শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশী হামলায় বিএনপির নিন্দা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১:৫৮ পিএম | আপডেট : ২:০৬ পিএম, ৯ এপ্রিল, ২০১৮

শাহবাগে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি। আজ সোমবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ গতকাল তাণ্ডব চালিয়েছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগ সশস্ত্র হামলা করেছে।
তিনি বলেন, সরকারী চাকুরীতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকুরী প্রার্থীরা বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। যেকোনো ব্যক্তি বা সংগঠন তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ে নিজেদের বঞ্চিত মনে করলে তা থেকে প্রতিকার পাওয়ার জন্য সোচ্চার হবেন-এটাই গণতান্ত্রিক অধিকার।
বেশ কিছুদিন ধরে চলমান কোটা সংস্কারের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গতকাল প্রতিবাদে-বিক্ষোভে মুখরিত হয়ে ওঠে। অংশগ্রহণকারী হাজার হাজার আন্দোলনকারীদের দমাতে গতকাল রাতে পুলিশ সহিংস হয়ে ওঠে এবং তাদের ওপর বেপরোয়া লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পুলিশী এই হামলায় অসংখ্য ছাত্রছাত্রী ও চাকুরী প্রার্থীরাসহ শতাধিক মানুষ গুরুতর আহত হয়। পুলিশের এই হামলার সাথে ছাত্রলীগের সশস্ত্র ক্যাডার’রা যোগ দিয়ে রাতে শাহবাগ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পর্যন্ত রণক্ষেত্রে পরিণত করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আন্দোলনে যে কোটার বিষয়টি মূল প্রতিপাদ্য সে সম্বন্ধে এদেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষিত যুবসমাজের জীবন-জীবিকার প্রশ্নটি জড়িত। এ সম্বন্ধে বিএনপি’র নীতি নির্ধারণী কমিটি সম্পূর্ণ অবহিত এবং বিষয়টি নিয়ে তাঁরা উৎকণ্ঠিত। ফলশ্রুতিতে ইতোপূর্বে বিএনপি’র ভিশন-২০৩০-এ আমরা কোটার বিষয়টি স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছি। আমরা জানি, এদেশকে সত্যিকারভাবে গড়ে তুলতে হলে মেধার কোন বিকল্প নেই। এই লক্ষ্যে স্থির থেকেও আমরা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো যৌক্তিকভাবে বিবেচনায় এনে ভিশন ২০৩০-তে বলেছি যে, ‘মেধার মূল্যায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যথাযথ সংস্কার করা হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নারী ও প্রান্তিক জাতি-গোষ্ঠীর কোটা ব্যতিরেকে বাকি কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হবে।’
গণতন্ত্রের নিয়ম-পদ্ধতির প্রতি এই সরকারের কোন শ্রদ্ধাবোধ নেই, যা গত প্রায় এক দশকে বর্তমান সরকার বারবার তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রমান করেছে। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমান শাসকদের দেশ পরিচালনায় অন্যায়-অবিচারের শিকার হয়েছে দেশের জনগণ, বিশেষ করে এদেশের মেধাবী ও শিক্ষিত তরুণ সমাজ। এই অবিচারের অবসান ঘটাতে বিএনপি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার সমবেত মানুষের আওয়াজ শুনলেই শিহরিত হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে জনগণের চাহিদা ও দাবিকে তারা সবসময় পাশ কাটিয়ে কেবলমাত্র আওয়ামী চেতনার মানুষদের সংকীর্ণ স্বার্থে কাজ করে গেছে।
গতকাল চাকুরী প্রার্থী ও ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবী আদায়ের আন্দোলনে বিনা উস্কানিতে পুলিশের বর্বরোচিত আক্রমণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, যারা গুরুতর আহত হয়েছেন তাদের আশু সুস্থতা কামনা করছি এবং আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে অবিলম্বে তাদের নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবী জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী,
সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, শিক্ষা সম্পাদক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন