রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী ঠেকাতে : পৌর বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আ’লীগের

প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী ঠেকাতে বিগত পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
এ লক্ষ্যে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারী ও তাদের সহযোগিতাকারীদের প্রতি কারণ দর্শাও নোটিশ পাঠাতে শুরু করেছে দলটি। চিঠিতে কারণ দর্শানোর পাশাপাশি সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গতকাল রোববার এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের
বৈঠকে উপস্থিত নেতারা জানান, পৌর নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এ মর্মে দলের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত কারণ দর্শাও নোটিশ পাঠানো শুরু হয়েছে। এতে চিঠিপ্রাপ্তির ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ারও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ উপযুক্ত জবাব দিতে না পারলে দল থেকে চূড়ান্ত বহিষ্কার করা হবে। আর যারা কোনো জবাব দেবেন না তাদের ক্ষেত্রে বহিষ্কার আদেশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে।
গত ৯ জানুযারি দলটির কার্যনির্বাহী বৈঠকে এ-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর আগে পৌর নির্বাচনের সময় দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গকারীদের সাময়িক বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
সম্পাদকমন্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারা প্রার্থী হয়েছিলেন এবং সেই সকল প্রার্থীকে যারা সহযোগিতা করেছেন, তাদেরও কারণ দর্শাও নোটিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের রিপোর্ট আমলে ধরা হবে।
তিনি জানান, সংসদ সদস্য, জেলা, উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ের যে সকল নেতা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন ও দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে অন্যের প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন শিগ্গিরই তাদেরকেও কারণ দর্শাতে বলা হবে।
বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেন, দলের গঠনতান্ত্রিক নিয়ম অনুযায়ী কাউকে দল থেকে বহিষ্কারের আগে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাতে হয়। যদি কারও শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে দল নিশ্চিতভাবে জানে এবং তার বহিষ্কার অবধারিত হয়, তাদের ক্ষেত্রেও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। যদি কেউ অন্যায় করেন, সেক্ষেত্রে উপযুক্ত জবাব আসে না। ফলে শেষ পর্যন্ত তাদের বহিষ্কারাদেশই কার্যকর হয়।
ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ এ বিষয়ে বলেন, যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছিল তাদের কারণ দর্শাও নোটিশ পাঠানো হচ্ছে।
সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ্ উদ্দিন সিরাজ বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে প্রার্থী হওয়া সিলেট বিভাগের দশজন মেয়র প্রার্থীর নামে কারণ দর্শাও নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে।
জানা গেছে, সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সিরাজুল জব্বার, কানাইঘাটে নিজাম উদ্দিন আল মিজান, জকিগঞ্জে ফারুক আহমেদ, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র প্রার্থী শফি আলম ইউনুছ, বড়লেখায় আবদুল নূর, কমলগঞ্জে জাকারিয়া হাবিব বিপ্লব, সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর পৌরসভায় নুরুল করিম, আবদুল ওয়াহেদ মজনু, হবিগঞ্জ সদর পৌরসভার প্রার্থী মিজানুর রহমান মিজান, শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় আতাউর রহমান মাসুদের নামে ইতোমধ্যে কারণ দর্শাও চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।
দলের দায়িত্বশীল একটি সূত্র দাবি করেছে, পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই দলীয় হাইকমান্ড এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। দলটির সূত্রে জানা যায়, পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৬৫ জনের মতো হবেন। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ২৩৪টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন