আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে সাম্প্রতিক হামলায় বেশ কয়েকজন মার্কিন নাগরিক নিহত ও আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। তালিবান জঙ্গিদের এ হামলায় ৩০ ব্যক্তি নিহত হন।
বিবৃতিতে নিহত মার্কিনিদের সংখ্যা উল্লেখ বলা হয়নি। আফগান কর্মকর্তাগণ বলেন, হোটেলের ঐ হামলায় ১৪ জন বিদেশি নিহত হন। তাদের ১১ জনই আফগান বেসরকারী বিমান সংস্থা কামএয়ারের কর্মী। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলে, এ ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও স্বজনের প্রতি আমরা গভীর সহানভ‚তি জ্ঞাপন ও আহতদের দ্রæত আরোগ্য কামনা করছি।
স্থানীয় কিছু ব্যক্তি জানান, এ হামলায় ৪০ জন নিহত হয়েেেছন। তবে ঊর্ধ্বতন আফগান কর্মকর্তারা বলেন, নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। হামলাকারী ৬ জন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। কোনো কোনো সূত্র হামলাকারীর সংখ্যা ৫ জন ছিল বলে জানিয়েছেন। সামরিক পোশাক পরা জঙ্গীরা ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কাবুলের বিলাসবহুল হোটেলে হামলা চালায়। কর্মকর্তারা বলেন, বন্দুকধারীরা হলওয়ে দিয়ে প্রবেশ করে হোটেলে বিদেশী ও আফগান কর্মকর্তাদের খুঁজতে থাকে। ৪১ জন বিদেশীসহ ১৫০ জনকে উদ্ধার করা হয় বা তারা পালাতে সক্ষম হন। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাভলো ক্লিমকিন ২১ জানুয়ারি বলেন, নিহতদের মধ্যে ৬ জন ইউক্রেনীয়।
এদিকে তাজিকিস্তান ও আফগানিস্তানে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ভিক্টর নিকিটিউক ২২ জানুয়ারি ১১২ ইউক্রেন টিভি চ্যানেলকে বলেন যে কামএয়ারের হয়ে কাজ করা ৭ জন ইউক্রেনীয় নিহত হয়েছেন। কাজাখ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, নিহতদের মধ্যে একজন কাজাখও আছেন। আফগান নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ধারণা যে এমন এক সময়ে হামলা চালানো হয় যখন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সম্মেলনে যোগ দিতে ৩০ জনেরও বেশি প্রাদেশিক কর্মকর্তা ঐ হোটেলে অবস্থান করছিলেন।
নিহতদের মধ্যে একজন হলেন আহমাদ ফারজান। তিনি কাবুল এবং তালিবান ও অন্যান্য বিরোধী গ্রুপের মধ্যে শান্তি আলোচনার দায়িত¦প্রাপ্ত হাই পিস কাউন্সিল নামক কমিশনের একজন কর্মচারী ছিলেন।
প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, বিদ্রোহীরা বহু রক্ষীর প্রহরাধীন বিদেশী ও আফগান কর্মকর্তা অধ্যুষিত হোটেলে উত্তর দিক দিয়ে ঢোকে ও রান্নাঘরে হামলা চালায়। তালিবান এ হামলার দায়িত¦ স্বীকার করেছে। তবে আফগান অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় এ হামলার জন্য পাকিস্তান ভিত্তিক ও তালিবানের মিত্র উগ্রপন্থী হাক্কানি নেটওয়ার্ককে দায়ী করেছে।
আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, জঙ্গি গ্রুপগুলো প্রতিবেশি দেশগুলোর সাহায্য পাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে আফগান কর্মকর্তারাও আফগানিস্তানে সক্রিয় সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় প্রদানের জন্য পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছেন। তবে ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করে আসছে।
এদিকে পাকিস্তানও কাবুলে বর্বরোচিত হামলার নিন্দা করেছে এবং জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর সহযোগিতার আহবান জানিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন