শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

চলছে ফ্যানদের চুলচেরা বিশ্লেষণ

ভারতের রেলকোচ উন্নত নাকি ইন্দোনেশিয়ার

প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নূরুল ইসলাম : রেলের বহরে যুক্ত হচ্ছে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা বিলাসবহুল কোচ। ইতোমধ্যে ভারত থেকে ব্রডগেজের জন্য ৪০টি এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে মিটার গেজের জন্য ১৫টি কোচ এসে গেছে। দুই দেশে তৈরি কোচগুলোর ভালমন্দ নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ চলছে পুরোদমে। এ নিয়ে ফেসবুকে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ভারতের তৈরি কোচ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সমালোচনা আছে বেশি। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, ভারতের কোচের রঙ ও বডির ফিনিশিং ভালো নয়। লাল-সবুজ রঙ নিয়েও চলছে সমালোচনা।
অন্যদিকে, ইন্দোনেশিয়ার তৈরি কোচের প্রশংসাই বেশি করা হয়েছে। রেলের একজন ফ্যান ফেসবুকে লিখেছেন, আজ ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা মিটার গেজের কোচগুলো দেখলাম। রং ও ফিনিশিং দুটোই সুপার। এই কোচের সাথে ভারতে তৈরি কোচ কোনোভাবেই মিলবে না। ইন্দোনেশিয়ার কোচগুলোর রঙ সত্যি সত্যি লাল এবং সবুজ। কিন্তু ভারতের তৈরি কোচগুলোর রঙ প্রকৃতপক্ষে লাল-সবুজ নয়। আরেকজন লিখেছেন, ভারত থেকে ব্রডগেজের জন্য আনা শোভন চেয়ার কোচগুলোতে একেক পাশে ২০টি করে জানালা।
দুই পাশে জানালা মোট ৪০টি। প্রতিটি জানালার দুটি করে পার্ট। কাঁচ এবং শার্টার দুটোই আছে। চেয়ার কোচগুলোতে গরম ও ঠা-া পানির ব্যবস্থা আছে। হট কেস আছে খাবার গরম করার জন্য। হট কেসের নিচে ডিপ ফ্রিজ, বোতল কুলার এবং মোবাইল চার্জারও আছে। সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপ পরিদর্শন করে একজন ভারতের তৈরি কোচগুলোর মধ্যে পুরাতন কোচ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে লিখেছেন, কোচের গায়ের রঙের ফিনিশিং এতোটাই খারাপ যে পুরাতন রঙ এখনও বহাল আছে। চট্টগ্রাম বন্দরে ইন্দোনেশিয়ার তৈরি মিটার গেজের কোচ দেখে বেশিরভাগই প্রশংসা করেছেন। কেউ কেউ কোচগুলোর বাথরুম অত্যন্ত উন্নতমানের বলে বর্ণনা করেছেন। একজন লিখেছেন, এখন সাবানের দিন শেষ, তাই বাথরুমগুলোতে ‘হ্যান্ডওয়াশ’ মেশিন লাগানো আছে। মিটার গেজের ইন্দোনেশিয়ার তৈরি কোচ নিয়ে একজন লিখেছেন, আগের চেয়ারের তুলনায় নতুন কোচের চেয়ারগুলো একটু বেশি হেলানো যায়। সেজন্য রাতের ভ্রমণ হবে আরামদায়ক। আরেকজন একই কোচের গার্ডের (পরিচালক) শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ নিয়ে লিখেছেন, গার্ড সাহেবরা বেশ আরাম করেই ডিউটি করতে পারবেন। ভারতের তৈরি কোচগুলো রঙের ফিনিশিং নিয়ে অনেকের সমালোচনার উল্টো জবাবও উঠে এসেছে রেলওয়ের ফেসবুক পেজে। কয়েকজন এর ব্যাখ্যা দিয়ে লিখেছেন, এলএইচবি কোচগুলোর রঙ ও ফিনিশিং এরকমই হয়। ভারতের পাঞ্জাবের কাপুরথালা কারখানায় তৈরি কোচগুলো অস্ট্রিয়ান টেকনোলজিতে তৈরি। বিলাসবহুল এই কোচগুলো লিঙ্ক হোপম্যান বুশ (এলএইচবি) ব্রান্ডের। ভারতের বিলাসবহুল ‘রাজধানী এক্সপ্রেস’ ও ‘শতাব্দী এক্সপ্রেস’ ট্রেনে এই কোচগুলো ব্যবহার করা হয়। সে কারণে বিরোধিতার জন্য এভাবে ঢালাওভাবে সমালোচনা করা ঠিক নয়। তবে অনেকেই ইন্দোনেশিয়ার তৈরি কোচগুলোর প্রশংসা করে বলেছেন, কোচগুলো রেলের বহরে যুক্ত হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের যাত্রীরা বেশি সুবিধা ভোগ করবেন। দুই দেশের কোচের মধ্যে কোনগুলো ভালো বা বেশি উন্নত এ প্রশ্নের জবাবে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দুটোই ভালো এবং তুলনামূলক অনেক উন্নত। তিনি বলেন, ভালমন্দ বিচারের আগে আমাদেরকে মেলাতে হবে কোটেশন অনুসারে কোচগুলো তৈরি করা হয়েছে কি না। আমরা যেভাবে চেয়েছি সেইভাবেই তারা তৈরি করে দিয়েছে। এর মধ্যে ফিনিশিং বা রঙ খারাপ থাকলে সেগুলো রিপেয়ারিং করার ব্যবস্থাও আছে। স্ব-স্ব কোম্পানীর লোকজনই তা করে দিবে। তাছাড়া কোচগুলোর ২৪ মাস ওয়ারেন্টি আছে। এর মধ্যে কোনো কিছু বিকল বা নষ্ট হলে তা কোম্পানীর খরচেই সচল বা মেরামত করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন