বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ কিছুটা কমে এলেও রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এখনও বেশ উঁচুতে। এতে করে ঢাকাসহ দেশের অনেক জায়গায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। এবার পহেলা বৈশাখ ১৪২৩ সনের নববর্ষ কেটেছে অসহনীয় গরমে। তবে আকাশে মেঘের আনাগোনা ও বাতাসের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার ফলে গতকাল (শুক্রবার) থেকে খরতাপের দহন কিছুটা কমে এসেছে। আজ-কালের (শনিবার-রোববার) মধ্যে খরতপ্ত আবহাওয়ার উন্নতির পূর্বাভাস দিয়ে আবহাওয়া বিভাগ জানায়, সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং চট্টগ্রাম, রংপুর ও ঢাকা বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সাতক্ষীরা ও যশোরে ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৬ ও ২৭.৮ ডিগ্রি সে.। চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩, সিলেটে ৩০.২, রাজশাহীতে ৩৮.২, রংপুরে ৩১, খুলনায় ৩৮.৬, বরিশালে ৩৫.৩ ডিগ্রি সে.। এ সময় সিলেটে ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সিলেটে ২০ ডিগ্রি সে.।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এ মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং চট্টগ্রাম, রংপুর ও ঢাকা বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ (৪৪ থেকে ৮৮ মি.মি. বৃষ্টিপাত) হতে পারে।
এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। রাজশাহী,পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা মৃদু তাপপ্রবাহ হিসেবে অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্ধিত ৫ দিনে আবহাওয়ার বর্তমান অবস্থার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় রেকর্ড
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে জানান, সপ্তাহ ধরে চলা তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। কোন ভূমিকা বা কাব্যিকতা নয়; প্রচ- গরমে প্রাত্যহিক কাজের সময়সূচী পরিবর্তন করতে হচ্ছে কর্মজীবী মানুষের। গত কয়েকদিনের গড় তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে গতকাল শুক্রবার খুলনায় দেশের সর্বোচ্চ তাপদহ ছিল; ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আপাতত, বর্ষার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর খুলনার ইনচার্জ মোঃ আমিরুল আজাদ। তাই রোদ্রের তীব্রতার মধ্যে বাইরে বের হতে, পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্রমতে, এই তাপদাহ আরও কয়েকদিন চলবে। এ সপ্তাহে বর্ষার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। দুই বছরের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, গতবছর একই পরিস্থিতি ছিল। বৃষ্টি হয়নি। তবে বাতাসে আদ্রতার হেরফের থাকতে রয়েছে। দেশজুড়ে তাপদাহ চলছে। ঢাকা ও সিলেটসহ দেশের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে খুলনাঞ্চলে আপাতত, বর্ষার কোন সম্ভাবনা নেই। মৌসুমী বায়ু’র চাপ পরিবর্তন বা কালবৈশাখী হলে অন্য কথা। তখন হালকা বৃষ্টিপাত হতেই পারে। এরই মধ্যে খুলনা এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনাঞ্চলে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মত।
এ অবস্থায় কী ধরণের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে প্রশ্নে খুলনা শিশু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. প্রদীপ দেবনাথ বলেন, বেশি করে পানি ও শরবত জাতীয় জিনিস পান করতে হবে। খাড়া রোদটাকে এড়িয়ে যাবেন। বিশেষত শিশুদেরকে নিয়ে সকালে এবং সন্ধ্যার পর রোদ কমলে বাইরে হওয়া ভাল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন