শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

হাওর ও উপকূলীয় এলাকায় অপুষ্টি বেশি

লানসা-ব্র্যাকের সেমিনারে তথ্য

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

পরিবারপিছু আয়ও ১৬ শতাংশ কম


দেশের অন্যান্য অঞ্চলে যেখানে খর্বকায় শিশুর সংখ্যা ৩০ দশমিক ৯ শতাংশ, সেখানে হাওরে এই হার ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ। হাওরে কম ওজনের শিশুর হার ৪৪ দশমিক ৫ শতাংশ। অথচ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এই হার ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ। আবার বন্যাপ্রবণ এলাকায় পরিবারপিছু আয় অন্য এলাকার পরিবারের চেয়ে ১৬ শতাংশ কম। জলাবদ্ধতা, লবণাক্ততা ও স্বতন্ত্র ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে হাওর ও উপকূলীয় এলাকায় এ চিত্র লক্ষ্যণীয়।
গতকাল রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পুষ্টি উন্নয়নে কৃষির ভূমিকা’ শীর্ষক সমাপনী সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। আন্তর্জাতিক গবেষণা অংশীদার ল্যাভারেজিং এগ্রিকালচার ফর নিউট্রিশন ইন সাউথ এশিয়া (লানসা) ও ব্র্যাক যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের গবেষণা শাখার অতিরিক্ত সচিব মো. ফজলে ওয়াহিদ খন্দকার। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গর্ভনেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন- এর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন-এর পরিচালক ডা. সমীর কান্তি সরকার, ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের সাবেক পরিচালক প্রফেসর আব্দুল বায়েস প্রমুখ।
সমীক্ষার বিশ্লেষণ তুলে ধরে বলা হয়, গ্রামীণ জনপদে শস্য ও খাদ্যবৈচিত্র্য এবং পুষ্টিমানের বিষয়টি পরস্পর ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কিত। দেখা যায়, খাদ্যবৈচিত্র্য ও পুষ্টিমানের দিকে লক্ষ্য রেখে উৎপাদন বাড়ালে কম ওজনের জনসংখ্যার হার হ্রাস পেতে থাকে। অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি বক্তারা পুষ্টি নিশ্চিতকরণে বৈচিত্র্যময় খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহী করে তোলার জন্য সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানান।
ফজলে ওয়াহিদ খন্দকার বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই লক্ষ্য অর্জন ও সামগ্রিক উন্নয়নে প্রক্রিয়ায় আমাদের কৃষি হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই মুহূর্তে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব, শ্রমিক দুষ্প্রাপ্যতা, বন্যা ও আকস্মিক বন্যা, শিলা বৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস ও অন্যান্য প্রাকৃতিক কারণে বাংলাদেশের কৃষি বড় ধরণের চ্যােেলঞ্জের মুখে।
তিনি বলেন, কৃষি আমাদের সরাসরি খাদ্য ও পুষ্টির সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই আমরা এখন টেকসই কৃষি ব্যবস্থা ও পুষ্টি নিরাপত্তার দিকে লক্ষ্য রেখে বিশেষভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তবে এ লক্ষ্যপূরণে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশে লানসার কার্যক্রম নিয়ে সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন এর কনসালট্যান্ট ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো বর্ণালী চক্রবর্তী। এছাড়া ‘কৃষি ও পুষ্টি : বাংলাদেশে খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কার্যক্রম’ নিয়ে আরেকটি বিশ্লেষণ তুলে ধরেন সংস্থাটির সিনিয়র পুষ্টিবিদ ড. ললিতা ভট্টাচার্য। সেমিনারে ব্র্যাকের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মসূচি নিয়ে আরও একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি প্রধান ডা. মাহফুজা রিফাত।
অনুষ্ঠানে দরিদ্রদের পুষ্টি নিশ্চিতকরণে বেশ কিছু করণীয় বিষয় তুলে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে: স্কুল নিউট্রিশন কর্মসূচি, দুধ পানকে আরও উৎসাহিত করা এবং খাদ্য গুদামজাতকরণের দিকে অধিকতর মনোযোগী হওয়া। বক্তারা পুষ্টি উন্নয়নে দুর্গম এলাকা ও ভৌগলিক অবস্থানভেদে এবং দরিদ্রদের জন্য বিশেষ ধরণের কর্মসূচি নেওয়ার সুপারিশ করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন