শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

জব্বারের বলীখেলায় নতুন চ্যাম্পিয়ন শামসু

প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো : অবশেষে রামুর দিদার বলীর একাধিপত্যের পতন ঘটিয়েছেন উখিয়ার শামসুল আলম বলী। শতবর্ষের ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলায় এবারের ১০৭তম আসরের ফাইনালে সাতবার থেমে থেমে দীর্ঘ ৩১ মিনিটের লড়াইয়ে কেউ কাউকে হারাতে না পারলে কৌশলের দিক দিয়ে শামসুল আলম বলী এগিয়ে থাকায় বিচারকগণ তাকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেন।
এর আগে বিকেল ৪টায় বলীখেলার উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার মোঃ ইকবাল বাহার। খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি গ্রামীণ ফোনের চট্টগ্রাম সার্কেল হেড এম শাওন আজাদ, রিজিওনাল হেড (সেল্স) সিরাজউদ্দিন মোঃ লস্কর উপস্থিত ছিলেন। প্রথম সেমিফাইনালে শামসুল আলম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অলি বলীকে এবং দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দিদার বলী, নারায়ণগঞ্জের হাবিবুর বলীকে হারিয়ে এ দুই বলী ফাইনালে অবতীর্ণ হয়। চ্যাম্পিয়ন শামসু বলী ২০ হাজার টাকা ও ট্রফি এবং রানার্স আপ দিদার বলী ১৫ টাকা ও ট্রফি প্রধান অতিথির কাছ থেকে গ্রহণ করেন। এছাড়া প্রথম রাউন্ডে ৩৭ জন বিজয়ীকে এক হাজার টাকা করে দেয়া হয়।
প্রথমবারের মতো শামসুল আলম বলী চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন, প্রায় ১০ বছর যাবত দিদার বলী খেলার নিয়মনীতি না মেনে কনুই মেরে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসছিলেন। এবার তার অবসান হয়েছে। তার বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে আমিও এ আচরণের শিকার হয়েছি। লালদীঘি মাঠে অগণিত দর্শকরা তা দেখেছেন এবং বিচারকরাও উপলব্ধি করতে পেরেছেন। সঠিক রায় পাওয়ায় বিচারক ও দর্শকদের তিনি ধন্যবাদ জানান। ২ ছেলে ১ মেয়ের বাবা শামসুল আলম বলী পেশায় মাছ ব্যবসায়ী। ইতিপূর্বে তিনবার আবদুল জব্বারের বলীখেলায় অংশ নিলেও ফাইনালের মুখ কখনও দেখতে পাইনি। এবারই প্রথম ফাইনালে গিয়ে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন, তাও আবার দিদার বলীর একাধিপত্যের পতন ঘটিয়ে। ২০০১ সাল থেকে এ বলীখেলায় দিদার বলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ছয়বার একক চ্যাম্পিয়ন এবং চারবার যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
শতবর্ষীয় এবারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার স্পন্সর ছিল গ্রামীণ ফোন। বলীখেলা উপভোগ করতে ভিড় জমিয়েছিল হাজার হাজার মানুষ। বলীখেলার নৈপুণ্য আর কলাকৌশল দেখে বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে লালদীঘি মাঠের দর্শকরা। বলীখেলার ইতিহাস শত বছর অতিক্রম করলেও এর আয়োজন ও উৎসবে বিন্দুমাত্রও পরিবর্তন হয়নি। শত বছর আগে যেভাবে মাটির তৈরি মঞ্চে বলীরা নিজেদের শক্তি সামর্থের প্রমাণ দিতে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতেন এখনও তা অক্ষুণœ রয়েছে। কাঁচামাটির তৈরি মঞ্চে খালি গায়ে লড়াইয়ে নামেন বলীরা। ঢোল, বাঁশি আর খাসার তালে হাজারো দর্শক শ্রোতার করতালিতে লড়াইয়ের শক্তি পান বলীরা। এবারের বলীখেলায় রামু, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, সীতাকু-, উখিয়া, হাটহাজারী, সাতকানিয়া, মহেশখালী, চকরিয়া, বাঁশখালী, টেকনাফ, দোহাজারী, বরিশাল, নোয়াখালী, দিনাজপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাউজান, ফটিকছড়ি, কক্সবাজার, পতেঙ্গা, পটিয়া, কুতুবদিয়া, রাঙামাটিসহ চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা ৯৬ জন বলী অংশ নেয়।
আবদুল জব্বারের বলীখেলাকে ঘিরে গত রোববার থেকে লালদীঘির পাড় ও আশপাশ এলাকায় শুরু হয়েছে বৈশাখী মেলা। মেলা আজও চলবে। আন্দরকিল্লা, বোস ব্রাদার্স, রাইফেল ক্লাব, কোতোয়ালী মোড়, জেল রোড ও লালদীঘির পাড়ে দোকানিদের অনেকেই পছন্দের জায়গা নিয়ে বসে গেছেন পসরা নিয়ে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন