ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলন
ইসলামের গুর”ত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো এশায়াত তথা কুরআন-সুন্নাহ্ অনুমোদিত পন্থায় মানবজাতিকে ইসলামের পথে কুরআন-সুন্নাহ্র দিকে আহবান করা, সৎকাজের আদেশ দেয়া এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করা। আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, “তোমরা সর্বোত্তম জাতি। তোমরা ভালোকাজের আদেশ দিবে এবং অসৎকাজ থেকে বারণ করবে।” মহান আল্লাহর এ বাণীর বাস্তবায়ন হলো এশায়াত সম্মেলন। আজ বিশ^ব্যাপী মুসলমানরা লাঞ্চিত, অপমানিত, নির্যাতিত। প্রতিদিন শত শত ফিলিস্তিনি নারী, যুবক ও নিষ্পাপ শিশুরা ইসরাইলী বাহিনীর হাতে অত্যাচারের শিকার হচ্ছে, নির্যাতনের বলি হচ্ছে। মুসলমানদের প্রথম কিবলা বাইতুল মুকাদ্দাস নিয়ে ইহুদিরা গভীর ষড়যন্ত্র করছে। লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম চরম দুঃখ-দুর্দশা, অত্যাচার, নির্যাতনের কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। লাখ লাখ নির্যাতিত মুসলিম পরিবার নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে পরদেশে জীবনযাপন করছে। এর মূল কারণ আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর হাবিব (দঃ)’র আনুগত্য বিমুখতা, কুরআন-সুন্নাহ্র প্রতি উদাসীনতা, আত্মশুদ্ধি, ধর্মীয় চেতনা ও দ্বীনি ঐক্যের অভাব। আর এ অভাব ঘুচানোর জন্য প্রয়োজন সঠিক এশায়াত এবং প্রিয় নবী (দঃ)’র যোগ্য উত্তরসূরী একজন আধ্যাত্মিক পথ প্রদর্শক। একবিংশ শতাব্দির ক্রান্তিকালে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার কাগতিয়া গ্রামে ১৯২৩ সালে আগমন করেছিলেন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসূল (দঃ) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হু। যিনি বিশ^ব্যাপী দ্বীনি এশায়াতের জন্য গঠন করেন অরাজনৈতিক তরিক্বতভিত্তিক আধ্যাত্মিক সংগঠন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ। মুসলিম মিল্লাতের জন্য আধ্যাত্মিক জগতে তাঁর অনন্য অবদান হল- তরিক্বত প্রবর্তন। মহান আল্লাহ ও তাঁর হাবিব (দঃ)’র ভালোবাসা বিজড়িত এবং কুরআন-সুন্নাহ্র আলোকে তাঁর অবর্ণনীয় সাধনা, ইবাদত-রিয়াজত, একনিষ্ট একাগ্রতা দিয়ে প্রবর্তন করেছেন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ তরিক্বত। যা বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ দিক দিয়ে হাজারো আধ্যাত্মিক কার”কাজে সাজানো-গোছানো। এ মহামনীষী পথহারা যুব সমাজকে দ্বীনের প্রতি ধাবিত করার জন্য ডাক দেন, হে যুবক! নামাজ পড়, রোজা রাখ, নবী কারিম (দঃ)’র উপর দর”দ পড়, মাতৃভূমি শান্ত কর। তাঁর ছোহবত গ্রহণ করে আজ লাখো যুবক সুন্নাতে নববীর অনুশীলন করছে, কুরআন-সুন্নাহ্র আলোকে জীবন পরিচালনা করছে। তাঁর এ কার্যক্রম আজ বাংলাদেশের গন্ডি পেরিয়ে কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, আমেরিকাসহ আরব বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়ছে। তাঁর অনুসারীরা র”হানীশক্তিতে বলীয়ান হয়ে দেশ-বিদেশে দ্বীনের তাবলীগ ও তরিক্বতের এশায়াত করে যাচ্ছেন দেশ ও মুসলিম জাতির কল্যাণে। এ মহামনীষী ২০১৬ সালের ৪ মে এ পৃথিবী থেকে চির বিদায় নেয়ার পর তাঁর তরিক্বতের যাবতীয় কাজ সুচার”ভাবে পালন করছেন তাঁরই একমাত্র খলিফা মুনিরীয়া যুব তাবলীগ কমিটি বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি, কাগতিয়া এশাতুল উলুম কামিল এম.এ. মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আওলাদে রাসূল (দঃ) মোর্শেদে আজম হযরতুলহাজ্ব আল্লামা শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী। যিনি দেশের কল্যাণে অসংখ্য দ্বীনি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন, দেশ-বিদেশে মুসলিম মিল্লাতকে শরীয়ত-তরিক্বতের দাওয়াত প্রদান করছেন। আধ্যাত্মিক এ কর্মবীর গ্রাম থেকে গ্রামে, শহর থেকে শহরে, নগর থেকে নগরে সফর করছেন দ্বীনের তাবলীগ ও এশায়াতের জন্য। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ২৭ জানুয়ারি, শনিবার বেলা ১টা হতে রাজধানী ঢাকার গুলিস্থানস্থ কাজী বশির মিলনায়তন সম্মুখস্থ ময়দানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলন। আদর্শবান দেশপ্রেমিক যুবক গড়ার প্রত্যয়ে, ইসলামের শান্তির সোনালী বাণী পৌঁছিয়ে দেয়ার জন্য এ সম্মেলন। জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এ সম্মেলন। মুসলিম নেতৃবৃন্দের মাঝে ইসলামী মূল্যবোধ, ধর্মীয় চেতনা, দ্বীনি ঐক্য এবং ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠার জন্য এ সম্মেলন। সর্বোপরি দেশ ও জাতির কল্যাণে এ সম্মেলন। দেশ, জাতি ও মুসলিম বিশ্বের শান্তি, সমৃদ্ধি ও ইসলামের শান্তির বাণী প্রতিষ্ঠায় এ ঐতিহাসিক এশায়াত সম্মেলনে সকলের প্রতি দ্বীনি দাওয়াত জানাচ্ছি।
আল্লামা মোহাম্মদ আশেকুর রহমান
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন