স্টাফ রিপোর্টার : ধর্মহীন শিক্ষানীতি, পাঠ্যসূচি এবং সেক্যুলার শিক্ষা আইনের প্রতিবাদ করেছেন জাতীয় কুরআন শিক্ষা মিশন ও হক্কানী তরীকত ফেডারেশন নেতৃবৃন্দ। গতকাল পৃথক পৃথক বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রবর্তিত পাঠ্যসূচী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে মুসলিম পরিচয় ভুলিয়ে দেবে। এ পাঠ্যসূচি গভীর চক্রান্তমূলক। এ পাঠ্যসূচী প্রণয়নকারীদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।
বাংলাদেশ জাতীয় কুরআন শিক্ষা মিশন
বর্তমান সিলেবাস ও পাঠ্যসূচি মাধ্যমে এদেশের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদেরকে মুসলিম পরিচয় ভুলিয়ে হিন্দুধর্মে প্রবেশ করানো হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! -জাতীয় কুরআন শিক্ষা মিশন সভাপতি লায়ন আলহাজ আবু বকর সিদ্দিক নেতারা গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ১ম শ্রেণীর ‘আমার বাংলা বই’তে কৌশলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে হিন্দুত্ববাদ। অক্ষর পরিচয় করতে গিয়ে ঋষি, ওঝা, হিন্দু ঢাক, হিন্দুদের রথ, বাউলদের একতারা এ টার্মগুলো শেখানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, এদেশের মুসলমান কোমলমতি শিশুরা চতুর্থ শ্রেণীর ‘আমার বাংলা বই’য়ের অন্তর্ভুক্ত, হিন্দু কবি অন্নদাশঙ্কর রায়ের লেখা ‘নেমন্তন্ন’ কবিতা ছোটবেলা থেকে শিখছে যে, হিন্দুদের ন্যায় ‘বাবু’ বলে একে অপরকে সম্বোধন করতে হবে, সাথে সাথে ‘ভজন’ তথা হিন্দুদের ধর্মীয় সঙ্গীত শুনতে হবে। নাউযুবিল্লাহ! শুধু তাই নয়, মন্দিরের ‘প্রসাদ’ও ভজন করতে হবে। নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক!
তিনি আরো বলেন, হিন্দুত্ববাদ শেখাতে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা প্রথমপত্র পাঠ্যবই ‘সাহিত্য কণিকা’র ১৬ পৃষ্ঠায় কিছু শব্দার্থ হচ্ছে এভাবে; নাটমন্দির-দেবমন্দিরে সামনের ঘর যেখানে নাচ-গান হয়। বোষ্টম-হরিনাম সংকীর্তণ করে জীবিকা অর্জন করে এমন বৈষ্ণব। কাপালি-তান্ত্রিক হিন্দু সম্প্রদায়। চন্ডিম-প- যে ম-পে বা ছাদযুক্ত চত্বরে দুর্গা, কালী প্রভৃতি দেবীর পূজো হয়। দন্ডবৎ- মাটিতে পড়ে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম। নাউযুবিল্লাহ! অর্থাৎ ছোটবেলা থেকেই কোমলমতি শিশুদের হিন্দুত্ববাদে দীক্ষা দেয়া হচ্ছে।
বর্তমান সিলেবাস ও পাঠ্যসূচির মাধ্যমে এদেশের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের হিন্দুত্ববাদ শিক্ষা দেয়া গভীর ষড়যন্ত্রমূলক। পাঠ্যপুস্তকে হিন্দুত্ববাদ ঢুকানোর হোতাদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।
হক্কানী তরীকত ফেডারেশন
ইসলাম ধর্মের প্রতি যাদের কোন আস্থা বা বিশ্বাস নেই বরং ইসলামবিদ্বেষী এমন সব বামপন্থী ব্যক্তিদের দ্বারা শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এদেশের মুসলমানদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। গতকাল হক্কানী ত্বরীকত ফেডারেশনের সভাপতি কাজী আহমদুর রহমান ও মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা শামসুল ইসলাম, মাওলানা মুহিউদ্দিন নূরী একযুক্ত বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ইসলাম ধর্মের প্রতি যাদের কোন আস্থা বা বিশ্বাস নেই বরং ইসলাম ধর্মবিদ্বেষী এমন সব বামপন্থী ব্যক্তি; জাতীয় শিক্ষানীতি কমিটির চেয়ারম্যান কবীর চৌধুরী, কো-চেয়ারম্যান ড.কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, সদস্য ড. জাফর ইকবাল, অধ্যাপক নিতাই চন্দ্র সূত্র ধরদের দিয়ে শিক্ষানীতি প্রণয়ণ করা হয়েছে। অথচ এসব কট্টর ইসলামবিদ্বেষী ব্যক্তিদের প্রণীত শিক্ষানীতি মুসলমানদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। তারা মূলত এদেশের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের মন-মগজ থেকে দ্বীন ইসলাম উঠিয়ে দিয়ে নাস্তিক্যবাদী মন-মনন গড়তে এ শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে। এদেশকে নাস্তিক্যবাদী দেশ বানাতে এই ইসলামবিরোধী শিক্ষনীতি তৈরী করেছে।
দ্বীন ইসলামকে কটাক্ষ করে লেখালেখি করে এদেশের জাতীয় পর্যায়ে যেসব চিহ্নিত ইসলামবিদ্বেষী লেখক রীতিমতো কুখ্যাতি অর্জন করেছে, তাদের লেখা পাঠ্যবইয়ের প্রত্যেক শ্রেণীতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। যেমন কুখ্যাত ইসলামবিদ্বেষী ও নাস্তিক হুমায়ূন আজাদ, তসলিমা নাসরিনের স্বামী রুদ্র শহীদুল্লাহ, সেলিনা হোসেন, সনজীদা খাতুন, কবীর চৌধুরী এবং এরকম আরো অনেকে। যা এদেশের মুসলমানদের কাছে কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই অবিলম্বে ইসলামবিদ্বেষীদের প্রণীত শিক্ষানীতি বাদ দিয়ে বর্তমান সিলেবাস ও পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন