শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আ’লীগের বিদ্রোহীদের কাঁধে ভর করে বিএনপি গোলযোগের চক্রান্তে লিপ্ত -হানিফ

ষড়যন্ত্রের কারণেই শফিক রেহমান গ্রেফতার

প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের কাঁধে ভর করে বিএনপি গোলযোগ সৃষ্টি করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ।
গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
হানিফ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য শুরু থেকেই বিএনপি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নিয়েছিল। নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী বাছাই ও মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রেও তাদের কোনো আগ্রহ নেই। এ কারণে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের একাধিক যোগ্য লোক থাকায় বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। আর বিএনপি এ বিদ্রোহীদের কাঁধে ভর করে নির্বাচনে গোলযোগ সৃষ্টির চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
তৃতীয় ধাপে ৬১৪ টি ইউনিয়নে ৫৫২৬ টি কেন্দ্রে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, এতগুলো কেন্দ্রের মধ্যে ২-১টি স্থানে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এটি খুবই নগণ্য। যা শূন্য শতাংশের মধ্যেই আসে বলেও জানান তিনি।
সাংবাদিক শফিক রেহমানকে প্রধানমন্ত্রী পুত্র জয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাসের কারণে আটক করা হয়েছেÑ শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব উল-আলম হানিফ বলেন, এ অভিযোগ আমরা তুলিনি। এফবিআই এর তদন্তে বেরিয়ে এসেছে মাহমুদুর রহমান ও শফিক রেহমানের নাম। শফিক রেহমান এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত না থাকলে তার বাসা থেকে এফবিআই-এর কাগজ থাকবে কেন বলেও প্রশ্ন করেন তিনি।
তিনি বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে তথ্য যখন বেরিয়ে আসছে, আইনের আওতায় যখন তাদের আনা হয়েছে, তখন বিএনপি নেতারা জনগণের দৃষ্টি ফেরাতে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। তবে আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, এর সঙ্গে বিএনপির আর কে কে জড়িত রয়েছেন তাও বের করা হবে। তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রমাণ হলেই সাজা হবে। ভবিষ্যতে যেন আর কেউ এমন কিছু করার দুঃসাহস না দেখায় বলেও জানান তিনি।
‘নির্বাচনী কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্ব কমিশনের না’ ইসির এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, এটি সঠিক না। কেন্দ্রের ভেতর ও বাইরের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব তাদের।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমরা সমর্থন করি না। আমরা চাই সব পেশাজীবীরা নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন করুক। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেব। যদি কাউকে কেউ হয়রানি করে থাকেন, তাহলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবাহান গোলাপ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, কেন্দ্রীয় সদস্য এনামুল হক শামীম, এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।
এদিকে একই দিন দুপুরে এক সংবর্ধনা সভায় মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, শফিক রেহমানকে কোনো লেখার জন্য গ্রেফতার করা হয়নি। তিনি গত ১০ বছর কোথাও সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এমন তথ্যও আমাদের কাছে নেই। তাকে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র জয়কে অপহরণ করে হত্যা করার ষড়যন্ত্রের যড়যন্ত্রকারী হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদি কেউ কাউকে খুনের ষড়যন্ত্রে যুক্ত হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না?
রাজধানীর শওকত ওসমান মিলনায়তনে ঢাকা মিডিয়া ক্লাব লিমিটেডের এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দক্ষিণ ও উত্তরের নবনির্বাচিত দুই সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান ও শাহে আলম মুরাদকে সংবর্ধনা দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
হানিফ বলেন, মাহমুদুর রহমান কোনদিন সাংবাদিক ছিলেন না। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে তিনি একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন, বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার পর তিনি আমার দেশে বসে ষড়যন্ত্র শুরু করলেন।
তিনি বলেন, তিনি আমার দেশে বসে হেফাজতের সঙ্গে ৮০ কোটি টাকা লেনদেন করেছিলেন, সারা ঢাকাকে অচল করে দিতে। তিনি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিলেন মানুষ হত্যার। হানিফ আরও বলেন, কিন্তু তাদের ধরা যাবে না? সাংবাদিক হলে কি তিনি আইনের উর্ধ্বে? যারা তাদের জন্য মায়াকান্না করছেন তাদের অনুরোধ করবো, ষড়যন্ত্রকারী, হত্যা, খুনের চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধ অবস্থান নেন। তাহলে জনগণের কাছে বার্তা যাবে যে, কেউ চক্রান্তকারীদের সঙ্গে নেই। কিন্তু তাদের পক্ষ নেবেন, এটা জাতি চায় না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বাংলাদেশে আগে মাথাপিছু আয় ছিল ৮০০ ডলার, আমরা ক্ষমতায় আসার পর হয়েছে ১৪০০। এটি কোন ম্যাজিক নয়, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক বড় দল, অনেক মতভেদ থাকবে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এক হয়ে কাজ করলে বাংলাদেশ সক্ষমতায় বিশ্বের শীর্ষ থাকবে। তাই নিজেদের (দলীয় নেতাকর্মী) মধ্যে ঝগড়া বন্ধ করে দলকে শক্তিশালী করার পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বলেন, বিএনপি চক্র আজ শেখ হাসিনার পুত্রকে অপহরণ করে খুন করতে চায়। আমরা বলে দিতে চাই, যদি এমন চক্রান্ত করতে চান, তাহলে ঢাকা মহানগরে বিএনপির কোন নেতাকর্মী বাসায় থাকতে পারবেন না। কারণ রক্তের জবাব রক্তের মাধ্যমেই দেয়া হবে।
ঢাকা মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি অভি চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাবান মাহমুদ প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন