সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পাল্টাবে দোহারের চিত্র

০ দোহারে পদ্মা ড্রেজিং ও তীর রক্ষায় ১৪৮৩ কোটি টাকার প্রকল্প

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

০ পদ্মা সেতুর কাছাকাছি হওয়ায় এলাকায় উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে : পরিকল্পনামন্ত্রী
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : পদ্মার ড্রেজিং এবং তীর রক্ষা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পাল্টে যাবে দোহারের চিত্র। দোহার হবে ভ্রমন পিপাসুদের জন্য আকর্ষণীয় স্পট। এতে স্থানীয়দের কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হবে। রাজধানীর অদূরে এবং পদ্মা সেতুর কাছাকাছি নদী তীর এলাকাটির মানুষের শত বছরের ‘নদী ভাঙ্গন’ থেকে চিন্তামুক্ত এবং জীবনযাত্রা উন্নত হবে; যোগাযোগ থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘটবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এ লক্ষ্যে দোহার উপজেলার মাঝিরচর থেকে নারিশাবাজার হয়ে মোকসেদপুর পর্যন্ত পদ্মা নদী ড্রেজিং ও বাম তীর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। দোহার এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১ হাজার ৪৮৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। এই প্রকল্পের আওতায় ৬ হাজার মিটার নদী তীর সংরক্ষণ, ৪২২ দশমিক ৫৫ মিটার এন্ডটার্মিনেশন এবং ২৪ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ওই এলাকায় অবস্থিত বসতবাড়ি, হাইওয়ে, রাস্তা-ঘাট, মাদরাসা-মসজিদ ও ফসলী জমিসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা বা সম্পদ পদ্মা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা এবং ভ‚মি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে সূত্র জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দোহার এলাকাটি পদ্মা সেতুর কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় এ এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। পদ্মা নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা হলে প্রায় ২০ কিলোমিটার নতুন ভ‚খÐ পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে ড্রেজিং যে অর্থ ব্যয় হবে তা উঠে আসবে। উদ্ধার হওয়া এই জমি অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ঢাকার দক্ষিণে দোহার উপজেলায় পদ্মা নদীর বামতীরে অবস্থিত। পদ্মার বামতীর বরাবর প্রচÐ ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় ইতোমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ অনেক এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বা হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা-দোহার মহাসড়ক হিসেবে ব্যবহƒত ঢাকা দক্ষিণ-পশ্চিম বাঁধ কাম রাস্তাসহ প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা, মার্কেট এবং কৃষি জমিসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নদী ভাঙ্গনের সম্মুখীন। এ সমস্যা সাধানে ২০১১ সালে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করা হয় এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে সমীক্ষা প্রতিবেদন হালনাগাদ করে। সে প্রেক্ষিতে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হলে তা অনুমোদন লাভ করে।
আইডবিøউএম’র সমীক্ষা প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, আওরঙ্গবাদ হতে ব্রাহা বাজার পর্যন্ত ৩ দশমিক ৫০০ কি. মি., মাঝিরচর হতে মোকসেদপুর পর্যন্ত ৭ দশমিক ৫০০ কি. মি., বাঘরা বাজার হতে যশোলদিয়া পর্যন্ত ৬ কি. মি. এবং যশোলদিয়া হতে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর নদী শাসন কাজ পর্যন্ত ২ কি. মি. সহ মোট ১৯ কি. মি. নদী তীর সংরক্ষণ কাজের সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকার মধ্যে ২ হাজার ৩৭৫ মিটার অস্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজ করা হয়েছে এবং উজানে আওরঙ্গবাদ হতে ব্রাহা বাজার পর্যন্ত ৩ দশমিক ৫০ কি. মি. নদীর তীর সংরক্ষণের জন্য একটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। আলোচ্য প্রকল্পে ৬ কি. মি. তীর প্রতিরক্ষা কাজ ও ২৪ দশমিক কি. মি. ড্রেজিং কাজ প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পটি পদ্মা সেতুর ৪ কি. মি. উজান হতে ২৮ কি. মি. উজানে অবস্থিত। এ এলাকায় নদীর গড় প্রস্থ ১০ কি. মি.। তাই নদীকে ৫/৬ কি. মি. এর মধ্যে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ২৪ কি. মি. ড্রেজিং কার্যক্রম প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে ড্রেজড মেটেরিয়াল নদীর দু’পাড়ে ফেলে ভূমি পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রায় ২৫ বর্গ কি. মি. (২৫শ’ হেক্টর) ভূমি পুনরুদ্ধার করা হবে। পদ্মা নদীর হাইড্রোলজিক্যাল ও মরফোলজিক্যাল স্টাডি বিবেচনায় নিয়ে ফিজিক্যাল ও ম্যাথমেটিক্যাল মডেলিং এর মাধ্যমে ড্রেজিং এর পরিমাণ, এ্যালাইনমেন্ট ও ড্রেজড মেটেরিয়াল ডাম্পিং এরিয়া নির্ধারণ করা হবে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, বিআইডবিøউটিএ এবং পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে ড্রেজিং কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ওপর গত ২৩ জুলাই এবং ২ আগস্ট প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি)’র দু’টি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন