স্টাফ রিপোর্টার : দেশের সকল নদী দখলে সরকারি দলের লোকেরা জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ। তিনি বলেন, আদি বুড়িগঙ্গার দূষণের মূল কারণ দখল। আদিযুগে মানুষ হত্যা করার জন্য গলা টিপে ধরা হতো। বর্তমানে সরকারের প্রভাবশালীরা নদীর গলা টিপে ধরেছে। গতকাল (শনিবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বেপরোয়া দখলে আদি বুড়িগঙ্গা ও এর ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বুড়িগঙ্গা রিভারকিপার এ সভার আয়োজন করে।
আলোচনা সভায় নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহ-সভাপতি সুলতানা কামাল। সভায় দখল উচ্ছেদ ও নদী রক্ষায় কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের অসহায় বলে মন্তব্য করেন নৌমন্ত্রী। তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে সুলতানা কামাল বলেন, ‘যখন ক্ষমতাশালী মানুষ বা সরকারের কোনো মন্ত্রী নিজেদের অসহায় বলেন, আমরা সেটা মেনে নিতে পারি না।’
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌমন্ত্রী বলেন, ‘নদী রক্ষায় আমাদের অনেক চিন্তাভাবনা করে কাজ করতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে আমরা অসহায়।’ তিনি আরো বলেন, যারা নদী দখল করে, তারা একালের রাজাকার। মুক্তিযুদ্ধে যেমন রাজাকারদের বিরুদ্ধে এ দেশের মানুষ সোচ্চার হয়েছিল, আজ এই দখলদারদের বিরুদ্ধে সেরকম সোচ্চার হতে হবে।
বাপা’র সহ-সভাপতি সুলতানা কামাল বলেন, শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। নদী বাঁচাতে কাজ করতে হবে। নদী যেন ঝিলে পরিণত না হয়। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যাকারীরা যেমন আমাদের শত্রু, নদী দখলকারীরাও আমাদের শত্রু। তাই এদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
নদী দখলে জলাশয় আইনে এ পর্যন্ত সরকার কাউকে শাস্তি দিয়েছে এমন নজির নেই উল্লেখ করে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, ৫ বছরে বুড়িগঙ্গা এলাকা বদলে গেছে। আর যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। তিনি বলেন, যারা নদী দখলের সাথে জড়িত তাদেরকে কেন আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে না? অপরাধীরা যে শ্রেণীর হোক, আইন সবার জন্য সমান। নদী উন্নয়নের নামে একে হাতিরঝিল বানাবেন না। নদীকে নদীর মতো বাঁচতে দিন।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন- নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, পানি বিজ্ঞানী ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন