চবি সংবাদদাতা : অস্ত্রে শান দেওয়া সেই ছাত্রলীগ কর্মী মোফাজ্জল হায়দার ওরফে টাইগার মোফা এবার পরীক্ষার হলে তালা ঝুলিয়েছে। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালে প্রকাশ্যে অস্ত্রে শান দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারাদেশের কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পেরে এ কা- ঘটায় সে। এর ফলে গতকাল (সোমবারের) পূর্বনির্ধারিত চারুকলা ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের ২০১ নম্বর পরীক্ষাটি স্থগিত করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গতকাল থেকে চারুকলা ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। টাইগার মোফা ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পরীক্ষাকে সামনে রেখে রোববার টাইগার মোফা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপুসহ অন্যদের নিয়ে ভিসির কাছে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার আবেদন জানান। কিন্তু বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামের সঙ্গে জড়িত থাকায় কর্তৃপক্ষ তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নি।
ক্ষুদ্ধ হয়ে সকাল নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে একদল কর্মী নিয়ে এসে নগরীর বাদশাহ মিয়া সড়কে চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরীক্ষার হলে (২০৩ ও ৩০৬ নম্বর কক্ষ) তালা ঝুলিয়ে দেয় মোফাজ্জল হায়দার। মোফাজ্জল হায়দার সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী বলে পরিচিত আলমগীর টিপু পক্ষের হয়ে ক্যাম্পাসে রাজনীতি করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত বছরের ২ নভেম্বর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ জালাল হলের তৃতীয় তলার বারান্দায় আরেকজনের সঙ্গে রামদায় শান দিতে দেখা গিয়েছিল চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মোফাজ্জল হায়দার ওরফে টাইগার মোফাকে। সেই ছবি এসেছিল গণমাধ্যমে। সে সময় এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। এর জের ধরে ৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন-এর সুপারিশে ভিসি অধ্যাপক ড ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী তার নির্বাহী ক্ষমতা বলে টাইগার মোফাসহ দুইজনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেন। সেই বহিষ্কারাদেশ এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ও সহকারী প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী বলেন, ‘সকাল নয়টার দিকে একদল শিক্ষার্থী এসে পরীক্ষার হলে তালা ঝুলিয়ে দেয়। উদ্ভূত পরিস্থিতে আমরা শিক্ষকরা বসে আজকের ২০১ নম্বর কোর্সের (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা স্থগিত করেছি। কারণ এটি না হলে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারতো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানহানির সঙ্গে জড়িত থাকায় মোফাজ্জল হায়দারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি। এদিকে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এ বহিষ্কারাদেশ মানে না। কারণ কোনো ধরণের তদন্ত না করেই একটি ছবি দেখে কাউকে বহিষ্কার করা যায় না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন