শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

প্রশ্ন ফাঁস বন্ধে ফেসবুক বন্ধ রাখতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়

| প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধে এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক বন্ধ রাখতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এজন্য ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে। এখন দেখা যাক এটা আলাপ করে কীভাবে করা যায়। ফেইসবুক একেবারে বন্ধ তা নয়, একটা লিমিটেড টাইমের জন্য আমরা করব। গতকাল (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, ফেইসবুক যাঁরা পরিচালনা করেন, তাঁদেরকে একটি লিমিটেড সময়ের জন্য ফেইসবুক বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন তাঁরা। পরীক্ষা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ফেইসবুক বন্ধ থাকবে কি না, এমন প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুধু পরীক্ষার সময় ফেইসবুক বন্ধ থাকবে। প্রশ্নপত্রের খাম তো শুধু পরীক্ষার দিন খুলতে হবে। অন্য দিন তো খোলার দরকার নেই। শুধু পরীক্ষায় একটি সীমিত সময়ের জন্য, যে সময়ে এই বিষয়টি (প্রশ্নপত্র ফাঁস) ঘটতে পারে সেটা নির্ধারণ করে চেষ্টা করা হবে।
এ বিষয়ে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন কি না, জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ফেইসবুক বন্ধ করার জন্য আইসিটি মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা সীমিত সময়ের জন্য, এতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। দু-এক ঘণ্টায় কিছু হবে না। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে তাঁরা ডেসপারেট ও এগ্রেসিভ’ বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। কোচিং সেন্টারগুলোকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ‘আড্ডাখানা’ উল্লেখ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ জন্য পরীক্ষার সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হবে। পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পরীক্ষা শুরুর তিন দিন আগে থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে।
নাহিদ বলেন, নিয়মানুযায়ী, পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হয়। এটা ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে সরকারের লোক থাকবে। ঢাকায় মন্ত্রণালয়, বোর্ডসহ অধীনস্থ দপ্তরের কর্মকর্তারা তা দেখতে যাবেন। আর জেলা-উপজেলায় এই ব্যবস্থা করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলা হবে। তাঁরাই ‘টিম’ করে তদন্ত করতে পারবেন। সারা দেশেই এ ব্যবস্থা করে পাহারা দেওয়া হবে। প্রশ্নপত্রের কোনো খাম আধা ঘণ্টা আগে খোলা পাওয়া গেলে আইন অনুসারে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে, চাকরি যাবে, কারাগারে যাবেন। পরীক্ষার দিন কেন্দ্র পর্যায়ে প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে পরীক্ষা নেওয়া আপাতত হচ্ছে না বলেও ইঙ্গিত দেন শিক্ষামন্ত্রী। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসএসসি, দাখিল ও সমমানের তত্ত¡ীয় বিষয়ে পরীক্ষা হবে। গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার আগের রাতে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। পরীক্ষার দিক সকালে ফেইসবুকে মিলছে প্রশ্ন। পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্ন ফাঁস হয়, সকালে দুই-এক ঘণ্টার জন্য ফেইসবুক বন্ধ রাখলে তাতে লাভ হবে কি না- এই প্রশ্নে নাহিদ বলেন, সর্বশেষ দুই-তিন বছরের অ্যানালাইসিস করে গবেষকরা দেখেছেন, ওই ভোররাতে, সকালে এমন হয়। অনেক জায়গায় দূরের একটা গ্রামাঞ্চলে, হাওর অঞ্চলে, পাহাড় অঞ্চলে আমাদের সেন্টার আছে এবং তারা ভোরবেলা (প্রশ্ন) নিয়ে যান। ভোরবেলা যেটা দেয় (ফেইসবুকে প্রশ্ন) তার মধ্যে সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়।
৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ বাধ্যতামূলক: এসএসসি পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে জানিয়ে নাহিদ বলেন, আগে আঘাঘণ্টা পরে এলেও কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হত, আমরা এবার সেটা গণ্য করব না। যেহেতু প্রশ্ন দেওয়া হয় ১০টার সময়। এতদিন এর আধ ঘণ্টা পরেও পরীক্ষার হলে ঢুকতে পারত। আমরা সকল পরীক্ষার্থী বলে দিচ্ছি যে, আধঘণ্টা আগে অর্থাৎ সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হলে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের আগে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করে সিটে বসতে হবে। ঠিক সময়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে যানজট কিংবা পরীক্ষা কেন্দ্র দূরে হলে তা আগে থেকেই বিবেচনায় নিয়ে বাসা থেকে রওনা হওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রসচিব প্রশ্নের খাম খুলবেন, এর আগে তিনি প্রশ্নের প্যাকেট খুলতে পারবেন না। সাড়ে ৯টার আগে কেউ প্রশ্নের প্যাকেট খুললে অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করা হবে। মামলা হবে, জেলে যাবেন, চাকরি যাবে। তিনি বলেন, কেন্দ্র সচিব একটি সাধারণ ফোন (স্মার্ট ফোন নয়) সঙ্গে রাখতে পারবেন। অন্য কেউ সঙ্গে কোনো ধরনের মোবাইল সঙ্গে রাখতে পারবেন না। শিক্ষকদের সতর্ক করা হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অভিভাবকদের বলছি, তারা যেন উপলব্ধি করেন পরীক্ষায় পাস করানোর জন্য অসসৎ পথ অনুসরণ করে নিজের সন্তানকে নৈতিকভাবে তিনি ভুল শিক্ষা দিচ্ছেন। যারা শিক্ষকতা পেশায় এসে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করছেন তারা দয়া করে (চাকরি) ছেড়ে যাবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
জহির ২৪ জানুয়ারি, ২০১৮, ৩:৩৬ এএম says : 0
কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন