অর্থনৈতিক রিপোর্টার : রেলওয়ে ও বিদ্যুতের ৭টিসহ মোট ৯টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এসব প্রকল্পের ক্রয়ে মোট ৬০৪ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।
বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত সুখবর। আমি আগেই বলেছিলাম, দেশে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিদ্যমান থাকলে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবৃদ্ধিতে বিদ্যুৎ বিভাগ দাবি করতে পারে। তবে কৃষিখাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সবাই একযোগে কাজ করেছে বলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
পরে অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৈঠকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া রেলপথ পুনর্বাসন এবং কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ-টুঙ্গীপাড়া নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় গোপালগঞ্জ থেকে টুঙ্গীপাড়া পর্যন্ত অংশের ১৮ দশমিক ৪ কিলোমিটার নতুন ব্রডগেজ মেইনলাইন এবং ৩ কিলোমিটার লুপলাইন নির্মাণ, এমব্যাংকমেন্ট, ট্র্যাক, মেজর ও মাইনর ব্রিজ, স্টেশন বিল্ডিং, প্ল্যাটফরম, প্ল্যাটফরম শেড, লেভেল ক্রসিং গেট এবং অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ ও অন্যান্য সব কাজের ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ২৬১ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারপার পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নতুন স্টেশন বিল্ডিং, প্ল্যাটফরম, প্ল্যাটফরম শেড নির্মাণ, কার পার্কিং, স্টাফ কোয়ার্টার ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৫৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা। মেসার্স নূর-এ-এলাহি প্রাইভেট লিমিটেডকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া রেলওয়ের সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট কর্মসূচির আওতায় দর্শনা-ঈশ্বরদী-সিরাজগঞ্জ বাজারের রেললাইন পুনর্বাসন, লুপলাইন পুনর্নির্মাণ চুক্তিবদ্ধ কাজের অতিরিক্ত কাজের বিপরীতে ব্যয় বাড়ানোর একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দরপত্রে প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৫৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। অতিরিক্ত কাজের জন্য ৩ কোটি ৩ লাখ বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
এছাড়া সেতু বিভাগের ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পের সেফটি অডিট-এর জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি হলো ইন্টারন্যাশনাল কনসালট্যান্সি অ্যান্ড টেকনোক্র্যাট ইন্ডাস্ট্রি। এ জন্য ব্যয় হবে ৪২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটি ৫ বছরের জন্য সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবে।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় একটি সাব-প্যাকেজের অধীনে ৪ হাজার ৩৬২ কিলোমিটার বিভিন্ন আইটেমের কন্ডাকটর, বেয়ার ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ জন্য ব্যয় হবে ২০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। মেসার্স পলি কেবল ইন্ডাস্ট্রি ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে।
বৈঠকে একই প্রকল্পের আওতায় ৪ হাজার কিলোমিটার কন্ডাকটর (ইনস্যুলেটেড) ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ জন্য ব্যয় হবে ১৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এসপি ওয়্যার অ্যান্ড কেবল লিমিটেড ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার ৯১৮টি পোল, এসপিসি ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মেসার্স কনটাক কনস্ট্রাকশন লিমিটেডকে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। একই প্রকল্পের আওতায় মেসার্স টেকনো ভেঞ্চার ৮ হাজার ১৯২টি বিভিন্ন আইটেমের ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার সরবরাহ করবে। এজন্য ব্যয় হবে ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এছাড়াও পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৮ লাখ গ্রাহক সংযোগ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৭ হাজার ৫০০ কিলোমিটার কন্ডাকটর, এসিএসআর ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। মেসার্স পলি কেবল সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজটি পেয়েছে। এ জন্য ব্যয় হবে ৩৮ কোটি টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন