কোর্ট রিপোর্টার : কোহিনূর কেমিক্যাল কোম্পানির সাবেক কনিষ্ঠ নির্বাহী আইনজীবী পলাশ কুমার রায়কে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলা হয়েছে। ঢাকা মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলাম শুনানি শেষে আদালতে দাখিল করা আরজি তেজগাঁও থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে আগামী ৩ দিনের মধ্যে আদালতকে অবহিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রেজাউল করিম এবং প্রতিষ্ঠানটির আইন কর্মকর্তা আরিফুজ্জামানকে আসামি করে গত সোমবার এ মামলা করেন অপহৃতের মা মীরা রানী রায়। মঙ্গলবার অপহৃত ওই আইনজীবীর মা পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মীরা রানী রায় ঢাকার কোর্ট রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের কার্যালয়ে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। মীরা রায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তার ছেলে ৩০ মার্চের পর থেকে কোথায় আছে কেমন আছে, বেঁচে আছে না মরে গেছেÑ আমি জানি না। বাদীর অপর আইনজীবী কিশোর কুমার মন্ডল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যে ওসির কাছে বার বার মমলা করতে যেয়ে ফিরে আসতে হয়েছে সে ওসি কিভাবে কি তথ্য আদালতকে জানাবেন, কি তদন্ত করবেন।
বাদীর অন্যতম আইনজীবী নির্মল রায় চৌধুরী জানান, মামলার আরজিতে বলা হয়, এডভোকেট পলাশ কুমার রায় ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর কোহিনূর ক্যামিকেলে জুনিয়র এক্সিকিউটিভ (লিগ্যাল এফেয়ার্স) হিসেবে যোগদান করেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আসামি রেজাউল করিম বাদীর ছেলেকে (পলাশ কুমার) ৭ বিঘা জমির নামজারির ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করতে বললে এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ইসলামী ব্যাঙ্ক কারওয়ানবাজার শাখা থেকে ঋণ উত্তোলনের জন্য নামজারির ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করতে না পারলে চাকরি ছেড়ে দিতেও বলেন ওই এমডি। পরে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বাদীর ছেলে চাকরি ছেড়ে দেন। মামলায় আরো বলা হয়, বাদীর ছেলে কোম্পানির বিভিন্ন গোপন বিষয় জানায় আসামিরা চাকরি ছেড়ে দেয়ার পরও তাকে হুমকি প্রদান করতে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী নির্মল বলেন, তাছাড়া আরিফুজ্জামানের কাছে পলাশের ৫ লাখ টাকা পাওনাও ছিল। সেটা ফেরত চাওয়াও অপহরণের একটি কারণ বলে মনে করছেন বাদী পলাশের মা। এ কারণে গত ১৩ মার্চ তেজগাঁও জোনের পুলিশের উপ-কমিশনার বরাবর বিষয়টি অবগত করে একটি দরখাস্ত করা হয়। এরপর গত ১৬ মার্চ উপ-কমিশনার দু’পক্ষকে হাজির হতে নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশ পাওয়ার পর থেকে আসামিরা বাদীর ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করতে থাকে। আসামিদের হুমকির কারণে গত ৩০ মার্চ বেলা ১১টার দিকে তেজগাঁও থানার উদ্দেশ্যে বের হলে পলাশ রায় আর বাসায় ফিরেননি। বাদীর ধারণা, আসামিরা কোম্পানির গোপন তথ্য ফাঁস হওয়ার ভয়ে তার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন