শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বর্তমান পাঠ্যসূচি শিক্ষার্থীদের ব্যভিচারিতার দিকে ধাবিত করছে -ইসলামী নেতৃবৃন্দ

প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমান পাঠ্যসূচিতে ব্রতচারী শিক্ষা ও রঙ্গমঞ্চ প্রতিষ্ঠার বিষয় সন্নিবেশিত হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষার নামে ছাত্র ছাত্রীদের যৌনতা শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এভাবে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ব্যভিচারিতার দিকে ধাবিত করা হয়েছে। এ পাঠ্যসূচি কোনভাবেই বরদাশত করা হবে না। পাঠ্যসূচিতে সংযোজনকারী ও অনুমোদনকারীদের চাকরিচ্যূত করে গ্রেফতারের মাধ্যমে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিভিন্ন ইসলামী নেতৃবৃন্দ গতকাল পৃথক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন।
বাংলাদেশ ফেৎনা প্রতিরোধ কমিটি
প্রচলিত শিক্ষানীতির আলোকে প্রণীত পাঠ্য বইয়ে প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষার নামে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রকাশ্যে যৌনতা শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। যা দ্বারা গোটা দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাভিচারিতার দিকে ধাবিত করানো হচ্ছে। গতকাল বাংলাদেশ ফেৎনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আলহাজ মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ি, সাধারণ সম্পাদক- হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার এক যুক্ত বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষার নামে গোটা দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যাভিচারিতা লিপ্ত করার নিরিখে পরিকল্পিতভাবে ইহুদী নাছারা ও হিন্দুত্ববাদীরা পরিকল্পিতভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করার ষড়যন্ত্রে মতে উঠেছে। অশ্লীলতাকেও উস্কে দেয়া হচ্ছে। ফলে নারীটিজিং, ধর্ষণ, তনু হত্যার মতো ঘটনা বেড়েই চলেছে। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর আলোকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের জন্য প্রণীত পাঠ্যবইয়ে রয়েছে অশ্লীলতা ও যৌনতার ছড়াছড়ি। জাতীয় শিক্ষানীতি আইন প্রনয়ণে ষষ্ঠ থেকে নবম-দশম শ্রেণি পর্যন্ত ‘শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য’ অষ্টম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ পাঠ্য বইতে অশ্লীলতা, প্রজনন ও যৌনতা বিষয়কে অত্যন্ত খোলামেলা উপস্থাপন করা হয়েছে। একাধিক বইতে বয়ঃসন্ধিকাল, প্রজনন শিক্ষা, কিশোর অপরাধ প্রতিরোধের আড়ালে ব্লু-ফিল্ম, অনিরাপদ যৌন-আচরণ, পর্ণোগ্রাফী ও যৌন বিষয় অত্যন্ত খোলামেলাভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
তাছাড়াও বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে শিক্ষা চর্চার নামে যৌন ও অশ্লীলতার যে বিষয়গুলো বিভিন্ন অধ্যায়ের শিরোনামে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে সে ভাষাগুলো ভাষায় প্রকাশ করা মত নয় বিধায় পাঠ চারণ থেকে এরিয়ে গেলাম। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশকে ইহুদী নাছারা ও হিন্দুবাদীরা পরিকল্পিতভাবে অশ্লীলতা বেহায়াপনা ও উলঙ্গপনায় ছড়িয়ে দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে মুসলিম দেশ তথা বাংলাদেশের’ তথা মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের কলঙ্কের কালিমা লেপনের ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
এছাড়া ও প্রচলিত শিক্ষানীতিতে চারুকলার নামে নৃত্য-যাত্রা-সিনেমা-হিন্দুদের ব্রতচারী শিক্ষা চালু করা হয়েছে। সঙ্গীত, নাটক, নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন ও নৃত্য একাডেমি, নাট্য ও রঙ্গমঞ্চ প্রতিষ্ঠা করা বাঞ্ছনীয় করা হয়েছে। যা দ্বারা মূলত কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনায় ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
এ থেকে পরিত্রাণ পেতে অবিলম্বে বিতর্কিত শিক্ষানীতি বাতিল করে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করতে হবে। পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তক অশ্লীল বিষয় সংযোজনকারী ও অনুমোদনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ৯৫ ভাগ মুসলমানকে হিন্দুত্ব শিখানোর ষড়যন্ত্রের মুলে রয়েছে শিক্ষানীতি প্রণয়নকারী নীতিনির্ধারকগণ।
জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলূম
দেওবন্ধ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস হযরত মাও. কামারুদ্দিন গৌরবপুরী বলেছেন, চলমান বদদ্বীনি শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজকে ক্রমাগত অন্ধকারে নিমজ্জিত করছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ইসলাম ধর্মভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থাই একমাত্র পথ। জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলূম নতুনবাগ মাদরাসায় বুখারি শরীফ পাঠ শেষে আলোচনা কালে তিনি একথা বলেন। আলোচনায় বক্তাগণ বলেন, বর্তমান পাঠ্যসূচিতে যে ভাবে হিন্দুত্ববাদ প্রবেশ করানো হয়েছে তাতে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীরা ইসলাম থেকে দূরে সরে কুফরী শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। আগামী প্রজন্মকে এভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে সকলকে বর্তমান পাঠ্যসূচি ও সেক্যূলার শিক্ষা আইন বাতিল করে ইসলাম ধর্মভিত্তিক পাঠ্যসূচি ও শিক্ষা আইনের প্রবর্তন করতে হবে। অনুষ্ঠানের শেষে বিশেষ দোয়া করেন প্রধান অতিথি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নির্বাহী সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস। সভাপতিত্ব করেন হযরত মাও. মহিউদ্দীন ইকরাম। উপস্থিত ছিলেন মুফতি আম্মার আহমদ, মাও. মহিউদ্দীন ও মুফতি রেজাউল করীম প্রমুখ।
-ইসলামী আন্দোলন মহানগর
নাস্তিক্যবাদী জাতীয় শিক্ষানীতি বাতিল করে, শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক রেখে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দীন। তিনি বলেন, পাঠ্যসুচিতে অধিকহারে হিন্দু লেখকদের লেখা সংযোজন এবং ইসলামকে কটাক্ষ করে নাস্তিকদের লেখা সংযোজন করে কৌশলে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের হিন্দুয়ানী ও নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা দেওয়ার চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে পাঠ্যসুচি থেকে নাস্তিক-মুরতাদ এবং হিন্দুয়ানী শিক্ষামূলক বাদ বাতিল করতে হবে। বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে নাস্তিক্যবাদকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠার জন্য তাবৎ ইসলামবিদ্বেষী শক্তিগুলো উঠেপড়ে লেগেছে। তাদের সেই স্বপ্নসাধকে নস্যাৎ করে দিতে ইসলামপন্থি সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
গতকাল বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি আলহাজ আলতাফ হোসেন, সেক্রেটারি মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, মুহা. মোশাররফ হোসেন, এইচ এম সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন