স্টাফ রিপোর্টার : যুক্তরাষ্ট্রে কষ্টকর জেলবাসের দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে দেশে ফেরত এসেছেন ২৭ বাংলাদেশি। অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক এই বাংলাদেশিদের একটি বিশেষ বিমান ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে ওই বাংলাদেশীদের বহনকারী বিশেষ বিমানটি রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
ফিরে আসা বাংলাদেশিরা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের কাছে তাদের দুঃসহ কষ্টের কথা তুলে ধরেন। তাদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তাদের ওপর নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে।
তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, জীবিকার খোঁজে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে, বিভিন্ন দেশ ঘুরে অবৈধপথে তারা স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় ঢোকেন। কিন্তু বিধি বাম। আমেরিকায় ঢোকার পর ধরা পড়েন সে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। পরে আরো অনেকের সঙ্গে তাদের সাজা হয়।
ফেরত আসা একজন বাংলাদেশি তার জেল অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬-১৭ ঘণ্টা লকডাউন (আটকে রাখা) রাখা হতো। খাবারের অবস্থা ভয়াবহ। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেয়ার সময় চেইন দিয়ে দুই হাত বাঁধে। কোমর ও দুই পায়ের সঙ্গে চেইন লাগায়।
যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে পৌঁছালেন তার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে পানামা গেছি। পানামা থেকে একটা চিঠি নিয়ে কোস্টারিকা, কোস্টারিকা থেকে নিকারাগুয়া, নিকারাগুয়া থেকে সালভাদর, সালভাদর থেকে গুয়াতেমালা, গুয়াতেমালা থেকে মেক্সিকো, মেক্সিকো থেকে ইউএসএ (যুক্তরাষ্ট্র)। আমরা আমেরিকান ইমিগ্রেশনে গিয়ে সারেন্ডার করি।
অবৈধপথে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছে দিতে দালালদের জনপ্রতি ৩৫ লাখ টাকা করে দিয়েছেন বলে জানান তিনি। ফেরত আসা বাংলাদেশিরা জানান, আরো ১২৬ জন অনুপ্রবেশকারী যুক্তরাষ্ট্রের জেলে আছেন। বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বারবার সহায়তা চেয়েও কোনো সহায়তা পাননি তারা।
বাংলাদেশ ও মার্কিন দূতাবাসের সমন্বয়ে তাদের দেশে ফেরত আনা হয়েছে বলে জানান অভিবাসন প্রোগ্রাম ভালোবাসি বাংলাদেশের জাতীয় সমন্বয়কারী আল আমিন নয়ন। আগামীতে পর্যায়ক্রমে আরো ১০টি ফ্লাইটে বাকি বন্দীদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন