শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

কওমী মাদরাসার বিরুদ্ধে চক্রান্ত ও অপপ্রচার বন্ধ না হলে আন্দোলন -ইসলামী নেতৃবৃন্দ

প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিভিন্ন ইসলামী দল ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, অবিলম্বে কওমী মাদরাসা নিয়ে চক্রান্ত বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলন শুরু হবে। নেতৃবৃন্দ কওমী মাদরাসাবিরোধী দুই মন্ত্রীকে দ্রুত অপসারণ করে সরকারকে কলংকমুক্ত হতে হবে। গতকাল পৃথক পৃথক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেছেন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবীবুর রহমান ও মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেছেন, কওমী মাদরাসায় ইসলামের খুঁটিনাটি বিষয়সহ খালেস দ্বীন শিক্ষা দিয়ে সুনাগরিক তৈরি করা হয়। মাদরাসা শিক্ষিতরা দেশ-জাতি ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী। অথচ এক শ্রেণীর জ্ঞানপাপী কওমী মাদরাসা ও মাদরাসা পড়–য়াদের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে বিষোদগার করে যাচ্ছেন। গত ২১ জানুয়ারিীচট্টগ্রামে খাদ্যমন্ত্রী এ্যাড. কামরুল ইসলাম ও ২২ জানুয়ারি নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য কওমী মাদরাসার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং অপপ্রচারেরই অংশবিশেষ। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নেতৃবৃন্দ বলেন, অবিলম্বে তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার ও জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। তা না করলে এই কুলাংগার দুই মন্ত্রীকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে বরখাস্ত করে সরকারকে কলংকমুক্ত হতে হবে।
ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ
ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের দুই যুগ পূর্তি তথা ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে আয়োজিত আলোচনা সভা ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণাঢ্য র‌্যালিটি দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে প্রেসক্লাব চত্বরে প্র্রদক্ষিণ করে বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেটে এসে শেষ হয়।
কেন্দ্রীয় সভাপতি আলহাজ নাসির উদ্দিন খাঁঁনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত হয়ে জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আল্লামা জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, বর্তমান শিক্ষাঙ্গণকে সন্ত্রাস নৈরাজ্য অশ্লীলতা মুক্ত করাই হবে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য। বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফি, যুব জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরফুদ্দীন ইয়াহহিয়া কাসেমী, মহানগর জমিয়ত নেতা মাও. ইমরানুল বারী সিরাজী, ছাত্র জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মুহাম্মদ ওমর ফারুকসহ প্রমুখ।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আলোচনা সভা থেকে কেন্দ্রীয় জমিয়তের সদস্য সিলেট বিশ্বনাথ জামিয়া মাদানিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সাব্বির আহমদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি, দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমার আজান-তাবলীগ নিয়ে কটূক্তিমূলক বক্তব্যের এবং কওমী মাদরাসা নিয়ে খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
ইসলামী ছাত্র সমাজ
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সমাজের মহাসচিব মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন যে, ‘মাদরাসা ছাত্ররা স্বাধীনতায় বিশ^াস করে না’ বলে প্রদত্ত একজন মন্ত্রীর বক্তব্য উর্বর মস্তিষ্কের আবিষ্কার। তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, এদেশের মাদরাসা ছাত্ররা স্বাধীনতাবিরোধী হতে পারে না। কেননা ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্যে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রয়োজন। তাছাড়া দেশকে ভালোবাসা যে ঈমানের অঙ্গ এই শিক্ষা মাদরাাসা ছাত্ররাই পেয়ে থাকে। অপপ্রচার চালিয়ে মাদরাসা ছাত্রদের ইসলাম প্রতিষ্ঠার মিশনকে স্তদ্ধ করা যাবে না বরং অপপ্রচারকারীরাই যাবে রসাতলে।
তিনি আজ এক বিবৃতিতে বলেন যে, ইদানীং কোনো কোনো মন্ত্রী ইসলাম, মুসলমান, মাদরাসা ছাত্র ও মাদরাসা সম্পর্কে উদ্ভট উক্তি করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টায় মেতে উঠেছেন। এতে শংকিত না হয়ে পারা যায় না।
জমিয়ত ঢাকা মহানগর
জমিয়ত ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সরকাররে ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের মুখে কওমী মাদরাসার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার সরকারের জন্য বিপদ ডেকে আনবে। সম্প্রতি মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও শাজাহান খান কওমী মাদরাসার বিরুদ্ধে কথা বলে এদেশের লক্ষ কোটি তৌহিদী জনতার হৃদয়ে আঘাত দিয়েছেন। দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় কওমী উলামা ও ছাত্ররা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
নেতৃবৃন্দ মন্ত্রী কামরুল ও মন্ত্রী শাজাহানের সম্প্রতি কওমী মাদরাসাবিরোধী বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, এ দুই মন্ত্রীকে অপসারণ না করলে তৌহিদী জনতার ক্ষোভ সামাল দেওয়া কঠিন হবে।
তারা বলেন, কওমী মাদরাসা নিয়ে মন্ত্রীদের লাগামহীন বক্তব্য ও সম্প্রতি বি-বাড়িয়ায় বন্ধ মাদরাসা মসজিদ খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্র্থীদের উপর পুলিশ ও আওয়ামী ক্যডারদের হামলায় হাফেজ মাসউদের শাহাদাতবরণকারী। হাফেজ মাসউদের হত্যার বিচার নিয়ে টাল-বাহানা করলে জনগণ আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে।
গতকাল বাদ আসর পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরের জরুরি সভায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
মহানগর জমিয়তের সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তৃতা করেন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, আমিরুল ইসলাম ফরদাবাদী, মাওলানা বশিরুল হাসান, মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম, মাওলানা ওমর আলী, মাওলানা জাবের কাসেমী, মাওলানা বোরহান উদ্দীন প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন