দশককালের মধ্যে প্রথমবার বৈশ্বিক ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি নিম্নমুখী না হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা প্রাণঘাতী এ রোগের পুনরুত্থানের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে সামনের দিনে এ রোগ বিশ্বজুড়ে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চলা কমনওয়েলথ সম্মেলনে ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সদস্য দেশগুলোকে আরও অর্থ বরাদ্দে অনুরোধ করা হয়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। ২০১৬ সালে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে ছিলেন; ওই বছর ৯১টি দেশে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের ঘটনা ছিল ২১ কোটি ৬০ লাখ, আগের বছরের তুলনায় যা ৫০ লাখ বেশি। সামপ্রতিক বছরগুলোতে আমেরিকা মহাদেশের একাংশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের হার হয় স্থিতিশীল, নয় উর্ধ্বগামী। মশা ও পরজীবীরা ম্যালেরিয়া রোধে ব্যবহৃত কীটনাশক ও ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলায় বিপদ বেড়েছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। অধিক বিনিয়োগ ও রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে এ সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে যেতে পারে বলেও শঙ্কা তাদের। “ম্যালেরিয়া অভিযান ক্রসরোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। এই রোগে সম্ভবত এত মানুষ মারা গেছে, যা ইতিহাসে আর কখনও হয় নি। ম্যালেরিয়া এমন কিছু নয়, যা স্থির (অবস্থানে) থাকবে,” বলেন ম্যালেরিয়া নো মোর ইউকের জেমস হুইটিং। প্রাণঘাতী এ রোগটির বিরুদ্ধে অভিযান শেষ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে-ও। “এখনো কোটি কোটি মানুষ এর ঝুঁকিতে আছে। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রতি দুই মিনিটে একটি করে শিশুর প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে,” বলেন তিনি। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি অর্ধেকে কমিয়ে এনে অন্তত সাড়ে ছয় লাখ মানুষের জীবন বাঁচাতে মে কমনওয়েলথ সম্মেলনে নতুন প্রস্তাবও দিয়েছেন। বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন