স্টাফ রিপোর্টার : ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দাবি করেছে, বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার রোধ করা, পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা ও সংশ্লিষ্টদের বিচারের মুখোমুখি করা জটিল হতে পারে, তবে তা মোটেও অসম্ভব নয়। প্রয়োজন সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের সদিচ্ছা ও সক্রিয় উদ্যোগ।
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের সমন্বিত প্রয়াস নেয়ার উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। এর মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের নিরাপদ স্বর্গে পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনা এবং এ ব্যাপারে জড়িতদের কঠোর শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে। গতকাল (সোমবার) সংবাদমাধ্যমে টিআইবির পক্ষে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
দুর্নীতিবিরোধী এ সংস্থাটি বলছে, পানামা পেপারস ফাঁস হওয়ার তথ্যে বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের স¤পৃক্ততা আরো একবার প্রমাণ করল যে, দুর্নীতি একটি বৈশ্বিক সমস্যা যা থেকে কোনো দেশই মুক্ত নয়। অন্যদিকে কর ফাঁকি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পাচারের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা আন্তর্জাতিক অর্থ ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের গভীরভাবে উদ্বেগজনক ঘাটতির পরিচায়ক। এক্ষেত্রে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট দেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক আইনি ও কারিগরি সহযোগিতার সুযোগ গ্রহণ করতে পারে বলে টিআইবি মনে করে। অর্থ পাচার রোধ করা, পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা ও সংশ্লিষ্টদের বিচারের মুখোমুখি করা জটিল হতে পারে, তবে তা মোটেও অসম্ভব নয়, প্রয়োজন সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের সদিচ্ছা ও সক্রিয় উদ্যোগ।
এ প্রসঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি)-এর আন্তর্জাতিক বোর্ডের তৎপরতায় পানামা পেপারসে চিলি ট্রান্সপারেন্সির চেয়ারপারসন গঞ্জালো দেলাভ্যু সোয়েতের সম্পৃক্ততার তথ্য প্রকাশের পর তিনি পদত্যাগ করেন। এ ঘটনাকে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে আখ্যায়িত করে ড. জামান বলেন, দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতি বা অনিয়মের যেকোনো অভিযোগের ব্যাপারে টিআইবি যে শূন্য-সহনশীলতা নীতির যথাযথ বাস্তবায়নে সক্ষম। চিলি ট্রান্সপারেন্সির প্রাক্তন চেয়ারপারসন গঞ্জালো দেলাভ্যু সোয়েতের পদত্যাগের ঘটনা তারই একটি দৃষ্টান্ত। টিআইবি দাবি করেছে, যেসব তথাকথিত উন্নত দেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে সহজেই লগ্নি ও বিনিয়োগের সহায়ক ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্সিয়াল অবকাঠামো বজায় রাখা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী দুর্নীতির প্রসারের জন্য তাদের দায় সবচেয়ে বেশি। পশ্চিমা বিশ্বের নিরাপদ স্বর্গে ‘শেল কোম্পানি’র মালিক ও পরিচালক হওয়ার তথ্য গোপন রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের যে বৈশ্বিক ব্যবস্তা গড়ে তোলা হয়েছে তা অবিলম্বে প্রতিহত করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের জন্য ড. জামান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন