স্টাফ রিপোর্টার : বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের প্রেক্ষাপটে ডিএমপির বিধিমালায় যুক্ত একটি শব্দ নিয়ে আপত্তি তুলে করা রিট আবেদনে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রুলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালার ৪ (খ) ধারায় যুক্ত ‘যেকোনো’ শব্দটি কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তিন আইনজীবীর করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল (রোববার) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল দেন। আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তবে তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে কোনো ধরনের স্থগিতাদেশ দেয়নি আদালত।
রিট আবেদনকারীদের এক আইনজীবী জানিয়েছেন, এই বিধানের ক্ষমতাবলেই পুলিশ বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছে।
এর আগে ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার করা একটি রিট আবেদন গত ১৩ মার্চ খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ।
এরপর ২০০৬ সালের ১৯ অক্টোবর জারি হওয়া ঢাকা মহানগর পুলিশ (নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালার ৪ (খ) বিধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা, এস এম এনামুল হক ও সুপ্রকাশ দত্ত ২০ মার্চ রিটটি করেন।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তাকে সহায়তা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শশাঙ্ক শেখর সরকার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালার ৪ (খ) অনুসারে ঢাকা মহানগর এলাকায় জনসাধারণের শান্তি বিঘœকারী যেকোনো উদ্যোগ প্রতিহতকরণসহ শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখার স্বার্থে ‘দ্রুত যেকোনো’ পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিষয়ে বলা আছে।
আদেশের পর ব্যারিস্টার অনীক আর হক বলেন, ‘বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের বিরুদ্ধে করা একটি রিট এর আগে খারিজ হয়েছে। সেখানে রাষ্ট্রপক্ষ জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালার ৪ (খ)-এর আলোকে ওই তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ৪ (খ) অনুসারে পুলিশ ‘দ্রুত যেকোনো’ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে বলে বলা আছে।’ এটি সংবিধানের ২৬, ২৭, ৩২ ও ৪৩ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও জানান তিনি।
সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্য আইন বাতিল, ২৭ অনুচ্ছেদে আইনের দৃষ্টিতে সমতা, ৩২ অনুচ্ছেদে জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার রক্ষণ ও ৪৩ অনুচ্ছেদে গৃহ ও যোগাযোগের রক্ষণ বিষয়ে বলা আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন