শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

হাইকোর্টের রায় থাকায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংস্কার সম্ভব নয় -প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০১৮, ৮:৩৫ পিএম | আপডেট : ৮:৩৬ পিএম, ১২ জুলাই, ২০১৮

হাইকোর্টের রায় থাকায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংস্কার সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের যে কোটা তাতে হাইকোর্টের রায় রয়ে গেছে। যেখানে হাইকোর্টের রায়ে আছে যে, মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সংরক্ষিত থাকবে। তাহলে ওই কোটার বিষয়ে আমরা কীভাবে কোর্টের ওই রায় ভায়োলেট করবো। সেটা তো আমরা করতে পারছি না। এই রায় অবমাননা করে তখনতো আমি কনডেম্প অব কোর্টে পড়ে যাবো। এটা তো কেউ করতেই পারবে না।’
 
বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) দশম জাতীয় সংসদের একুশতম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
 
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে কোটা পূরণ হবে না, কোটার যেটা খালি থাকবে, তা মেধার তালিকা থেকে নিয়োগ হবে। এটা আমরা করে দিয়েছি। গত কয়েক বছর থেকেই এই প্রক্রিয়া চালু রয়েছে।’
 
কোটা আন্দোলনকারীদের মধ্যে যারা ভিসির বাড়িতে ভাঙচুর ও আক্রমণ করেছে তাদেরকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘উশৃঙ্খলা কখনও বরদাস্ত করা যায় না। ভাঙচুরকারীরা ভিসির বাড়ির ক্যামেরার চিপস নিয়ে গেলেও আশেপাশে থাকা ক্যামেরা দেখে তাদের একটা একটা করে খুঁজে বের করা হচ্ছে। যারা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ ও আক্রমণ করেছে, তাদের তো ছাড়া হবে না। তাদেরকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। তদন্ত করা হচ্ছে। অনেকে স্বীকারও করছে। যত আন্দোলনই হোক না কেন, এদের ছাড়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।
 
কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোটা নিয়ে আন্দোলন। এটা কী আন্দোলন নাকি। ঠিক তারা যে কী চায়, বার বার জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, সেটা কিন্তু সঠিকভাবে বলতে পারে না। আজকে আন্দোলন তারা করছে ‍খুব ভালো কথা। বিরোধী দলীয় নেতা বলেছেন, ছেলেপুলে আন্দোলন করতেই পারে। কিন্তু ভিসির বাড়িতে আক্রমণ করে সেখানে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া, গাড়িতে আগুন দিয়ে পোড়ানো, বাড়ি ভাঙচুর করা, বেডরুম পর্যন্ত পৌঁছে ভাঙচুর এবং লুটপাট করা, স্টিলের আলমারি ভেঙে গহনা, টাকাপয়সা সব কিছু লুটপাট করেছে। ভিসির পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে লুকিয়ে থেকে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। এটা কি কোনও শিক্ষার্থীর কাজ? এটা কি কোনও শিক্ষার্থী করতে পারে? কথায় কথায় বলে ক্লাস করবে না। ক্লাসে তালা দেয়, ক্ষতিগ্রস্ত কারা হবে? আমরা সেশনজট দূর করেছি। এদের কারণে এখন আবারও সেই সেশনজট। ১৫ টাকা সিট ভাড়া আর ৩৮ টাকা খাবার, কোথায় আছে পৃথিবীর। আজ নতুন নতুন হল বানিয়েছি। ১৫ টাকা সিট ভাড়া আর ৩৮টাকায় খাবার খেয়ে তারা লাফালাফি করে। তাহলে সিটভাড়া আর খাবারে বাজারদর যা রয়েছে, তাদের তা দিতে হবে। সেটা তারা দিক।’
 
তারা হলের গেট ভেঙে ফেলে দেবে। মধ্যরাতে হল থেকে ছাত্রীরা বেরিয়ে যাবে। আমার টেনশনে আমি বাঁচি না। আমি পুলিশকে, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বলেছি- এই মেয়েদের যেন কোনও ক্ষতি না হয়। ভোর ছয়টা পর্যন্ত জেগে থেকে যার যার হলে পৌঁছে যাওয়ার পর আমি ঘুমাতে গিয়েছি।’
 
তিনি বলেন, ‘বলেছি, কোটা সংস্কার আমরা করবো। আমি তো বলেছি টোটাল কোটা বাদ দিতে। আমরা তো কেবিনেট সেক্রেটারিকে দিয়ে একটি কমিটিও করে দিয়েছি। তারা সেটা দেখছে। তাহলে এদের অসুবিধাটা কোথায়?’
 
এর আগে, কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক বিভ্রান্তি দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। তারা তো আমাদের সন্তান। তারা তো আফদার করবেই। তারা তো চাকরি চাইবে। তাদের চাকরিতে যেমন করে হোক, প্রোভাইড করতে হবে। চাকরি দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে সচেতন আছেন চেষ্টা করছেন। স্পিকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, তিনি যেন সহানুভুতির দৃষ্টি নিয়ে এই বিষয়টি বিবেচনা করেন।
 
এ সময় তিনি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছরে উত্তীর্ণ করার দাবি করেন রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমার বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করবেন। তিনি দেশকে ভালোবাসেন। জাতিকে ভালোবাসেন। তিনি এটা পারবেন। তিনি না করে পারবেন না।
 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন