শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বেগম জিয়া চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে : বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

দলের চেয়ারপারসন কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সমস্যা আরো বেড়ছে এবং কারাগারে তাকে অবর্ণনীয় কষ্টে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। বর্তমানে তিনি চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাঁকে অবিলম্বে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়ার দাবি দলটির। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, প্রতহিংসায় কান্ডজ্ঞানহীন সরকার দেশনেত্রীকে নির্যাতন করাটাই ছিল যেন মূল টার্গেট। বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমরা বারবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সরকার ও কারাকর্তৃপক্ষ কোনো কর্ণপাত করছে না। শারীরিকভাবে অসুস্থ দেশনেত্রীর সাথে দেখা করার জন্য বৃহস্পতিবার দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পত্র নিয়ে কারাফটকে গেলেও সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হয়নি।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার হাঁটু ও পায়ের ব্যথা আরো বেড়েছে। পুরাতন ভবনের স্যাঁতস্যাঁতে কক্ষে তাকে অন্তহীন নানাবিধ সমস্যার দ্বারা আক্রান্ত হতে হচ্ছে। সেখানে একদিকে মশার তীব্র উপদ্রব, অন্যদিকে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে তাকে এক অবর্ণনীয় কষ্টে রাখা হয়েছে। প্রতিহিংসায় কান্ডজ্ঞানহীন সরকার দেশনেত্রীকে নির্যাতন করাটাই ছিল যেন মুল টার্গেট। সেজন্যই আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সাজা দিয়ে তাকে বন্দী করে রেখেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি আগেও দেশনেত্রীর জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে। বর্তমানে তিনি চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। ‘হায়াত-মউত আল্লাহ’র হাতে, এখানে কারো হাত নেই’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য আরো ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত বহন করে। তার বক্তব্যে আমরা দেশনেত্রীর জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আরো বেশি উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করছি। তার বক্তব্যে প্রমাণিত হলো যে, সত্যি সত্যি তারা বিএনপি চেয়ারপারসনের জীবন নিয়ে একটা গভীর চক্রান্তে লিপ্ত। তিনি বলেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই-অবিলম্বে বেগম জিয়ার ইচ্ছানুযায়ী রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হোক; অন্যথায় জনগণের রুদ্ররোষ থেকে কেউই রেহাই পাবে না। দেশনেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে কারাকর্তৃপক্ষের গড়িমসি সহ্য করা হবে না। আমি আবারো অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, লন্ডনে সরকার প্রধানদের ২৫তম কমনওয়েলথ সম্মেলনে এক্সিকিউটিভ সেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- ‘টেকসই শান্তি এবং স্থিতিশীলতার ভিত্তি হচ্ছে গণতন্ত্রের উন্নয়ন, সুশাসন ও আইনের শাসন’। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে কমনওয়েলথে যোগ দেয়া বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানরা নিশ্চয়ই বিস্ময়ে হতবাক হয়েছেন। শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে স্বৈরাচারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ তো দুরে থাক, ন্যুনতম গণতন্ত্র, সুশাসন ও আইনের শাসন সম্পূণভাবে উধাও হয়ে গেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন কমনওয়েলথ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদেরকে গভীর রাতে হল থেকে সম্পূর্ণ অমানবিক আচরণের মাধ্যমে বের করে দেয়া হয়।
ছাত্রীদের প্রতি ছাত্রলীগের নির্যাতনকে জারি রাখার ছাড়পত্র দিয়েছে বর্তমান সরকার। ছাত্রলীগের অপকর্ম সমূহের মদদদাতা আওয়ামী সমর্থিত ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে এতো নীচে নামতে পারে, সেটি দেখে বিবেকবান মানুষেরা আজ বিস্মিত, হতভম্ব। আওয়ামী ক্ষমতার বলয়ে ঢুকে এরা শিক্ষার মূল আদর্শকেই জলাঞ্জলি দিয়েছেন। আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষক ও ছাত্রলীগ যেন একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, আবদুস সালাম, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সেলিমুজ্জামান সেলিম, মুহাম্মদ মুনির হোসেন, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন