স্টাফ রিপোর্টার : সুপরিচিত সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক পাতায় একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, মি. রেহমান অপহরণ ও হত্যার চেষ্টা যুক্ত থাকার মাধ্যমে সাংবাদিক থেকে পেশা বদলে অপরাধী হয়ে গিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ডিবি পুলিশ শনিবার সকালে ইস্কাটনের বাসা থেকে সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করে। আর সজীব ওয়াজেদ তার এই স্ট্যাটাসটি লেখেন রাতে। ফেসবুকে এই স্ট্যাটাসটি প্রকাশ করার পর রবিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় পৌনে ৫শ’ বার এটি শেয়ার হয়েছে।
ইংরেজি ও বাংলা দুই ভাষাতেই তিনি তার এই স্ট্যাটাসটি লিখেছেন। তিনি বলেছেন, যখন আপনি অপহরণ ও হত্যার চেষ্টায় যুক্ত হবেন তখন আমার বিশ্বাস আপনি আপনার পেশার ধরণ পরিবর্তন করে সাংবাদিক থেকে অপরাধী হয়ে গিয়েছেন। বিএনপি এসব কাজের জন্য একটি মধ্যবর্তী পেশার কার্যধারা পরিচালনা করে।
স্ট্যাটাসের শুরুতে সজিব ওয়াজেদ জয় লেখেন, কত হরহামেশা আপনি এমন কোন লোককে পাবেন যে আপনাকে হত্যার চেষ্টা করছে? আমার ক্ষেত্রে, আপাতদৃষ্টিতে আমার জানার বাইরেও এটা প্রায়শই হচ্ছে। আমি অপরাধী বা কোন খারাপ মানুষও নই যে এমনটা হবে। এটা শুধু এজন্য ঘটছে যে আমার মা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আছেন এবং আমি সময়ে সময়ে তাঁকে সাহায্য করি।
‘যুক্তরাষ্ট্রে আমাকে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে সিনিয়র সাংবাদিক ও বিএনপি নেতা শফিক রেহমানকে আজ আমাদের সরকার গ্রেফতার করেছে। একজন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতার ছেলে, একজন সাবেক এফবিআই এজেন্ট এবং এই দু’জনের অন্য একজন আমেরিকান বন্ধু এরা সবাই এই ষড়যন্ত্রের কারণে সাজা ভোগ করছে’ লিখেছেন জয়।
শেষ পর্যন্ত ইমরান এইচ সরকারের আসল চেহারাটা উন্মোচিত হলো
ফেসবুক স্ট্যাটাসে সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার ইস্যুতে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারকে ‘সুবিধাবাদী ও মিথ্যাবাদী’ বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি ইমরান সরকারকে ক্ষমা চাইতে বলেন।
জয় লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস আমাকে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রে শফিক রেহমানের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা উদ্ঘাটন করেছে। তারা এ বিষয়ে প্রমাণাদি আমাদের সরকারের কাছে দিয়েছে। তাঁকে এই প্রমাণের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি এর চেয়ে বেশি কিছু প্রকাশ করতে পারছি না। কিন্তু এই প্রমাণ দ্ব্যর্থহীন এবং অখ-নীয়।’
ইমরান এইচ সরকার প্রসঙ্গে জয় বলেন, ‘আমি আশাই করেছিলাম বিএনপি এটা নিয়ে মিথ্যা বলার চেষ্টা করবে। যদিও, আমি আশ্চর্য হয়েছি ইমরান সরকারের বিষয়ে। সম্ভবত শেষ পর্যন্ত তার আসল চেহারাটা উন্মোচিত হলো। এটা দেখে মনে হচ্ছে, সে আমাদের বেশির ভাগ সুশীলের মতোই, আরেকটা সুবিধাবাদী এবং মিথ্যাবাদী। হয়তো বিএনপি তাকে পয়সা দিয়েছে। কে জানে? যেভাবেই হোক, আমি তার প্রতি সব শ্রদ্ধা হারিয়েছি। তাকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে আমাদের সরকারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আমি আমার সকল বন্ধু এবং ভক্তদের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, যারা তাকে অনুসরণ করেন তারা তাকে ফেসবুক থেকে আনফলো/আনফ্রেন্ড করুন। সে একজন অপরাধীর হয়ে কথা বলছে যে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।’
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার রাতে ইমরান এইচ সরকার তার ফেসবুক পাতায় লেখেন, ‘প্রবীণ (৮১ বছর বয়সী) সাংবাদিক শফিক রেহমানের গ্রেপ্তার ও রিমান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। শফিক রেহমানের রাজনৈতিক আদর্শের সাথে আমি একমত নই। ভিন্নমতের হলেই তাকে দমন করার যে নোংরা রাজনৈতিক অপকৌশল, এর একটা অবসান চাই।’
প্রতিপক্ষকে দমনের চেয়ে দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের দিকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বানও করেন তিনি তার স্ট্যাটাসে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন