শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নাটক ও সাহিত্য পত্রিকায় ঝুঁকছেন মধ্যবয়স্করা

এহসান আব্দুল্লাহ : | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

তিন দিনেও সম্পূর্ণ হয়নি ব্যবস্থাপনা
গতকাল ছিল বইমেলার তৃতীয় দিন। বরাবরের মতোই সকাল থেকেই চলছিল শিশু প্রহর। তবে বইমেলার দ্বিতীয় শিশু প্রহরে তেমন একটা দর্শনার্থী পায়নি শিশু চত্বর। শিশু চত্বরের দোকানীদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে। তবে ব্যতিক্রম চিত্র ছিল মেলার বিকেল বেলায় বাবা মায়ের সাথে হাতে হাত ধরে তারা ঘুরে ঘুরে দেখছিল নানা রংয়ের বই। কেউবা কমিক্স কেউ ছড়া বা ভুতের বই। নতুন কিছু পেলেই বায়না ধরছে কিনে দেবার জন্য। বাবা মায়েরাও বই হাতে নিয়ে দেখছেন তাতে শিক্ষণীয় কিছু আছে কিনা। তবেই তা কিনে দিচ্ছেন সন্তানদের। তবে গতকাল দর্শক সমাগম থাকলেও বেচাকেনা তেমন এটা আশানুরুপ হয়নি শিশু চত্বরে।
ওয়ার্ল্ড অব চিলড্রেন’স বুক এর নির্বাহী পরিচালক রাসেল মীর্জা বলেন, ‘আজকে বেচাকেনা গতকালের তুলনায় কম হচ্ছে। তবে এই অবস্থা থাকবেনা আশা করি।’ আর কিছুদিন গেলেই বেচাকেনা জমে উঠবে বলে মনে করেন এই বিক্রেতা।
অপরদিকে নাটক ও সাহিত্য পত্রিকার স্টলগুলোতে তেমন একটা ভীড় লক্ষ্য করা যায়নি। থিয়েটার ও সাহিত্য পত্রিকা কেন্দ্রিক স্টল গুলোতে তরুণ দর্শনার্থীদের থেকে মধ্যবয়স্ক দর্শনার্থীদের আনাগোনাই বেশি লক্ষ্য করা গেছে। তরুণরা আসলেও কেবল দেখেই সাড়, গ্রাহক হিসেবে আগ্রহ দেখান কয়েকজনই। এরকম কয়েকটি স্টলের বিক্রয় কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, তরুণরা তেমন একটা এইসব স্টলে আসেন না। যারা আসেন তারা অধিকাংশই মধ্যবয়স্ক সাহিত্যপ্রেমী। এমনটা হবার কারন জানতে চাইলে তারা বলেন, আসলে তরুণরা অধিকাংশই তাদের পছন্দের ও পরিচিত লেখকদের লিখনীর দিকে ঝুকে থাকেন। সেক্ষেত্রে এইসব ক্লাসিক সাহিত্যের পত্রিকা তাদের পছন্দের তালিকায় থাকেনা।
বাংলা একাডেমি চত্বরে থিয়েটার বিষয়ক স্টল ‘থিয়েটার’ এর বিক্রয় কর্মী সাফিয়া আফরিন বলেন, এখানে অধিকাংশ গ্রাহকই আসেন যারা ক্লাসিক সাহিত্যের পাঠ নিতে চান তারা। আর তরুণদের মধ্যে যারা নাটক বা নাট্যকলা নিয়ে পড়াশোনা করেন তারা আসেন।
তবে মেলার উদ্যান অংশে দর্শনার্থীদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে চোখে পড়ার মতোই। স্টলগুলোতে বেচাকেনাও হচ্ছে আশানুরুপ বলে জানান বিক্রয়কর্মীরা। ছুটির দিন থাকায় সকালে তেমন একটা ভীড় লক্ষ্য করা না গেলেও বিকেলে মেলায় এসেছেন সকল বয়সের দর্শনার্থীরাই। উচ্ছাস আর আগ্রহ নিয়েই যেন মেলা দেখছিলেন সকলে।
অন্যদিকে বইমেলার তৃতীয় দিনেও চোখে পড়ে নানা অব্যবস্থাপনা। স্টলগুলোতে বাংলা একাডেমি কর্তৃক কোন স্টল নাম্বার সম্বলিত প্লেট প্রদান করা হয়নি, ফলে দর্শনার্থীরা স্টল খুজতে গিয়ে বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন বলে জানান।
মেলায় ঘুরতে আসা ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুনায়েদ আহসান বলেন, এবারের মেলায় এখনো স্টলগুলোতে কোন নাম্বার প্লেট দেখতে পাচ্ছিনা। ফলে স্টল খুজতে প্রচন্ড ঝামেলা হচ্ছে। কোন কোন স্টল নিজেদের উদ্যোগে নাম্বার দিলেও অধিকাংশ স্টলেই নাম্বার নেই। এটি বাংলা একাডেমির অব্যবস্থাপনা ছাড়া কিছুই বলবোন।
মেলার সোহরোওয়ার্দী উদ্যান অংশে বাংলা একাডেমির তথ্য কেন্দ্রের কাজ মেলার তৃতীয় দিনেও সম্পন্ন হয়নি, ফলে দর্শনার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য সহযোগীতা প্রাপ্তিও ব্যাহত হচ্ছে। একাডেমি চত্বরের মিডিয়া সেন্টারের স্টল তৈরী থাকলেও সেখানে কাউকে দেখা যায়নি সেবা প্রদান করতে। গতবছর থেকে শুরু হওয়া নতুন বইয়ের স্টলেও কোন সেবাদাতা কে দেখা যায়নি কাল। এসব ব্যপারে জানতে চাইলে মেলার সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বলেন, স্টল নাম্বার আজকে রাতের মধ্যেই বসানো হবে। আর সোহরোওয়ার্দী উদ্যান অংশের তথ্য কেন্দ্রের নির্মাণও দ্রæতই সম্পন্ন করা হবে বলে জানান। মিডিয়া সেন্টার ও নতুন বইয়ের স্টলে কাউকে দেখা না যাওয়ার ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন ‘আপনি কখন মেলায় এসেছেন? প্রতিবেদক তাকে সময় জানালে তিনি বলেন এখন আসলে দেখতে পেতেন।’ তবে মেলা থেকে প্রতিবেদকের সূত্র জানায় সন্ধ্যার সময়ও মিডিয়া সেন্টার খালিই ছিল এবং নতুন বইয়ের স্টলে দুজন সেবাদাতা ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন