স্টাফ রিপোর্টার : দেশের কারাগারগুলোতে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ১৫ হাজার ৯১৯ জন কয়েদি রয়েছে। দেশে গত চার বছরে ১৭ হাজারের বেশি নারী ও শিশু ধর্ষণ মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। এসব কয়েদিদের মধ্যে পুরুষ কয়েদি ১৫ হাজার ৩৭৪ জন ও ৫৪৫ জন মহিলা কয়েদি রয়েছে বলে জানান তিনি। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি বলেন, দেশে গত চার বছরে ১৭ হাজারের বেশি নারী ও শিশু ধর্ষণ মামলা হয়েছে। নারী ও শিশু ধর্ষণ সংক্রান্ত ১৭ হাজার ২৮৯টি মামলা রুজু হয়েছে। এসব মামলায় ভিকটিমের সংখ্যা ১৭ হাজার ৩৮৯ জন। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৮৬১ জন নারী ও তিন হাজার ৫২৮জন শিশু। এই চার বছরে তিন হাজার ৪৩০টি ধর্ষণ মামলার বিচার শেষ হওয়ার তথ্য দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিষ্পত্তি হওয়া মামলাগুলোতে ১৭ জনকে মৃত্যুদন্ড, ৮০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ৫৭৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাসহ মোট ৬৭৩ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে অদ্যাবধি ১৩টি কারাগার নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ করে চালু করা হয়েছে। কারাগারগুলো হলো-বি-বাড়িয়া, গোপালগঞ্জ, ঝিনাইদহ, চাঁদপুর, নীলফামারী, মেহেরপুর, নাটোর, চট্টগ্রাম, হাইসিকিউরিটি (কাশিমপুর), নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, দিনাজপুর ও কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার।
তিনি জানান, বর্তমানে ৮টি কারাগার নির্মাণ কাজ চলছে। এগলো হলো- খুলনা, ফেনী, মাদারীপুর, পিরোজপুর, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সিলেট ও কেরানীগঞ্জ মহিলা কারাগার। এ ছাড়া চলতি অর্থ বছরে নতুনভাবে ৬টি কারাগার নির্মাণ/পুনঃনির্মানের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কারাগারগুলো হলো- নরসিংদী, ঠাকুরগাঁও, কুমিল্লা, ফরিদপুর, নোয়াখালী ও জামালপুর। আগামী অর্থ-বছরে যশোর, রংপুর, রাজশাহী ও পাবনা কারাগার পুনঃনির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। সরকারি দলের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ছিনতাই প্রতিরোধ ও জনসাধারণের নিরব”িছন্ন চলাচল নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ছিনতাই সংক্রান্ত অপরাধসমূহের মামলা রুজু করে আসামীদের গ্রেফতার এবং আইনের আওতায় আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান, বাসস্ট্যান্ড ও যাত্রীসাধারণের চলাচলের স্থানে পুলিশী টহল ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রাস্তায় পুলিশী চেকিংয়ের ব্যবস্থা করাসহ মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে। মেট্রোপলিটন এলাকায় ছিনতাই প্রতিরোধে প্রতিটি বিটে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে পুলিশের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশ, বীট পুলিশিং, উঠান বৈঠক ও নাগরিক কমিটির সমন্বয়ে জনসচেতনামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, ফাঁদ পাতা পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে। ছিনতাইয়ের সম্ভাব্য সময় সন্ধ্যা ও ভোররাতে পুলিশ সদস্যগণকে সিভিল পোশাকে সতর্কতার সাথে মূল্যবান দ্রব্য সামগ্রী (ল্যাপটপ, ক্যামেরা, দামি মোবাইল ফোন) দিয়ে রিকশায় ঘোরাঘুরি করে ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ছিনতাইসহ যে কোন ধরনের অপরাধ প্রতিহত করে জনসাধারণের নিরবচ্ছিন্ন যাতায়াত নিশ্চিত করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন