শামসুল ইসলাম : সর্বনি কোটার হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন সংকট নিরসনের দাবীতে ক্ষতিগ্রস্ত হজ এজেন্সিগুলো শিগগিরই আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সার্কুলার (দিকনিদের্শনা ) ও হাবের নিদের্শনা যারাই মান্য করেছে তারাই সর্বনি¤œ কোটার (দেড়শ’) হজযাত্রীর প্রাক-নিবন্ধন নিয়ে বিপাকে পড়েছে। সরকারী নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঘোষিত সর্বনি¤œ কোটার হজযাত্রীর মাত্র স্বল্প সংখ্যক হজযাত্রীর ডাটা এন্ট্রি করে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে প্রাক-নিবন্ধনে এগিয়ে রয়েছে অধিকাংশ হজ এজেন্সি। বিলম্বে হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধনকারী সৃষ্ট সংকট নিরসনের লক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দ্বিতীয় তলার্য় ক্ষতিগ্রস্ত হজ এজেন্সি’র মালিকদের এক সভায় হাদী ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী মুফতী হেদায়াতুল্লাহ হাদীকে আহবায়ক ও দোহার-নবাবগঞ্জ ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী মোঃ ইব্রাহিমকে সদস্য সচিব করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট ‘১৫০ হাজীর কোটা বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। সভায় কলোম্বিয়া ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মফিজুর রহমানকে উপদেষ্টা মনোনীত করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন, যুগ্ম আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম, মাওলানা আবু আইয়ূব আনসারী, মাওলানা আহমদ আলী, রাকিবুল ইসলাম, অধ্যাপক মাওলানা কামাল উদ্দিন, এরশাদ আলী, মোজাম্মেল হক, সাঈদ আহমেদ , বদিউজ্জামান ও এ বি এম আজিজুর রহমান। সভায় অবিলম্বে বিলম্বে প্রাক-নিবন্ধনকারী ক্ষতিগ্রস্ত হজ এজেন্সিগুলোর হজযাত্রীদের হজে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতকরণে বাস্তবমুখী উদ্যোগ নেয়ার জন্য ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। সভায় বলা হয়, হজযাত্রীদের মুয়াল্লেম ফি জমা দিয়ে হজে যাওয়ার বিষয়টি সরকারই সর্বশেষ তারিখ নির্ধারণ করেছে আগামী ৩০ মে। উল্লেখিত সময়ের মধ্যে যারাই হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন করতে পারবে তাদের হজে পাঠানোর দায়-দায়িত্ব সরকারেই।
উল্লেখ্য, হাদী ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী মুফতী হেদায়াতুল্লাহ হাদী গত বুধবার ভারপ্রাপ্ত ধর্ম সচিব মোঃ আব্দুল জলিলের দপ্তরে তার সাথে দেখা করে দেড়শ’ কোটার হজযাত্রীদের বিলম্বে প্রাক-নিবন্ধন সংক্রান্ত সংকট নিরসনের জন্য একটি প্রস্তাব হস্তান্তর করেন। সরকারী নিদের্শনা উপেক্ষা করে সর্বনি¤œ কোটার কমে যাদের হজযাত্রী প্রাক-নিবন্ধন করা হয়েছে তাদের জন্য যারা আইনকে শ্রদ্ধা করেছে সেসব হজ এজেন্সি ইচ্ছা থাকা সত্বেও যথাসময়ে সর্বনি¤œ (১৫০) হজযাত্রীর প্রাক-নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারেননি। তারা এখন বৈধ হজযাত্রী নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।
গম ২৩ মার্চ বিকেলে বেসরকারী হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্ত ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত আইটি ফার্মের সার্ভারে দফায় দফায় বিপর্যয় দেখা দেয়। এতে হজ এজেন্সিগুলোর মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম শুরুর দিন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (হজ-২) মোঃ শহিদুল্লাহ তালুকদার এক সার্কুলারে হজ এজেন্সিগুলোকে সর্তক করেন যে, সউদী-বাংলাদেশ দ্বি-পাক্ষিক হজ চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছর হজযাত্রীর সর্বনি¤œ কোটা ১৫০জন নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার ঘোষিত সর্বনি¤œ কোটা দেড়শ’ হজযাত্রীর কমে যাতে উইজার আইডি ব্যবহার করা না হয়। যাদের দেড়শ’ নীচে হজযাত্রী রয়েছে তারা যাতে অন্য হজ এজেন্সির সাথে সমন্বয় করে দেড়শ হজযাত্রীর প্রাক-নিবন্ধন কাজ সম্পন্ন করেন। অন্যথায় দেড়শ’ কোটার নীচের প্রাক-নিবন্ধনকারী হজযাত্রীদের হজে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। একই দিন হাব মহাসচিবও একই সার্কুলার জারি করেন। এসব সার্কুলারের পরে গত ২৮ মার্চ ৪শ’ ২টি হজ এজেন্সি সর্বনি¤œ কোটার কমে (১৪৬ জনের নি¤œ) মোট ৩৫ হাজার ৬শ’ ১৬ জনের প্রাক-নিবন্ধন করে। একই দিন পর্যন্ত ২শ’৯১টি হজ এজেন্সি ১শ’৪৬ জন ও তদূর্ধ হজযাত্রীর প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করে। এতে ২শ’ ৯১টি এজেন্সি’র সর্বমোট হজযাত্রীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২ হাজার ৫শ’ ৮১জনে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন