শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

প্রতিটি গুম-খুনের বিচার একদিন হবেই : মির্জা ফখরুল

মাহমুদুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি

প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিগত কয়েক বছরে দেশে গুম ‘চরম আকার’ ধারণ করেছে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল এক দোয়া মাহফিলে তিনি বলেন, গুম হচ্ছে সবচেয়ে বড় মানবতাবিরোধী অপরাধ। গত কয়েক বছরের দেশে যেভাবে গুমের ঘটনা ঘটেছে অতীতে কখনো মানুষ তা দেখেনি। এ যেন মধ্যযুগীয় বর্বরতা। কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়। একদিন না একদিন এ সব ঘটনার বিচার হবেই।
রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের ছাত্রদল সভাপতি আমিনুল ইসলাম জাকিরের ‘নিখোঁজ’ হওয়ার একবছর উপলক্ষে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ছাত্রদল এর আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বিএনপির নেতা সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর চৌধুরী আলমকে গুম করার মাধ্যমে এই গুমের সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। এরপর ইলিয়াস আলীসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী গুম হয়েছেন। প্রায় ৫শ’ জনেরও অধিক বিএনপির নেতা-কর্মীদের গুম করা হয়েছে। গুমের কারণ ব্যাখ্যা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, তাদের অপরাধ, তারা জনগণের বাকস্বাধীনতা, হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে আদালত পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত অসংখ্য  নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। কেউ শান্তিতে নেই। সারাদেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটি গুমবিহীন রাষ্ট্র পেতে হলে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারকে বাধ্য করতে হবে একটি অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে।
সোহাগী জাহান তনু হত্যাকা-ের বিচারের অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন পর্যস্ত তনু হত্যার কোনো কিছুই হলো না। পত্রিকা খুললেই হত্যা আর হত্যার খবর। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। এজন্য ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ‘ঐতিহ্য অনুযায়ী’ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
এক বছরেরও বেশি সময় ছাত্রদল নেতা আমিনুল ইসলাম জাকিরের ‘নিখোঁজ’ হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, গত বছর সরকারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। জানি না সে বেঁচে আছে কি নেই। তার স্বজনরা তার পানে চেয়ে আছে। এভাবে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীর পরিবার তাদের স্বজনদের ফিরে আশার প্রত্যাশায় দিন গুনছে।
দোয়া মাহফিলে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে রিমান্ড
আবেদন বাতিলসহ মুক্তি দাবি
এদিকে পৃথক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে তিন বছর অন্যায়ভাবে আটকে রেখেছে এই জুলুমবাজ সরকার। তার বিরুদ্ধে নতুন করে নাশকতার একটি পুরনো মামলায় জড়িত করে রিমান্ড আবেদনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রকে হত্যা করার জন্য বিরোধীদলকে ধ্বংস করার যেসব মহাপরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করেছে তার অন্যতম হচ্ছে মানুষের কন্ঠরোধ করা। আর এজন্য গণমাধ্যমকে প্রবল হুমকির মধ্যে রাখা হয়েছে। তারই অংশ এই ভোটারবিহীন নির্বাচনের সরকার।  জোর করে ক্ষমতাদখলকারী এই অবৈধ সরকার শুধুমাত্র গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণই করছে না বরং স্পষ্টভাষী সাংবাদিক ও সম্পাদকদের মিথ্যা মামলায় আটক ও নির্যাতন করে গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করতে দলন-নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে। মিথ্যা ও রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে আটক রেখে তাঁকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার ষড়যন্ত্র করছে সরকার।
তিনি বলেন, কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় নতুন করে মাহমুদুর রহমানকে আটক দেখিয়ে রিমান্ড চাওয়া সম্পূর্ণ অমানবিক ও সরকারের নিষ্ঠুর প্রতিহিংসা চরিতার্থের বহিঃপ্রকাশ। অসুস্থ মাহমুদুর রহমানের রিমান্ড আবেদন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।



 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন