ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির কাছে একটি মসজিদ উদ্বোধন করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ মসজিদ। উদ্বোধনের সময় তিনি ‘যারা আমাদের ধর্মকে অবমাননা করছে’ তাদের সমালোচনা করেন। বাড়তে থাকা ‘ইসলামবিদ্বেষ’কে কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কাক্সিক্ষত ফল লাভের চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
এরদোগান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা মুসলিমদের টার্গেট করছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের ওপর হামলা বাড়ছে। ‘তুরস্কে আমরা ৩৫ বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ছি। কাজেই, দয়া করে আপনারা শুধু প্যারিস আর ব্রাসেলসে সন্ত্রাসবাদ পালন করবেন না, তুরস্ক ও পাকিস্তানেও করুন,’ তুর্কি আমেরিকানদের এক বিশাল সমাবেশে বলছিলেন স্পষ্টভাষী এ তুর্কি নেতা। মুসলিম বিশ্বের ইস্যুতে সোচ্চার এরদোগান বলেন, ‘প্যারিস ও ব্রাসেলসে হামলার সাথে তুরস্ক ও পাকিস্তানে হামলার পার্থক্য কোথায়?’
তুরস্কের অর্থায়নে নির্মিত দিনায়েত সেন্টার অব আমেরিকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই এরদোগান এসব কথা বলেন। ওয়াশিংটন ডিসির উপকণ্ঠে ম্যারিল্যান্ডে মসজিদ কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে একটি মসজিদ, একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, একটি প্রদর্শনী কেন্দ্রসহ নানা সুবিধা রয়েছে। তুর্কি সরকারের আর্থিক সহায়তায় কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১১ কোটি ডলার বা প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। শনিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তুরস্কের পতাকা নিয়ে সমবেত হন বিপুল সংখ্যক মানুষ। তারা স্লোগান দেন, ‘প্রেসিডেন্ট আমরা আপনার জন্য গর্বিত।’
পরমাণু শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ওয়াশিংটন সফরে আসেন এরদোগান। এ সময় তিনি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে বৈঠক করেন। এরদোগান বলেন, এই সেন্টারটি বিশ্বব্যাপী ইসলামের সত্যিকার বাণী প্রচারের একটি প্ল্যাটফর্মে পরিণত হবে এবং মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে ‘সভ্যতার সংঘাত’ মোকাবিলায় কাজ করবে। ‘যারা আমাদের ধর্মকে অবমাননা করছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে,’ বলেন ধর্মপরায়ণ এরদোগান। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে তুরস্ক সম্ভাব্য সবকিছু করে যাচ্ছে।
তিনি কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি, ইসলামিক স্টেট, আল-কায়েদা এবং আল-শাবাবকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে মন্তব্য করেন এবং বলেন, এরা মুসলিমবিরোধী সুর চড়াতে সাহায্য করছে। এরদোগান বলেন, আমাকে যা অবাক করে তা হলো কিছু সংগঠন ধর্মের লেবাস পরে বৈধতার ভান করলেও বেআইনি কার্যক্রমে জড়িত। তিনি বলেন, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও কুসংস্কার থেকে বাঁচতে লোকজনকে নিজের এবং অপরের ধর্ম সম্পর্কে জানতে হবে। তিনি আশা করেন, ইসলাম সম্পর্কে জানতে আমেরিকানরা এই দিয়ানেত সেন্টারকে ব্যবহার করবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন