স্টাফ রিপোর্টার : লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার পেছনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘জড়িত’ বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে দাবি করেছেন সেটি ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও অসত্য বলে অভিহিত করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিএনপির পক্ষ থেকে ওবায়দুল কাদেরের এহেন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, তারেক রহমানকে নাজেহাল করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতারা ক্রুব্ধ উন্মোত্ততায় বেসামাল হয়ে কথা-বার্তা বলছেন। এরই প্রতিফলন আমরা প্রতিদিন দেখছি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য বিবৃতিতে। গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দাবি ‘ভিত্তিহীন-বানোয়াট’। শান্তি, সহমর্মিতা, সহাবস্থান বিএনপির অনুসঙ্গ। শহীদ জিয়া, বেগম খালেদা জিয়ার মতো তারেক রহমানও কখনোই নির্দেশ দেননি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে দলের নেতা-কর্মীদের উস্কানিমূলক অমানবিক নিষ্ঠুর আচরণ করতে, কখনো তারা নেতা-কর্মীদের সহিংসতার পথে ঠেলে দেননি। গণতান্ত্রিক আদর্শে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল বিএনপির ঐতিহ্যে গণতন্ত্র বিনাশী বাকশালের মতো একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসনের কোনো নজির নেই। বরং ভিন্ন মতের নানা দলের বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা পুন:প্রবর্তন করেছিলেন এদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তার সহধর্মীনি বেগম খালেদা জিয়া বারবার স্বৈরাচারের খাঁচা থেকে মুক্ত করেছিলেন গণতন্ত্রকে। সেই সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় জাতীয় রাজনীতিতে এগিয়ে এসেছেন তাদের সুযোগ্য সন্তান তারেক রহমান। তারা আমাদেরকে শিখিয়েছেন গণতন্ত্রের আওতার মধ্যে রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও আন্দোলন করতে। শান্তি, সহমর্মিতা, সহাবস্থান বিএনপির অনুষঙ্গ। শহীদ জিয়া এবং বেগম জিয়ার মতো তারেক রহমানও কখনোই নির্দেশ দেননি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে দলের নেতাকর্মীদেরকে উস্কানি দিয়ে অমানবিক নিষ্ঠুর আচরণ করতে। রাজনৈতিক বিরোধীদের প্রতি সহিষ্ণু আচরণ করা বিএনপির শিক্ষা।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবের উদ্দেশ্য বলতে চাই, বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হুমকির দৃষ্টান্ত কেবলই আওয়ামী নেতাদের। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে খুন, জখম আর ব্যাপক নির্যাতন নেমে আসে বিরোধী দলের ওপর। আপনি নিশ্চয় ভুলে যাননি একটা লাশের বদলে প্রতিপক্ষের দশটা লাশ ফেলে দেয়ার হুমকি কে দিয়েছিলেন? আপনি কী টাঙ্গাইলের এমপি লতিফ সিদ্দিকীর সেই হুমকির কথা বেমালুম ভুলে গেছেন যিনি হুমকি দিয়ে বলেছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হত্যা করতে। আরেক এমপি কাজী জাফরুল্লাহ ভয়ঙ্কর হুমকি দিয়ে বলেছিলেন ‘অস্ত্র দিয়ে মানুষের হাত কাটার’। গাইবান্ধার সাবেক এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন এক নিষ্পাপ কিশোরের পায়ে গুলি চালানোর নিষ্ঠুরতা ও নারায়ণগঞ্জের স্বনামধন্য এমপি শামীম ওসমানের হুমকির বচনটির কথা কী ভুলে গেছেন? আসলে হুমকি, হুঙ্কার, অশ্রাব্য-কুশ্রাব্য গালিগালাজ এগুলো আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি ও তাদের অঙ্গের ভূষণ। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসের উপাসনাকারী দল।
রিজভী জানান, গত ৩০ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৫’শ ৫০ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গতকালই শুধু সারা দেশে ৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন