মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

ইসলামে মানব সম্পদ উন্নয়নের গুরুত্ব

মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

\ চার \
কোন কালোর উপর সাদার কিংবা সাদার উপর কালোর তাকওয়া ব্যতীত কোন মর্যাদা নেই। সাধারণভাবে সকল মানুষকে এভাবে সমান ঘোষণার পর কুরআন ও হাদীসে মানুষের উপর মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব ও কর্তৃত্বের জন্য বিশেষ যোগ্যতা অর্জনের তাগিদ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সে ব্যক্তিই সবচেয়ে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন, যে তোমাদের মধ্যে সবেচেয়ে বেশি তাকওয়াবান। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু জানেন, সবকিছুর খবর রাখেন।
পরকালীন সফলতা-ব্যর্থতার মাপকাঠি ঃ নিঃসন্দেহে মানবসম্পদ উন্নয়নে ইসলামের সবচেয়ে বড় প্রেরণা এর পরকাল বিষয়ক মূল্যবোধ ও নীতিমালা। দুনিয়াতে একজন লোক যদি আর্থিক বা শারীরিক কিংবা সামাজিক দিক থেকে গ্রহণীয় হয় অথবা কেউ যদি সকল দিক থেকে অগ্রহণযোগ্য হয় তাহলে দুনিয়ার বিচারে লোকটির জীবন সফল হয়েছে বা ব্যর্থ হয়েছে বলা যায়। কিন্তু আখিরাতে ব্যক্তির সফলতা নির্ভর করে একান্তভাবে ব্যক্তির সঠিক বিশ্বাস, সৎকর্ম, সৎচিন্তা ও সৎ জীবনযাপনের উপর। এর অর্থ হল ব্যক্তি যদি সমাজের সঙ্গে তাল মেলানোর জন্য বা সমাজে সম্মানিত হওয়ার জন্য এমন কোন কাজ করে ইসলামের দৃষ্টিতে যা সম্মানজনক নয় তাহলে আখিরাতে তার জন্য কিছুই থাকবে না। আবার বাহ্যত অসম্মানজনক বা নিপীড়নমূলক প্রমাণ হলেও আখিরাতে হয়তো কাজটি অত্যন্ত সম্মানের হতে পারে। এ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে দুনিয়ায় লাভ-লোকসানের বিবেচনা ছাড়া একজন মানুষ আখিরাতে সফল হওয়ার জন্য ভেতরে-বাহিরে সৎ জীবন-যাপন করার চেষ্টা করে। কাউকে দেখানোর কারো মনোঃতুষ্টির আকাক্সক্ষা সে একেবারেই পোষণ করে না। সে দুনিয়াকে ততটুকুই গুরুত্ব প্রদান করে যতটুকু গুরুত্ব প্রদানের নির্দেশ আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন। যেমন তিনি বলেছেন : তোমরা কি আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? অথচ আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অত্যন্ত কম। অন্যত্র তিনি বলেন, আখিরাত তো নিশ্চয় শ্রেষ্ঠতম পর্যায় এবং মর্যাদায় মহত্তম। দুনিয়া ও আখিরাতের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার্থে আল্লাহ তাআলা বলেন, আল্লাহ তোমাকে যা দিয়েছেন তা দিয়ে আখিরাতের আবাস অনুসন্ধান কর, তবে তোমার দুনিয়ার অংশ ভুলে যেয়ো না।
আখিরাতের বিশ্বাস মানুষকে কেবল সৎকাজ করতেই উদ্বুদ্ধ করে না; বরং কাজটি একান্তভাবে আল্লাহ তাআলার জন্য করতে উদ্বুদ্ধ করে। কারণ আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে সৎকাজ করা হলে তা পুরস্কারযোগ্য হয় না। তাও শাস্তিযোগ্য আমলে পরিণত হয়। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন : কিয়ামাতের দিন মানুষের মধ্যে প্রথম যার বিচার হবে সে হবে একজন শহীদ। তাকে আল্লাহর দরবারে নিয়ে আসা হবে। আল্লাহ তাকে তাঁর নিআমতসমূহের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন। সেও তা সম্মরণ করবে। আল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করবেন, তুমি দুনিয়াতে এর বিনিময়ে কী কাজ করেছো?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন