শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারত-পাকিস্তানের সেতুবন্ধন হতে পারে সিপিইসি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর (সিপিইসি) নিয়ে বেইজিংয়ের বিতর্কিত কৌশলগত উদ্দেশ্যের ব্যাপারে মূল্যায়নের জন্য সবচেয়ে যারা বেশি যোগ্য, তারা হলো পাকিস্তানের জনগণ।
পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসি চলতি সপ্তাহের শুরুতে জানিয়েছেন যে, সিপিইসি অবকাঠামো প্রকল্পগুলো থেকে পাকিস্তান এরই মধ্যে লভ্যাংশ পেতে শুরু করেছে। হিন্দুস্তান টাইমসের তথ্য মতে, আব্বাসি বলেছেন, “আমাদের জাতীয় গ্রিডে ১০,০০০ মেগাওয়াট যুক্ত হয়েছে। আমাদের যে ধারাবাহিক বিদ্যুৎ ঘাটতি ছিল, সেটার উন্নতি হচ্ছে।” কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্বের কারণে সিপিইসির উপর নজর রেখেছে নয়াদিল্লী। সিপিইসি প্রকল্পটির একটি অংশ আজাদ কাশ্মীরের উপর দিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই অঞ্চলটিকে ভারত তাদের সার্বভৌম সীমানার অংশ হিসেবে দাবি করে। কিছু ভারতীয় পর্যবেক্ষক মনে করেন, ভারতের উত্থানকে ঠেকানোর জন্যই এই প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে চীন। কিš’ তথ্য বলছে, অতিরিক্ত ধারণার মধ্যে আছেন তারা। ২০১৩ সালের মে মাসে পাকিস্তান সফরের সময় সিপিইসির প্রস্তাব দিয়েছিলেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং। এরপরও আজ পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে কোন সামরিক ঘাঁটি গড়েনি চীন, যদিও দুই দেশের মধ্যে ‘লৌহ ভ্রাতৃত্বের’ সম্পর্ক রয়েছে।
অর্থনৈতিক সহযোগিতাই সিপিইসির একমাত্র উদ্দেশ্য। পাকিস্তানের অবকাঠামোর আধুনিকায়ন ও তাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্যই এটা শুরু করা হয়েছে। প্রকল্পটি খুব দ্রæত সুফল দিচ্ছে, কারণ পুরো দেশের জন্যই অর্থনৈতিক সুফল নিয়ে আসছে এটা।
সিপিইসির অর্থনৈতিক অর্জনের দিকটি নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিবেচনা করা উচিত ভারতের। এটা প্রমাণ করে যে ভারতের শত্রু হিসেবে এটা তৈরি করা হয়নি। চীনের বিঅ্যান্ডআর ইনিশিয়েটিভ এখন বৈশ্বিক মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। আর এটার সাফল্যের কারণে এই প্রভাবকে অস্বীকার করা নয়াদিল্লীর জন্য খুবই কঠিন হবে। বিঅ্যান্ডআর প্রকল্প নিয়ে ভারতের গুরুত্ব সহকারে ভাবা উচিত এবং তাদের পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গী পরিত্যাগ করা উচিত। সিপিইসি তার জন্য একটা উদাহরণ হিসেবে কাজ করতে পারে।
সিপিইসি’র অধীনে গোয়াদার বন্দরের উন্নয়ন হচ্ছে। পাকিস্তানের যে শহরে এই বন্দরটি গড়ে উঠেছে, সেই গোয়াদার ছোট্ট জেলে গ্রাম থেকে এখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এশিয়া ও ইউরোপের সাথে এই বন্দরের সংযোগ তৈরি হচ্ছে। যে নতুন রুট চালু হচ্ছে, সেটা শুধু চীন এবং পাকিস্তানেরই উপকারে আসবে না, বরং ভারতসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর জন্যও সেটা ইতিবাচক সুযোগ নিয়ে আসবে। আঞ্চলিক সংযোগ এবং উন্নত অবকাঠামোর জন্য যে সিপিইসি ফ্রেমওয়ার্ক গড়ে উঠছে, তা এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক সমন্বয় দাবি করে। বিশেষজ্ঞরা অর্থনৈতিক সংযোগ আরও বাড়ানোর জন্য আহŸান জানিয়ে আসছেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান বিরোধ সত্বেও, পাকিস্তানের কিছু পর্যবেক্ষক পরামর্শ দিয়েছেন যে, পাকিস্তান ভারতকে সিপিইসিতে যোগ দেয়ার আহŸান জানাতে পারে।
সিপিইসিকে কৌশলগত অস্ত্র হিসেবে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার কোন ইচ্ছা নেই চীনের। বরং বাস্তবতা ঠিক এর উল্টা। সিপিইসি ভারত ও পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে যেটা হয়তো দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়ার জায়গাটাকে আরও সহজ করে দেবে। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মামুন ১৪ এপ্রিল, ২০১৮, ৪:০৪ এএম says : 0
ভারত-পাকিস্তানের সেতুবন্ধন খুবই দরকার
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন