খুলনা শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর জন্য দুটি সার্ভে ভেসেল-এর নির্মাণ কাজের সূচনা হচ্ছে আজ। সহকারি নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার এডমিরাল এম সফিউল আজম এনইউপি, এনডিসি, পিএসসি-বিএন দুপুরে শিপইয়ার্ডের সবুজ চত্তরে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে কিললে’র মাধ্যমে এসব জরিপ নৌযানের নির্মাণের কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। শিডইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর এম আনিসুর রহমান মোল্লা (এল) এনইউপি, পিএসসি-বিএন’এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণসহ প্রতিষ্ঠনটির জিএমগণও উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। দেশে এ ধরনের জরিপ নৌযান নির্মাণের ফলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।
দেশের আভ্যন্তরীণ ও উপক‚লভাগে সমর নৌযানসমূহের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নৌবাহিনীর জন্য দুটি জরিপ বোট নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। অষ্ট্রেলিয়ার ডিজাইন হাউজ ‘গ্লোবাল মেরিন’এর নকশায় এসব নৌযানের নির্মাণ তদারকি করবে ফ্রান্সের ‘ব্যুরো ভেরিটাস’।
প্রায় ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৮ ফুট প্রস্থ এসব জরিপ নৌযানগুলোতে আমেরিকার ‘কামিন্স ব্রান্ডের ৩০৫ অশ্ব শক্তির দুটি করে মূল ইঞ্জিন ছাড়াও ২২ দশমিক ৫০ কিলোওয়াটের ১টি করে জেরাটেরও থাকছে। জরিপ নৌযানগুলো ১৭.৫ টন পানি অপসারণ করে ঘণ্টায় ১৬ নটিক্যাল মাইল বা ২৯ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম হবে। এসব নৌযান এক নাগাড়ে ৪১৫ নটিক্যাল মাইল নৌপথ অতিক্রম ও জরিপ সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে বলেও জানা গেছে।
প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব সার্ভে ভ্যাসেলে বিশ্বের অত্যাধুনিক জরিপ সরঞ্জাম সংযোজন করা হচ্ছে। ‘মাল্টি ডিভাইস ইকোসাউন্ডার, সাউন্ড ভেলোসিটি প্রফাইলার, নেভিগেশনাল রাডার, ম্যাগনেটিক রাডার, জিপিএস রাডার এবং ইকোসাউন্ডার’ সমৃদ্ধ এসব নৌযানগুলোর মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীন ও উপক‚লীয় নৌপথ সমুহে নির্ভূল জরিপ সম্ভব হবে বলে জানা গেছে। যার মাধ্যমে নৌবাহিনী ছাড়াও কোষ্ট গার্ডসহ সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক নৌযানের জন্যও নিরাপদ নৌপথ নিশ্চিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
খুলনা শিপয়ার্ড ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য ৫টি পেট্রোল ক্রাফট নির্মাণের পরে দুটি বড়মাপের যুদ্ধ জাহাজও নির্মাণ সম্পন্ন করেছে। ইতোমধ্যে এসব সমর নৌযান কমিশনিং করা হয়েছে। এছাড়াও এখানে নৌ বাহিনীর জন্য দুটি সাবমেরিন টাগ’ও নির্মিত হয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ এ নৌ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটিতে বাংলাদেশ সেনা বাহিনী, নৌ বাহিনী ও কোস্ট গার্ডের জন্য একাধিক সমর নৌযান ছাড়াও আধা সামরিক নৌযানের নির্মাণ কাজ চলছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য কান্টেইনার ভেসেল, অয়েল টাংকার, কার্গো ও যাত্রীবাহী নৌযানও নির্মাণ করেছে।
খুলনা শিপইয়ার্ড গত অর্থ বছরে প্রায় সোয়াশ’ কোটি টাকার করপূর্ব মুনফা অর্জন করেতে সক্ষম হয়। এসময়ে প্রতিষ্ঠানটির টার্ণওভার ছিল প্রায় সাড়ে ১১শ’ কোটি টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন