফিবাদের প্রতি দেওবন্দের দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক। তিনি বলেন, এ এক নতুন বিষয় যা আমি এই প্রথম শুনছি।
তাহির-উল-কাদরির মন্তব্যের জবাবে মাদানি তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, আমরা সবাই সূফি, কিন্তু সূফিবাদ কী? সূফি হওয়া খারাপ বিষয় নয়। যারা মুসলমান তারাও সূফি। আমরা দেওবন্দের লোকেরা সূফি, কিন্তু ইসলামে এমন কিছু নেই যা রাসূল (সা.) থেকে দূরে ও পৃথক। সূফিবাদও একই বিষয়। তাঁর পথ অনুসরণই সূফিবাদ। রাসূল (সা.) ছাড়া সূফিবাদ কিছুই নয়। ইসলামের নাম সূফিবাদ নয়। ইসলাম হচ্ছে রাসূল (সা.)-এর বলা পথের অনুসরণ। হাদিস বা কুরআনে সূফিবাদের কোনো জায়গা নেই। সূফিবাদ কি; রাসূল (সা.)-এর বাইরে কিছু আমরা গ্রহণ করতে পারি না, না পারে তা বিশ^।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
sharif ২৩ মার্চ, ২০১৬, ৯:৩৩ এএম says : 0
yes, 100% right
Total Reply(0)
Liton Haque ২৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:৩২ পিএম says : 0
আইসিস ভালো না মন্দ জানিনা, আল্লাহই ভালো জানেন তাই এর মধ্যে না জড়ানোটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন