বিশেষ সংবাদদাতা : পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল চিলির প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের প্রেক্ষাপটে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনটির বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের কর্মকর্তাদের সম্পদের বিবরণ প্রকাশের দাবি তুলেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। জনপ্রতিনিধিদের যেমন সম্পদের হিসাব দাখিল করতে হয়, দুর্নীতি পর্যবেক্ষকদের ক্ষেত্রেও তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে আইন করার কথা বলেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা জয় গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ফেসবুকে লিখেছেন, আমরা কী করে জানি যে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সদস্যরা দুর্নীতিগ্রস্ত নয়, তাদের কোনো লুকানো সম্পদ নেই এবং তারা তাদের সব ট্যাক্স পরিশোধ করেছে?
পানামা পেপারসের ফাঁস হওয়া নথিতে অন্তত পাঁচটি বিদেশী কোম্পানির সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য প্রকাশের পদত্যাগ করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল চিলির প্রেসিডেন্ট গনসালো দেলাবো। তার পদত্যাগপত্র জার্মানভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনটির পরিচালনা পর্ষদ গ্রহণ করেছে বলে সোমবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। মোসাক ফনসেকা নামে পানামার আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান থেকে এক কোটি দশ লাখ গোপন নথি ফাঁস হয়েছে, যাতে বিভিন্ন দেশের বর্তমান ও সাবেক রাষ্ট্রপ্রধানসহ বিশ্বের ধনী ও ক্ষমতাধররা কিভাবে কর ফাঁকি দিয়ে গোপন সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সেই তথ্য বেরিয়ে আসছে।
জয় লিখেছেন, একটা বিষয় আমি উত্থাপন করতে চাই, সেটা হলো সম্প্রতি চিলির ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রধানের পদত্যাগ। বিদেশে সম্পদ লুকানোর বিষয়ে তার নাম এসেছিল পানামা পেপারসে। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল কতটা স্বচ্ছ এবং অন্যদের দুর্নীতিগ্রস্ত বলার অধিকার তাদের কিভাবে থাকে? সর্বোপরি, আমাদের দেশে সব সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের সম্পদের বিবরণ দিতে হয়। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ নিজেদেরটা দেয় না, তথাপি তারা তাদের দুর্নীতির পর্যবেক্ষক বলে দাবি করে।
তাদের যদি সাহস থাকে, তবে অন্যের দুর্নীতির বিষয়ে মন্তব্য করার আগে তাদের স্বেচ্ছায় নিজেদের সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করা উচিত। তবে টিআইবি কর্মকর্তারা তা করবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে সজীব ওয়াজেদ জয়ের। এ জন্য আইনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন তিনি। আমার সন্দেহ আছে যে, তাদের সেই সাহস রয়েছে কি না, তাই মনে হয় একটি আইন থাকা প্রয়োজন। যে কেউ দুর্নীতির বিষয়ে পর্যবেক্ষক হতে চাইবে তাদের নিজেদের সম্পদের বিবরণ দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করে নিতে হবে, ঠিক যেমন এমপিদের করতে হয়। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ তাদের সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করে এটা প্রমাণ করুক যে তারা তাদের চিলি শাখার মতোই দুর্নীতিগ্রস্ত নয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন