সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : খুনাখুনীর জেলা নরসিংদীতে এবার গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছে মাহমুুদুল হাসান সৈকত (৩৩) নামে এক যুবলীগ নেতা ও ঝুট ব্যবসায়ী। গতকাল মঙ্গলবার সকালে শিবপুর থানার পুলিশ শিবপুর-মনোহরদী আঞ্চলিক মহাসড়কের দক্ষিণ পুরানদিয়া এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে। নিহত মাহমুদুল হাসান সৈকত নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং দক্ষিণ শীলমান্দী গ্রামের রুস্তম আলীর পুত্র।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুরে মাহমুদুল হাসান সৈকত একটি মোটর সাইকেল নিয়ে তার নিজ বাড়ী থেকে বেরিয়ে যায়। সোমবার রাতে সে আর বাড়ী ফিরেনি। সন্ধ্যার পর তার মোবাইল ফোন বন্ধ পায় তার পরিবারের লোকজন। এ অবস্থায় সৈকতের পরিবারের সদস্যরা তাকে বহু জায়গায় খোঁজাখুজি করে কোথাও পায়নি। সকাল ১১ টার দিকে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয় যে, পুরানদিয়া এলাকায় হাত-পা বাধা একজন যুবকের লাশ পড়ে রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। পরে লাশের সুরতহাল করার সময় তার পকেটে ভোটার আইডি কার্ড খুঁজে পায়। পুলিশ আইডি কার্ডের ঠিকানা অনুযায়ী আত্মীয়-স্বজনকে খবর দিলে সৈকতের আত্মীয়-স্বজন ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ শনাক্ত করে। এই খরব ছড়িয়ে পড়ার পর শিবপুর তথা নরসিংদীর রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। খবর পেয়ে নরসিংদী জেলা যুবলীগের সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান শামীম নেওয়াজ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পরে সেখান থেকে সৈকতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সহকর্মীকে দেখার জন্য যুবলীগের শত শত নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ভীড় জমায়। নিহত সৈকতের বড় ভাই মো: মোরশেদ মিয়া সাংবাদিকদের জানান, সৈকত ঢাকা ও নরসিংদীর বিভিন্ন কারখানায় ঝুট ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তিনি জানাতে পারেননি। শিবপুর থানার এসআই মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ধারণা করা হচ্ছে সোমবার রাত বা মঙ্গলবার ভোরে যে কোন সময় তাকে হত্যা করে আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ফেলে দিয়ে গেছে গুপ্তঘাতকরা। সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী লাশ ২ হাত পিছন দিক থেকে বাধা ছিল। এছাড়া তার কোমরের নীচে দুই পায়ের উরুতে অনেক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হাঁটুর নীচে ২ ইঞ্চি পরিমাণ ক্ষতের চিহ্ন ছিল। শিবপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, কে বা কারা সৈকতকে হত্যা করেছে তার কোন ক্লু তিনি পাননি। তবে মামলা দায়েরের পর তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীদেরকে খুঁঁজে বের করা হবে। এদিকে যুবলীগ নেতা সৈকত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি লে. কর্ণেল (অব:) নজরুল ইসলাম হিরু এমপি, শিবপুরের এমপি ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, নরসিংদী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভূঁইয়া। হত্যাকারী গুপ্তঘাতকদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন, নরসিংদী জেলা যুবলীগের সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান শামীম নেওয়াজ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন