স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রতীক নিয়ে দ্বন্দ্বের অবসানে দুই পক্ষই নিজেদের বক্তব্য দিয়েছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন ইসি। তবে মশাল প্রতীকের দাবিদার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ইসির প্রতি আমাদের আস্থা আছে।
আশা করি তাদের কাছে সুবিচার পাবো। অন্যদিকে দলটির অপরাংশের কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দীন খান বাদল বলেছেন, ইনু নৌকায় উঠে গেছেন মশাল আমাদের। বুধবার প্রথম দফার শুনানিতে দলটির একপক্ষের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতারের শুনানি করে। এরপরে দ্বিতীয় দফায় বিকাল ৩টায় অপর পক্ষের কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দীন খান বাদল ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে দলটির কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বে একটি অংশ বিদ্রোহ ঘোষণা করে জাসদের নামে কমিটি গঠন করে। এদিকে, হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বেও অপর অংশটিও কমিটি গঠন করে। পরে ইনুর অংশ চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নিজেদের সমর্থিত প্রার্থীর প্রতীক মশাল দেওয়ার জন্য ইসিতে চিঠি দেয়। কমিটি করে জাসদের অপর অংশ নিয়ম মোতাবেক ইসিতে কমিটি জমা দেয়। এ প্রেক্ষিত মশাল কার হাতে যাবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই শুনানিতে করছে ইসি। শুনানিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নির্বাচন কমিশনারগণ ছাড়াও ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
শুনানি শেষে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাদের শুনানিতে আহ্বান করেছিলো। এর আগে মঙ্গলবার আমরা আমাদের দলের কাউন্সিলের দলিলাদি ইসিতে হস্তান্তর করেছি। নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা আছে। আশা করি তারা সুবিবেচনা করবেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন জাসদকে আহ্বান করেছিল। গতকাল আমাদের সব কাগজপত্র দলিলাদি জমা দিয়েছি। এই কাগজপত্রের উপর ইসি কিছু প্রশ্ন করেছে, আমরা সেসব প্রশ্নোত্তর করেছি।
বিকেলে শুনানী শেষে অপরাংশের জাসদের কার্যকরী সভাপতি মঈন উদ্দীন খান বাদল বলেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার নৌকায় উঠে গেছেন। মশাল (জাসদের প্রতীক) আমার, যারা মশাল নিয়ে লড়াই করে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের কাছ থেকে কেউ ‘মশাল’ কেড়ে নিতে পারবে না। তিনি বলেন, শুনানিতে আমাদের যাবতীয় তথ্য উপস্থাপন করেছি। কমিশন সব শুনেছে। আমরা জানিয়েছি, মশাল প্রতীক আমাদের। এখন প্রত্যাশা, ইসি যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবে।
বাদল বলেন, ওই রাতে দুটি পথ খোলা ছিল- হয় সংঘাত, না হয় পরিত্যাগ। অধিকাংশ কাউন্সিলর এ কমিটিতে পরিত্যাগ করেছে। জাসদের কাউন্সিলর ১ হাজার ২৩৬ জন, ওরা (ইনু-শিরীন) ভোট দেখিয়েছে ৬০৩ ভোট। বাকিরা গেল কোথায়? জাসদের ছয় জন এমপি’র চার জন (বাদল, লুৎফা তাহের, তানসেন ও প্রধান) আমাদের। স্থায়ী কমিটির ১২ জনের মধ্যে সাত জন আমাদের, দেশের ৭৯টি কমিটির মধ্যে ৪০টি আমাদের।
তিনি বলেন, আমরাই জাসদের মূলধারা। মশাল প্রতীক আমাদের। সংসদে আমি, ইনু, শিরীন নৌকায় পার হয়েছি। মশাল প্রতীকে যে দু’জন নির্বাচিত হয়েছেন তারাও আমাদের সঙ্গে। যারা মশাল নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের কাছ থেকে মশাল কেড়ে নিতে পারবেন না। বাদলের নেতৃত্বাধীন জাসদের কাছ থেকে মশাল কেড়ে নিলে সংসদে মশাল প্রতীকে নির্বাচিতদের স্ট্যাটাস কী হবে তা নিয়েও নতুন করে জটিলতার প্রশ্ন তোলেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন