মেহেরপুর জেলা সংবাদদাতা : জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, আজকের এই দিনটা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। কেউ বলেন বিপ্লবী সরকার কেউ বলেন অস্থায়ী সরকার। কিন্তু আসলে এটা বাংলাদেশের প্রথম সরকার। গতকাল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আজ থেকে ৪৫ বছর আগে এই আম্রকাননে প্রথম সরকার শুধু শপথ গ্রহণ করেনি, সঙ্গে সঙ্গে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ঘোষণা করেছিলেন। এই স্বাধীনতার ঘোষণা হলো আমাদের সংবিধানের মূল অধ্যায়। যা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের আইনসিদ্ধ ভিত্তি গড়ে দেয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশের সংবিধান ওই ঘোষণাপত্রের আলোকেই তৈরী করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বিএনপি-জামায়াত মুজিবনগর দিবস পালন না করাকে জাতির জন্য দুর্ভাগ্য বলে উল্লেখ করেন। বিএনপি-জামায়াতকে ইঙ্গিত করে তিনি আরো বলেন, তারা দেশপ্রেমের কথা বলে। অথচ মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। এই দেশের সূর্য সন্তানদেরকে তারা হত্যা করেছিল। তারা মা-বোনদের সম্ভ্রম নষ্ট করেছিল এবং মুক্তিকামী মানুষের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিল। তাদেরকে রুখে দেওয়ার শপথ হোক আজকের এই দিবসের শপথ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে এদেশের মানুষকে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখিয়েছে। বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে দেশ। মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল সে সরকারগুলো বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস করে দিয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত একটি দুর্নীতিবাজ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করেছিল বলে অভিযোগ করেন হানিফ।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী অ্যাড. বীরেন শিকদার, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রী কর্ণেল (অব) ফারুক খান, বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব) এবি তাজুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও হুইপ সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার সেলনু, মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন দোদুল, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছদর উদ্দীন, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
এর আগে জাতীয় চার নেতাসহ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার প্রতি সম্মান জানিয়ে মুজিবনগর স্মৃতি সৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন আওয়ামীলীগের নেতারা। পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে জাতীয় সঙ্গীতের সুরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে বিজিবি, পুলিশ, আনসার সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা, স্কাউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছেলে-মেয়েরা প্যারেড প্রদর্শন করে। এ সময় অতিথিরা তাদের সালাম গ্রহণ করেন। সালাম গ্রহণ শেষে হে তারুণ্য তুমি দাঁড়াও শিরোনামে সঙ্গীত পরিবেশন করেন আনসার ভিডিপির শিল্পীরা। বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন দেশ বরেণ্য শিল্পীবৃন্দ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন