স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপিকে দুর্নীতিবাজ বলার আগে আওয়ামী লীগকে আয়নায় নিজেদের মুখ দেখার আহবান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মেগা প্রকল্প থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে।
তাই অন্যের বিরুদ্ধে কথা বলার আগে আয়নায় তো নিজের মুখ দেখতে হবে। বলার আগে মানুষ কী বলে আপনাদের সম্পর্কে সেটা জানতে হবে তো। এই যে মেগা প্রজেক্ট, এসব মেগা প্রজেক্টগুলোতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। আর দেশের মানুষ খুব ভালো করে জানে যে, কারা দুর্নীতি করছে, কারা দুর্নীতি করছে না। গতকাল (বৃহস্পতিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মুক্তির দাবিতে জাতীয় গণতান্ত্রিক অধিকার মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন,“প্রধানমন্ত্রী সংসদে আপত্তিকর কিছু কথা বলেছেন। একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দল যারা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পাঁচবার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে জনগণের ভোটে। যারা জনগণের সঙ্গে সব সময় থেকেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে, সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছে-এই দলটিকে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন যে, দুর্নীতি পরায়ন দল। তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “অনেক দিন আগে অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক এ বি এম মূসা সাহেব বলেছিলেন যে, আওয়ামী লীগ দেখলেই বলবা ‘চোর’। “বদরুদ্দীন উমর সাহেব কয়েক দিন আগে কলকাতায় একেবারে নাম ধরে বলেছেন, চোর। আপনারা জানেন কি না জানি না, কলকাতা এয়ারপোর্টে সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেছে, নাম ধরে বলেছেন যে ‘চোর’।” যে মামলায় দÐিত হয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন, সেই জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা দায়ের হয়েছিল সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত¡বাবধায়ক সরকার আমলে। সে সময় বিএনপি প্রধানের চেয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘বেশি’ মামলা হলেও সেগুলো পরে প্রত্যাহার করার কথা উল্লেখ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে চারটা মামলা ছিল, আর প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ১৫টা। এই ৪টা মামলা রেখে দিয়েছেন আর ১৫টা মামলা তুলে নিয়েছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওই সময় আওয়ামী লীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে সাড়ে সাত হাজার মামলা থাকলেও ক্ষমতায় আসার পর সেগুলো তুলে নেওয়া হয়। আর আমাদের বিরুদ্ধে সেই মামলা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এখন ৭৮ হাজারে। আমাদের আসামি সংখ্যা এক মাস আগে পর্যন্ত হিসাব নিয়েছি ১৮ লাখের উপরে। গোটা কারাগারগুলো ভরে গেছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভিড়ে। কেন করছেন এটা? একটি মাত্র কারণ, তারা যদি বাইরে থাকে, মাঠে থাকে, জনগণের সঙ্গে থাকে তাহলে আগামী নির্বাচনে আপনাদের (আওয়ামী লীগ) কোনো আশা নেই। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে যেনতেনভাবে জোর করে ক্ষমতা দখলের জন্য বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সংগঠনের সভানেত্রী নিপুন রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন