শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কর্পোরেট

দরপতনের পর ঊর্ধ্বমুখিতায় জ্বালানি তেলে

প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কর্পোরেট রিপোর্ট : টানা পাঁচদিনের দরপতন শেষে গত বুধবার থেকে আবারো ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যটির মজুদ বাড়লেও তা ছিল সংশ্লিষ্টদের ধারণার চেয়ে কম। দেশটিতে বাড়তি মজুদের কারণে বাজারে নিম্নমুখী চাপ সৃষ্টি হলেও তা অকার্যকর হয়ে পড়ে পণ্যটির উত্তোলন কমে আসায়। এদিনের দরবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে ডলারের বিনিময় হার হ্রাস। খবর মার্কেট ওয়াচ। নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) মে মাসে সরবরাহের চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দাম বেড়েছে ব্যারেলে ৪ সেন্ট। আগের দিনের চেয়ে দশমিক ১ শতাংশ কমে এদিন পণ্যটির বাজার স্থির হয় প্রতি ব্যারেল ৩৮ ডলার ৩২ সেন্টে। এর আগে মঙ্গলবার পণ্যটির মূল্য নেমে এসেছিল দুই সপ্তাহে সর্বনিম্নে। বুধবারের আগে টানা পাঁচদিনের নিম্নমুখিতায় পণ্যটির মোট দরপতনের হার দাঁড়িয়েছে ৮ শতাংশে। অন্যদিকে লন্ডনের ইন্টার কন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্ট তেলের দাম বেড়েছে ব্যারেলে ১২ সেন্ট। আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে বুধবার দিন শেষে পণ্যটির বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ৩৯ ডলার ২৬ সেন্টে।
বুধবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ইআইএ) প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৫ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশটিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ বেড়েছে ২৩ লাখ ব্যারেল। এর মাধ্যমে দেশটিতে পণ্যটির মোট মজুদ দাঁড়িয়েছে ৫৩ কোটি ৪৮ লাখ ব্যারেলে। টানা সাত সপ্তাহ ধরে দেশটিতে পণ্যটির মজুদ রয়েছে বাড়তির দিকে। তবে এর আগে মঙ্গলবার প্রকাশিত আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের (এপিআই) প্রতিবেদনে এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের মজুদ ২৬ লাখ ব্যারেল বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছিল। প্লাটসের এক বিশেষজ্ঞ জরিপে এ মজুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল ২০ লাখ ব্যারেল। এছাড়া ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক জরিপ প্রতিবেদনে পণ্যটির মজুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা বলা হয় ৩৫ লাখ ব্যারেল। ইআইএর প্রতিবেদনে পণ্যটির মজুদ অধিকাংশ পূর্বাভাসের তুলনায় কম বৃদ্ধির কথা জানানোর পর বুধবার নিমেক্সে দিনব্যাপী লেনদেনের একপর্যায়ে ডবিøউটিআইয়ের দর উঠে যায় ৩৯ ডলার ৭৯ ব্যারেল পর্যন্ত। নিউইয়র্কভিত্তিক টাইকে ক্যাপিটাল অ্যাডভাইজর্সের বিশ্লেষক জন ম্যাকালুসোর ভাষ্য অনুযায়ী, প্রত্যাশার চেয়ে কম বাড়লেও শেষ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মজুদ বৃদ্ধিই পেয়েছে, কমেনি। সামনের দিনগুলোয়ও এ পরিস্থিতি বজায় থাকতে পারে এবং বাজারের প্রভাবক উপাদানগুলোও এখনো নেতিবাচকই রয়েছে। ইআইএর প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, ২৫ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দৈনিক গড় উত্তোলন হ্রাস পেয়েছে ১৬ হাজার ব্যারেল। ফলে সপ্তাহান্তে দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির দৈনিক গড় উত্তোলন দাঁড়িয়েছে ৯০ লাখ ২২ হাজার ব্যারেলে। গত বছরের এপ্রিলে তা দাঁড়িয়েছিল দৈনিক ৯৭ লাখ ব্যারেলে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। দ্য সেভেনস রিপোর্টের সহসম্পাদক টাইলার রিচি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে সর্বশেষ ১০ সপ্তাহের মধ্যে নয়টিতেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন হ্রাস পেয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এর কারণে মূল্য বৃদ্ধির কথা থাকলেও ফেব্রæয়ারির তুলনায় মার্চে পণ্যটির উত্তোলন হ্রাসের গতি অনেকটাই শ্লথ হয়ে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে বাজার-সংশ্লিষ্টরাও খুব একটা সন্তুষ্ট নন। তবে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারের জন্য বড় সুখবর হলো যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসোলিন ও পরিশোধিত তেলের মজুদ হ্রাস। ইআইএর প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশটিতে আগের সপ্তাহে গ্যাসোলিনের মজুদ কমেছে ২৫ লাখ ব্যারেল। অন্যদিকে হিটিং অয়েলসহ পরিশোধিত তেলের মজুদ কমেছে ১১ লাখ ব্যারেল, যা সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। ফলে সামনের দিনগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের পরিশোধনাগারগুলোয় পণ্যটির ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। উল্লেখ্য, বৈশ্বিক জ্বালানি তেল ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সর্বোচ্চে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার ঊর্ধ্বমুখিতায় পার করেছে যুক্তরাষ্ট্রে উত্তোলন হ্রাস ও চলতি মাসের ১৭ তারিখে দোহায় অনুষ্ঠেয় উত্তোলক দেশগুলোর উত্তোলন হ্রাস বা সীমা আরোপের বিষয়ে সিদ্ধান্তের সম্ভাবনায়। কিন্তু এখনো বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের মজুদ রয়েছে রেকর্ড সর্বোচ্চের কাছাকাছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন