স্টাফ রিপোর্টার : রেললাইন ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন একজন অন্ধ ব্যক্তি। পেছন থেকে ছুটে আসছিলো দ্রুতগামি ট্রেন। ট্রেন চালক দূর থেকেই হুইসেল দিচ্ছিল অনবরত। কিন্তু অন্ধ ব্যক্তি অনুভব করতে পারেন নি তিনি যে একেবারেই রেল লাইনের ওপর। অদুরে এ দৃশ্য চোখে পড়ে মিজানুর রহমানের। তিনি চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু অন্ধ ঐ ব্যক্তি রেললাইন থেকে পার হতে পারেননি। খুব কাছাকাছি চলে আসে ট্রেনটি। অন্ধ ব্যক্তিকে বাঁচাতে দৌড়ে আসেন মিজানুর রহমান। অন্ধ ব্যক্তিকে উদ্ধারে তার হাত ধরে টান দেন। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। দু’জনের শরীরের ওপর দিয়ে চলে যায় চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর এক্সপ্রেস মহানগর-প্রভাতী ট্রেন। কাটা পড়েন দু’জনই। এমন মর্মান্তিক ঘটনা গতকাল শনিবার সকাল সোয়া ৭টায়। রাজধানীর বনানী রেলস্টেশনের উত্তর দিকে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জ মিলনায়তনে প্রবেশের রেলের লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে রেল লাইনে।
ট্রেনে কাটাপড়া আনুমানিক ৪৫ বছর বয়সের অন্ধ ব্যক্তির নাম পরিচয় শনাক্ত না হলেও রক্ষা করতে গিয়ে নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম মিজানুর রহমান (৫০)। তিনি বাড্ডায় ফুটপাতের চায়ের দোকানদার।
প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি পুলিশকে জানায়, সকালে এক ব্যক্তি ট্রেন আসার সময় রেল লাইন ধরে হাঁটছিলেন। মনে হয়েছে তিনি অন্ধ। এ সময় ট্রেন ওই ব্যক্তির (অন্ধ) কাছাকাছি চলে আসলে অপর এক ব্যক্তি তাকে ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে দৌঁড়ে গিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনিও ট্রেনে কাটা পড়েন।
ঢাকা রেলওয়ে থানার ওসি আব্দুল মজিদ বলেন, সকাল ৭টার দিকে কমলাপুর থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর এক্সপ্রেস মহানগর-প্রভাতী ট্রেনে কাটা পড়ে দুই ব্যক্তি মারা যান। মিজান ওই অন্ধ ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও ট্রেনে কাটা পড়েন। লাশ দুইটি উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। পরে মিজানের ছোট ভাই বাবুল মর্গে তার ভাইয়ের লাশ সনাক্ত করেন। ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ নেয়ার আবেদন করেন তিনি। পরে আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর গতকাল সন্ধ্যায় মিজানের লাশ তার ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অপর অন্ধ ব্যক্তির লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন