ইনকিলাব ডেস্ক : বগুড়ার আদমদীঘিতে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এক পুলিশ কনস্টেবলকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে মামলার আসামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে ওসিসহ ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা।
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার টাউন পুলিশ ফাঁড়ির এক কনস্টেবলকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। সোমবার বেলা ১২টা থেকে নুরুল ইসলাম নুরু নামের ওই পুলিশ কনস্টেবলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সান্তাহার রেলগেট এলাকায় ডিউটি করার সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাকে মোটরসাইকেল যোগে অপহরণ করেছে বলে দাবি করেছেন সান্তাহার টাউন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিদ্ধার্থ সাহা।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং বিভিন্ন আবাসিক হোটেল থেকে লোকজন ধরে নিয়ে গিয়ে ফাঁড়িতে আটকে রেখে টাকা-পয়সা আদায়ের অভিযোগ ওঠে সান্তাহার টাউন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিদ্ধার্থ সাহার বিরুদ্ধে।
এর প্রতিবাদে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তোফিকুর রহমান সোহাগের নেতৃত্বে আদমদীঘি উপজেলা ও সান্তাহার পৌর ছাত্রলীগ সোমবার বেলা ১১টায় সান্তাহার পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল শেষে শহরের ঘোড়াঘাট বটতলি এলাকায় সান্তাহার-নওগাঁ সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদমদীঘি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এসময় আদমদীঘি থানার ওসির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে ছাত্রলীগের মিছিল সমাবেশ চলাকালে সান্তাহার রেলগেট এলাকায় ডিউটিরত পুলিশ কনস্টেবল নুরুল ইসলামকে মোটরসাইকেল যোগে অপহরণ করা হয়।
সান্তাহার টাউন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিদ্ধার্থ সাহা জানান, সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ওই পুলিশ কনস্টেবলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে তার খোঁজ করছে। ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, শহরের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা পুলিশের দায়িত্ব। রাত ১২টার পর অযৌক্তিক কারণে শহর এলাকায় কাউকে মহড়া দিতে দেওয়া হবে না। সে যেই হউক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, ছাত্রলীগের সাথে সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সোমবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ আদমদীঘি থানায় বৈঠকে বসেছেন বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে।
সিলেটে ওসিসহ ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবক লীগের মামলা
সিলেট অফিস জানায়, সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুহেল আহমদসহ তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনজুরুল ইসলাম মজনু। গতকাল সোমবার দুপুরে সিলেট মহানগর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন তিনি।
মামলার বাকি আসামিরা হলেনÑকোতোয়ালী থানার সেকন্ড অফিসার ফয়েজ আহমদ ও নগরীর লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আবদুল কাদির। এছাড়াও অজ্ঞাত আরো ৫-৭ জন পুলিশ ফোর্সকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদি মনজুরুল ইসলাম মজনু নগরীরা রায়নগর রাজবাড়ি বসুন্ধরা-৪৭ নং বাসার আবদুল ওয়াহিদের ছেলে। মামলার অভিযোগে বাদী উলেখ করেছেন, তিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। গত শনিবার তিনি রাজনৈতিক সভার জন্য যান জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফসার আজিজের বাসায় যান। সভা শেষে রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী স্বপন দেব, জুনেদ, জাহেদুল, সাজ্জাদসহ নগরীর লালাদিঘীর পূর্বপারে পৌঁছামাত্র কোতোয়ালি থানার ওসি সুহেলের নির্দেশে মামলার অন্যান্য আসামিরা তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় ওসি সুহেল স্বপন দেবকে ধরে ফেলেন। স্বপন দেব নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী পরিচয় দিয়ে বাসায় যেতে চাইলে ওসি এক লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে স্বপন দেবের মাথায় হাতে থাকা লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ি দেন ওসি সুহেল। এ সময় রক্তাক্ত জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন স্বপন। পরে ওসির সাথে থাকা সেকন্ড অফিসার ফয়েজ ও এসআই আবদুল কাদির লাঠি দিয়ে স্বপনকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন।
বাদী মনজুরুল ইসলাম আরো উলেখ করেছেন, এসময় সাথে থাকা অন্যদের নিয়ে তিনি অনুনয় জানালে আসামিরা তাদেরকেও লাঠিপেটা করেন। কোতোয়ালি থানার ওসি সুহেল ও মামলার অন্যান্য আসামিদের সাথে সিলেটের বিভিন্ন অপরাধী ও জঙ্গি গোষ্ঠীর কানেকশন রয়েছে বলেও বাদী মনজুরুল ইসলাম অভিযোগে উলেখ করেছেন।
বাদিপক্ষের আইনজীবী গোলাম ইয়াহইয়া চৌধুরী সুহেল জানান, মহানগর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো অভিযোগ আমলে নিয়ে জুডিশিয়াল তদন্তের জন্য এডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ প্রদান করেছেন। আদালতে বাদিপক্ষে আইনজীবীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট আলাউদ্দিন ও প্রবাল চৌধুরী পুঞ্জনও ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন