শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিচারহীনতার সংস্কৃতি আর নয় -কাজী রিয়াজুল হক

| প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার আহŸান জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তিনি বলেছেন, রাকিব-রাজন হত্যাকারীদের মতো শিশু হত্যা-নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে অপরাধ কমে আসবে। এজন্য নির্যাতিত পাশে সকলকে সম্মিলিত ভাবে দাড়াতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় মানবাধিকর কমিশন সম্মেলন কক্ষে অ্যাকশন ফর সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) আয়োজিত সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহŸান জানান। ‘শিশু সুরক্ষা : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এই সংলাপে সভাপতিত্ব করেন এএসডি’র নির্বাহী পরিচালক জামিল এইচ চৌধুরী। এএসডি উপ-নির্বাহী পরিচালক মো. মোজাম্মেল হকের সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তৃতা করেন বিচারপতি মো. নিজামুল হক, শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আব্দুস শহীদ মাহমুদ, মানবাধিকার কর্মী মো. মাহবুবুল হক, সমাজসেবা কর্মকর্তা কে এম শহীদুজ্জামান, শিশু বিশেষজ্ঞ শরফুদ্দিন আহমেদ প্রমূখ। মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন এএসডি’র প্রজেক্ট ম্যানেজার ইউকেএম ফারহানা সুলতানা।
সংলাপে তিনি বলেন, শিশু অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি অনেক। তবে বিদ্যমান আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা গেলে আরো ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। এজন্য জাতীয় থেকে আঞ্চলিক পর্যায়ের শিশু বিষয়ক কমিটিগুলো সক্রিয় করা দরকার। তিনি বলেন, মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে শিশু কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে কাজ চলছে। শিশু অধিদপ্তর গঠনেরও তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সরকার এসকল বিষয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করেছিলেন। বর্তমান সরকারও আন্তরিক। কিন্তু দেশে অনেক আইন থাকলেও সেই আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। তাই আগে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারী বেসরকারী সংস্থার পক্ষ থেকে মনিটরিং জোরদার করার আহŸান জানান তিনি।
সংলাপে উত্থাপিত প্রস্তাবের আলোকে শিশু সুরক্ষায় ৭ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন এএসডি উপ-নির্বাহী পরিচালক মো. মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, বস্তিবাসী শিশু, পথ শিশু, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে, গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুসহ অবহেলিত শিশুদের সামগ্রিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য অর্থবরাদ্দের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা ও জবাব দিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি শিশু হত্যা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বছরের অন্তত: দু’টি দিন শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে তাদের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সুপারিশ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে এসকল প্রস্তাব সর্বসম্মত ভাবে গৃহীত হয়। সংলাপে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বিদায়ী বছরে ৯৪৯জন শিশু হত্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে ৫৪৮ জন ধর্ষণ, ৬৬ জন গণধর্ষণ, ১৮ জন ধর্ষণের পর হত্যা, ৬১ জন পিটুনীর, ৭ জন পিটিয়ে হত্যা, ২৫ জন পর্ণোগ্রাফির, ৪৮ জন মা-বাবর দ্বারা হত্যা ও ১৫২ জন অপহরণের শিকার এবং ২৪ জন নবজাতকের লাশ উদ্ধার হয়েছে। আগের বছর ২০১৬ সালে ৮৭৭ জন শিশু হত্যা নির্যাতনের শিকার হয়। আরো বলা হয়, দেশে ৩৪ লাখ শিশু শ্রমের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে ৩২ লক্ষ ৭২ হাজার ৭৭৯ জন অপ্রাতিষ্ঠানিকখাতে এবং এক লক্ষ ৭৭ হাজার ৫৯০ জন প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। আর ১২ লক্ষ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমের সঙ্গে জড়িত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন